এক সময়ে চার স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজাতো ভারত। ছিল বিখ্যাত এক স্পিন কোয়াট্রেট। সেই সময় পেরিয়ে গেছে অনেক আগে। তারপরও কিছু দিন আগ পর্যন্ত দেশের মাটিতে স্পিনই ছিল ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি। সময় পাল্টেছে। তারা এখন প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে পেস দিয়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গত টেস্ট সিরিজে স্পিনারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উইকেট শিকার করেন পেসাররা। সফরকারীদের শক্তিশালী পেস আক্রমণও ঢাকা পড়ে গিয়েছিল তাদের দ্যুতিতে।
বাংলাদেশের বিপক্ষেও প্রথম টেস্টে সহায়ক কন্ডিশন দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন মোহাম্মদ শামি-ইশান্ত শর্মারা। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হকের ভাষায়, তারা যে সুইং এখানে পেয়েছেন তার চেয়ে বেশি সুইং কোথাও সম্ভব না।
ইন্দোর টেস্টে জয়ের পর দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ভারত অরুন ও বিক্রম রাঠোর। বোলিং কোচ অরুন জানান, কন্ডিশন মিলে গেলে চার পেসার খেলানোর ভাবনা আছে তাদের।
“এটা কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করে। আমার মনে হয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা প্রথমবারের মতো এটা করেছিলাম। ভারতে এটা হবে কি না, আমি জানি না। নির্ভর করবে কেমন উইকেট আমরা পাই তার ওপর। কারণ, ভারতে আমরা যে কন্ডিশন পাই সেখানে, ম্যাচ এগোলে স্পিনারদেরও ভূমিকা থাকে। যখন আমরা এই ধরনের পরিস্থিতি পাবো তখন ভাববো।”
গোলাপি বলে পেসাররা আরও বেশি সুইং পেতে পারেন। অন্য দিকে স্পিনাররা ততটা কার্যকর থাকেন না দিবা-রাত্রির টেস্টে। শিশির পড়া শুরু হলে স্পিনারদের জন্য কাজটা হয়ে যায় আরও কঠিন। চার পেসার খেলানোর জন্য কলকাতা টেস্ট হতে পারে দারুণ জায়গা।
তবে ভারতের স্কোয়াডে এই মুহূর্তে ফিট পেসার আছেন ইন্দোরে খেলা তিন জনই। ভুবনেশ্বর কুমার দলের সঙ্গে থাকলেও তিনি ফিট নন। তাই কলকাতা টেস্টে চার পেসার খেলাতে হলে নতুন একজনকে যোগ করতে হবে।
সাফল্যের ক্ষুধা, আরও ভালো করার ক্ষুধা ভারতকে বদলে দিয়েছে বলে মনে করেন সাবেক পেসার অরুন।
“আমরা এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর দল। এখানে যাওয়াটা কঠিন, থাকাটা আরও বেশি কঠিন। আমার মনে হয়, তিন বছরের বেশি সময় ধরে জায়গা ধরে রাখতে আপনাকে ধারাবাহিকভাবে ক্ষুধার্থ থাকবে হবে।”
“পেস বোলিং বিপ্লবের পেছনেও আছে ভালো করার ক্ষুধা। আমাদের খুবই দক্ষ বোলিং আক্রমণ আছে। আপনি যদি দক্ষতার সঙ্গে শৃঙ্খলা যুক্ত করতে পারেন, সেটা বারবার ভালো পারফরম করতে সাহায্য করবে।”
ক্ষুধাটা কেমন তার একটা উদাহরণ দিলেন অরুন। ৯৫তম টেস্ট খেলা ৩১ বছর বয়সী পেসার ইশান্ত শর্মা এখনও কাজ করছেন নতুন ডেলিভারি নিয়ে। সাদমানকে যে ডেলিভারিতে বোল্ড করলেন সেটা নিয়ে নাকি শুক্রবার থেকে কাজ শুরু করেছেন দীর্ঘদেহী এই পেসার।
“সে এই বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে গতকাল। আপনি যদি দেখেন উইকেট পাওয়ার পর সে যেভাবে ইশারা দিয়েছিল, তাতে বোঝা যাচ্ছিল এটা করে সে খুবই খুশি। যখনই আপনি বোলিংয়ে নতুন দিক উন্মোচন করার চেষ্টা করবেন, তখন আপনি ধারাবাহিকভাবে উন্নতির চেষ্টা করবেন। এটা তাকে আরও পরীক্ষা করার ও নতুন কিছু চেষ্টা করার উৎসাহ যোগাবে।”