বিশ্বকাপে সফল বাংলাদেশ: বিসিবি সভাপতি

পয়েন্ট টেবিলে আট নম্বরে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করেছে বাংলাদেশ। সেমি-ফাইনাল খেলার স্বপ্ন বহুদূর, পূরণ হয়নি অন্তত পাঁচটি জয়ের লক্ষ্যও। এরপরও বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযানেকে সফল বলে মনে করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। আইসিসি সভায় বাংলাদেশের দারুণ প্রশংসা করা হয়েছে বলেও জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান। 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2019, 04:20 PM
Updated : 24 July 2019, 04:39 PM

আইসিসি সভা থেকে মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন বিসিবি সভাপতি। বুধবার সেই সভার নানান দিকসহ সাম্প্রতিক আরও অনেক আলোচিত ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। তার পেশাগত কার্যালয় ধানমণ্ডির বেক্সিমকো অফিসে এই সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে নিজে থেকেই বললেন, আইসিসি সভায় তুমুল প্রশংসিত হয়েছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স।
 
“আইসিসি বোর্ড মিটিং থেকে শুরু করে যার সঙ্গেই দেখা হচ্ছে সবাই বাংলাদেশ দলের প্রশংসা করেছে। এই যে একটা স্বীকৃতি, এর আগে আমরা কখনো পাইনি। তাই আমি মনে করি বিশ্বকাপটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। বাইরের বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের একটা পরিবর্তন এসেছে।”
 
“আগে একটা বড় দলকে হারাতাম সেটা হঠাৎ একটা ম্যাচ কাউকে হারাতাম। কিন্তু বাংলাদেশকে তারা কখনো ভালো মাপের দল হিসেবে দেখত না। এখন ওরা বলছে বাংলাদেশ অনেক বেশি শক্তিশালী। যে কোনো দলকে হারাতে পারি, এটা সকলেই মেনে নিয়েছে। সম্প্রতি আমরা বাইয়ে গিয়েও জেতা শুরু করেছি। তারা বলছে বাংলাদশের যে র‌্যাঙ্কিংটা মিসলিডিং। এটা আমার কথা না ওদের ভাষ্য।”

বিশ্বকাপের নানা সময়ে বিশ্ব আঙিনায় বাংলাদেশের প্রশংসা হয়েছে বটে। তবে নিজেদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও সেটি বলেছিলেন বিশ্বকাপ শেষে। বিসিবি সভাপতির কাছে সরাসরি জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তার চোখে বিশ্বকাপে বাংলোদেশ সফল নাকি ব্যর্থ। 
 
“সফল...আমি সেটাই বললাম। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যদি বৃষ্টি না হতো, দেশের সকলেই বিশ্বাস করে যে আমরা জিততাম। আমিও বিশ্বাস করি, আমরা জিততাম। জিতলে আমরা ছয়ে থাকতাম। অনেকেই বলে র‌্যাঙ্কিং অনেক বড় বিষয়। কিন্তু বহির্বিশ্ব কি বলছে, যারা খেলা বোঝেন, তারা কি বলছেন? সেটা দেখেন। প্রথম ম্যাচ আমরা ভালো খেলেছি, দ্বিতীয় ম্যাচটাও আমাদের জেতা ম্যাচ। কিন্তু ভাগ্য অনেক বড় একটা ব্যাপার। আরেকটা জিনিস মনে রাখবেন ৯টা ম্যাচের মধ্যে ৮টা ম্যাচেই টস হেরে গেলাম। এখানে ভাগ্যের একটা ব্যাপার আছে।”
 
বিসিবি সভাপতি এগোলোন প্রতিটি ম্যাচ ধরে। বিশ্লেষণ করলেন পারফরম্যান্সের। বললেন, ভাগ্যের একটু সহায়তা পেলে আরও ভালো অবস্থানে থাকত দল।
 
“দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় পুরো বিশ্বকাপকে নতুন আমেজ এনে দেয়। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটু ভালো করলে সেটাও জেতার কথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে ম্যাচটি জিতেছি, বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতা ম্যাচ (আসলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ)। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এতো বড় রান তাড়া করতে গিয়ে ৩৩৩ করেছি, এটাও প্রাপ্তি। ভারতের বিপক্ষেও আমরা দারুণ খেলেছি। শুধু একটা ম্যাচে আমরা ভালো খেলিনি সেটা হচ্ছে শেষ ম্যাচ (পাকিস্তানের বিপক্ষে)। এর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ সত্যিই অসাধারণ খেলেছে। তাই আমি মনে করি দল ভালো খেলেছে।"
 
“নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে কপাল খারাপ। মুশফিকের মত উইকেটরক্ষকের হাতে লেগে বেল পড়ে যায়? সেটা না হলে ওই ম্যাচ আমরা জিততাম না? সবাই মনে করে আমরা জিততাম।  মুশফিকের নিজের রান আউটটা না হলে আরও কিছু রান হতো। তাহলেই আমরা ভালো অবস্থানে থাকি। একটা একটা করে খেলা বলেন আমি শুনতে চাই। কোনটা খারাপ খেলেছি, বৃষ্টিতে খেলা হয়নি এতে তো আমার কিছু করার নেই। এখন ভারতের সাথে আপনি চিন্তা করেন ওই ক্যাচ যদি মিস না হতো, ধরে ফেলতো তামিম। সব বদলে যেত।”
 
এবারের মতো ২০০৭, ২০১১ ও ২০১৫ বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচ জিতেছিল। তবে সেই বিশ্বকাপগুলোর পারফরম্যান্সকে এবারের সঙ্গে তুলনাই করতে নারাজ বিসিবি প্রধান।

“২০০৭-এ ১৫০ গতিতে বল করতো কয়জন বোলার? এই ছেলেরা যে ১৫০ গতির বলের বিপক্ষে ৩০০ রান করেছে সেটাই তো অনেক বড় ব্যাপার। কিসের সাথে কি মিলাচ্ছেন? সম্পূর্ণ ভিন্ন এখন। সাকিবের ব্যক্তিগত পারফর্মেন্স দেখেন, আমি তো মনে করি সে সেরা খেলোয়াড়। যদিও পেয়েছে আরেকজন আমার, মতে সাকিবই সেরা। এর আগে কখনও এমন হয়েছে? তখন কার নাম শুনেছেন বাংলাদেশের, যে সেরা খেলোয়াড়।”
 
“ভারতের সঙ্গে ২৮৫ করেছি, বুমরাহ, ভি কুমারদের (ভুবনেশ্বর) তো ভয় পায় নাই, ভালো খেলে আসছে ওরা। এটা খারাপ কোথায় দেখলেন, খারাপ খেলে নাই। যে খেলা বুঝে তাকে জিজ্ঞেস করেন। শুধু পাকিস্তানের সাথে আমাদের ম্যাচটা পছন্দ হয়নি আমার। এই খেলাটা আমার একদম ভালো লাগে নাই। এছাড়া প্রত্যেকটা খেলা আমার মনে হয় ভালো খেলেছে, সব জিততে পারে নাই। কিন্তু ঠিক আছে ভালো খেলেছে।”