সাইফের ছোবল, শান্ত-জাফরের দৃঢ়তা

সুপার লিগের আগে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে কোনো ম্যাচে পাঁচ উইকেট ছিল না মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের। সেরা ছয় দলের লড়াইয়ে তিন ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট নেওয়ার উচ্ছ্বাসে ভাসলেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। মাঝারি রান তাড়ায় দলকে পথ দেখালেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও ওয়াসিম জাফর। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখার আশা বাঁচিয়ে রাখল আবাহনী।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2019, 12:07 PM
Updated : 19 April 2019, 12:23 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সুপার লিগ পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে ৬ উইকেটে জিতেছে মোসাদ্দেক হোসেনের দল। ২২৭ রানের লক্ষ্য ৩২ বল বাকি থাকতে ছাড়িয়ে যায় তারা।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের প্রথম বলে এনামুল হককে হারায় প্রাইম ব্যাংক। সবশেষ সাত ম্যাচে এটি এনামুলের তৃতীয় গোল্ডেন ডাক।

নিজের পরের ওভারের প্রথম বলে আরেক ওপেনার রুবেল মিয়াকেও ফিরিয়ে দেন সাইফ উদ্দিন। উইকেট শিকারে যোগ দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, মেহেদী হাসান মিরাজ ও সৌম্য সরকার। ৬৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে প্রাইম ব্যাংক।

ধুঁকতে থাকা দলকে পথ দেখান অলক কাপালী ও নাঈম হাসান। শুরুতে নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে রেখেছিলেন কাপালী। নাঈমও শট খেলছিলেন কেবল নিজের জোনে পেলে। ধীরে ধীরে জমে যায় তাদের জুটি। পরে চড়াও হন বোলারদের ওপর।

বিপজ্জনক হয়ে ওঠা শতরানের জুটি ভাঙেন সৌম্য। ফিরিয়ে দেন ১১২ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৮০ রান করা কাপালীকে। টেলএন্ডারদের নিয়ে দলকে ২২৬ রানে নিয়ে যান ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি পাওয়া নাঈম। তরুণ এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার ৫ চারে অপরাজিত থাকেন ৫১ রানে।

শুরুতে দুই উইকেট নেওয়া সাইফ নেন শেষ তিন উইকেট। ৩২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার। সৌম্য ও মাশরাফি নেন দুটি করে উইকেট।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি আবাহনীর। নাঈমের ঝুলিয়ে দেওয়া মন্থর বল বেরিয়ে এসে ওড়ানোর চেষ্টায় স্টাম্পড হয়ে যান সৌম্য সরকার। ব্যাটিংয়ে বাজে সময় কাটানো বাঁহাতি এই ওপেনার খুলতে পারেননি রানের খাতা।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এগোনো জহুরুল ইসলামকে বোল্ড করে বিদায় করেন আরিফুল হক। সাব্বির রহমানকে থামান আব্দুর রাজ্জাক।

৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া আবাহনীকে টানেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান জাফর ও শান্ত। ১২২ রানের জুটিতে দলকে নিয়ে যান জয়ের পথে।

নাঈমকে উড়ানোর চেষ্টায় ৬৪ রান করে ফিরেন জাফর। মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন শান্ত। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ৮৪ বলে খেলা ৭৭ রানের ইনিংস গড়া চারটি চার ও একটি ছক্কায়। ২৪ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন মিঠুন।

প্রথম পর্বে হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে ভালোভাবে টিকে থাকলো আবাহনী। ম্যাচ শেষে ড্রেসিং রুমে কেক কেটে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে মাশরাফির চারশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শের কীর্তি উদযাপন করে তারা।

ম্যাচ চলার সময়ে অসুস্থ বোধ করায় মাঠ ছাড়েন আম্পায়ার নাদির শাহ। পরে আর ম্যাচে ফিরেননি তিনি।

দারুণ বোলিংয়ে পাঁচ উইকেট নেওয়া সাইফ জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

১৪ ম্যাচে একাদশ জয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে আবাহনী। সমান ম্যাচে পঞ্চম হারের স্বাদ পাওয়া প্রাইম ব্যাংক ১৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে চার নম্বরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৪৯.৩ ওভারে ২২৬ (এনামুল ০, রুবেল ২, সালমান ১৬, আল আমিন জুনিয়র ১৮, জাকির ৩, কাপালী ৮০, আরিফুল ৯, নাঈম ৫১*, মনির ১৯, রাজ্জাক ৯, আল আমিন ৭; সাইফ ৫/৩২, মাশরাফি ২/৫০, সৌম্য ২/৪২, মিরাজ ১/৩৬, নাজমুল ০/২৯, সাব্বির ০/২৩, মোসাদ্দেক ০/৯)

আবাহনী: ৪৪.৪ ওভারে ২২৮/৪ (জহুরুল ২৪, সৌম্য ০, সাব্বির ২৬, জাফর ৬৪, শান্ত ৭৭*, মিঠুন ৩৩*; আল আমিন ০/২৮, নাঈম ২/৪৯, মনির ০/২৬, আরিফুল ১/২৭, রাজ্জক ১/৬৮, কাপালী ০/১৮, আল আমিন ০/১১)

ফল: আবাহনী ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন