সম্ভাব্য দ্রুত সময়ে ক্রিকেটারদের ফেরাতে বিসিবির তৎপরতা

ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে বন্দুকধারীদের হামলার পর আর সেখানে খেলার মতো পরিস্থিতি নেই। যত দ্রুত সম্ভব নিউ জিল্যান্ড থেকে ক্রিকেটারদের দেশে ফিরিয়ে আনতে চায় বিসিবি। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়েছেন বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2019, 08:41 AM
Updated : 15 March 2019, 08:50 AM

হ্যাগলি ওভালে আগামী শনিবার শুরু হওয়ার কথা ছিল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। শুক্রবার মসজিদে বন্দুকধারীদের গুলির ঘটনার পর সেই ম্যাচ বাতিল হওয়ায় আগেভাগেই শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের সফর। গুলশানে নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি প্রধান জানান, এই মুহূর্তে বোর্ডের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে দলের সবাইকে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনা।

“এরই মধ্যে আমাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে ফোন করে বলেছি, আমাদের দলটাকে যত দ্রুত সম্ভব আমি বাংলাদেশে নিয়ে আসতে চাই। এখন তো ওখানে সব কিছু বন্ধ হয়ে আছে। কোথাও কিছু চলছে কিনা, বিমানবন্দর চালু আছে কিনা সেটাও তো আমরা জানি না। আমি উনাকে বলেছি, আমরা এখান থেকে টিকিট কাটার ব্যবস্থা করছি। কিন্তু ওদের হোটেল থেকে বের করে বিমানে উঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য সাহায্য প্রয়োজন হবে। উনি বলেছেন, আমি এক্ষুনি ব্যবস্থা নিচ্ছি, সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।”

ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশের ম্যানেজার খালেদ মাসুদ জানান, ফ্লাইট সূচি ও টিকিট মিলিয়ে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরবে দল।

আর ৩-৪ মিনিট আগে বাংলাদেশ দল মসজিদে পৌঁছালে হয়ে যেতে পারতো ভয়নাক কিছু। কি হতে পারতো তা যেন চিন্তায়ও আনতে পারছেন না নাজমুল হাসান। ভবিষ্যতে যেন এমন নিরাপত্তা ঝুঁকিতে কখনও পড়তে না হয় তার জন্য বিদেশে দলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান তিনি।

“আজকের এই ঘটনার পর সব বদলে যাবে। এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। কোনো দেশে যখন আমরা খেলতে যাচ্ছি, ওই দেশ থেকে কি প্রয়োজন, আমাদের তরফ থেকে কি প্রয়োজন সেটা দেখতে হবে। আমার ধারণা যতটুকু সম্ভব এখন থেকে এটা করবে। কারণ, এতদিন আমাদের এটা করা যে দরকার, তা মনেই হয়নি, প্রয়োজনই হয়নি। অন্য দেশেরও একই অবস্থা। এমন না যে, অন্যরা নিরপত্তা পাচ্ছে, আমরা পাচ্ছি না, তা না।”

“আমরা যখন অস্ট্রেলিয়া বা নিউ জিল্যান্ডের মতো দেশে যাই, আমাদের দেশে আমরা যে ধরনের নিরাপত্তা দলগুলোকে দিই সেটা কিন্তু সেখানে আমরা পাই না। এটা একটা জিনিস। আর একটা কথা আমরা বলে এসেছি যে, এমন ঘটনা কিন্তু যে কোনো জায়গাতেই হতে পারে। কাজেই আমার মনে হয়, প্রত্যেকটা দেশকেই এখন সতর্ক হতে হবে। প্রত্যেকটা টিমকেই আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।”

বাংলাদেশ যে ধরনের নিরাপত্তা বিদেশি ক্রিকেটারদের দেয় সেই একই মানের নিরাপত্তা প্রতিটি দেশে প্রতিটি সিরিজে থাকা উচিত বলে মনে করেন বিসিবি প্রধান।

“অনেকের হয়তো ধারণা থাকতে পারে এই ঘটনা কেবল উপমহাদেশে হতে পারে। ওদের ওখানে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই জিনিস কিন্তু এখন আর নেই। সিকিউরিটি যেমন থাকার কথা ছিল বা আমরা যেমন দিয়ে থাকি, ধারে কাছেও ছিল না। শুধু এখানে না, আমরা যে জায়গাতেই সফর করতে যাই, আমাদের জন্য তেমন কোনো নিরপত্তা ব্যবস্থা দেখি না।”

“আমাদের দেশে কেউ যখন আসে, তখন ওরা যে ধরনের নিরাপত্তার কথা বলে, সেই ধরনের নিরাপত্তা দিতে হয়। আমরা এখন পর্যন্ত এমন কিছু পাইওনি। সত্যি কথা বলতে আমরা এটা নিয়ে জোরাজুরিও করিনি। তবে আজকের ঘটনার পর এটা নিশ্চিত, বিসিবি এখন থেকে যে দেশেই আমাদের দল যাক না কেন, আমাদের ন্যূনতম নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এটা যারা দিতে পারবে তাদের ওখানেই আমরা খেলতে যাব নয়তো যাব না।”