বোলিংয়ে বাংলাদেশের হতাশার দিন

প্রথম ইনিংসে ৫১৩ রান করা বাংলাদেশ বোলিংয়ে শুরুতেই পেয়েছিল সাফল্য। স্কোর বোর্ডে কোনো রান যোগ করার আগেই ভেঙেছিল উদ্বোধনী জুটি। কিন্তু শতক হাঁকানো ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কুসল মেন্ডিসের জুটিতে জবাব দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2018, 03:32 AM
Updated : 1 Feb 2018, 11:14 AM

ধনঞ্জয়ার সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার জবাব
 
চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশকে ৫১৩ রানে থামানো দলটি দিন শেষ করেছে ১ উইকেটে ১৮৭ রানে। 
 
ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি পাওয়া ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ব্যাট করছেন ১০৪ রানে। তার সঙ্গী কুসল মেন্ডিস খেলছেন ৮৩ রানে। এক প্রান্ত দ্রুত তুলেন ধনাঞ্জয়া, অন্য প্রান্তে সতর্ক ব্যাটিংয়ে সঙ্গ দিয়ে যান মেন্ডিস।
 
বাংলাদেশ দুটি সুযোগ হাতছাড়া করে দ্বিতীয় দিন। ৪ রানে মেহেদী হাসান মিরাজ ও ৫৭ রানে ইমরুল কায়েসকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান মেন্ডিস। 
 
দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশের কোনো বোলার লম্বা সময়ের জন্য ভোগাতে পারেননি অতিথি ব্যাটসম্যানদের। সঠিক লাইন, লেংথে বল করে যেতে পারেননি টানা। প্রচুর আলগা বলের সুবিধা কাজে লাগান ধনঞ্জয়া।
 
খরুচে বোলিংয়ে একটি উইকেট নেন মিরাজ। খরুচে বোলিংয়ে শুরু করা তাইজুল ইসলাম শেষটায় নিজেকে কিছুটা খুঁজে পান। তার উল্টো ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। আঁটসাঁট বোলিংয়ে শুরু করা বাঁহাতি পেসারকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি শেষটায়। 
 
এই মাঠে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন সানজামুল ইসলাম। তবে টেস্ট অভিষেকে বোলিংয়ে বিবর্ণ বাঁহাতি এই স্পিনার। 
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৪৮ ওভারে ১৮৭/১ (করুনারত্নে ০, মেন্ডিস ৮৩*, ধনঞ্জয়া ১০৪*; মুস্তাফিজ ৭-১-৩১-০, সানজামুল ১৫-১-৫২-০, মিরাজ ৮-০-৪৫-১, তাইজুল ১৭-৩-৫৬-০, মোসাদ্দেক ১-০-৩-০)

ধনঞ্জয়ার সেঞ্চুরি
 
বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পেলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। তার ক্যারিয়ারের চতুর্থ। এসেই শট খেলতে শুরু করা টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান তিন অঙ্কে যান ১২২ বলে। 
 
তিন নম্বরে টানা দ্বিতীয় টেস্টে সেঞ্চুরি পেলেন মেন্ডিস। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন ১১৯ রানে।  
 
৪৬ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১৮৩/১। কুসল মেন্ডিস ৮০, ধনঞ্জয়া ১০৩ রানে ব্যাট করছেন।

রিভিউ শেষ বাংলাদেশের
 
শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে রিভিউ শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের। দুবার জীবন পাওয়া কুসল মেন্ডিসের বিপক্ষে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকদের দুটি রিভিউ। 
 
৪২তম ওভারে তাইজুল ইসলামের চতুর্থ বল মেন্ডিসের কানা ঘেঁষে উইকেটকিপারের গ্লাভসে জমা পড়ে। কটবিহাইন্ডের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেন মাহমুদউল্লাহ। আল্ট্রা-এজে বলে ব্যাটের স্পর্শের কোনো প্রমাণ মিলেনি। 

বাংলাদেশের ব্যর্থ রিভিউ
 
দুবার জীবন দেওয়া কুসল মেন্ডিসকে রিভিউ নিয়ে ফেরাতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু লাভ হয়নি। 
 
তাইজুল ইসলামের বল লেগ স্টাম্পে পিচ করা বল ব্যাটের কানা ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে প্যাডে। এলবিডব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেন মাহমুদউল্লাহ। বল ট্র্যাঙ্কিংয়ে দেখা যায় স্টাম্পের ওপর দিয়ে যেত বল।
 
৩৭ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১৫৬/১। মেন্ডিস ৭১ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৮৫ রানে ব্যাট করছেন।

মেন্ডিসের ক্যাচ এবার ছাড়লেন ইমরুল
 
৪ রানে কুসল মেন্ডিসের ক্যাচ ছেড়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এবার তার বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ ছাড়লেন ইমরুল কায়েস। 
 
আক্রমণে ফিরেই উইকেট পেতে পারতেন মিরাজ। তার দারুণ একটি ডেলিভারি মেন্ডিসের ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় প্রথম স্লিপে। প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেরি করে ফেলেন ইমরুল। বাঁদিকে হাত বাড়িয়ে বলে ছোঁয়ালেও ধরতে পারেননি তিনি। মেন্ডিসের তখন ছিল ৫৭ রান।
 
৩১ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৩৫ রান। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৭৪ ও মেন্ডিস ৬১ রানে ব্যাট করছেন।

কুসল মেন্ডিসের ফিফটি
 
৪ রানে জীবন পাওয়া কুসল মেন্ডিস পেলেন ফিফটি। তার ক্যারিয়ারের পঞ্চম। 
 
এই ম্যাচ দিয়ে টেস্টে ফেরা মেন্ডিসের মাইলফলক পৌঁছানোর রানে আছে স্বাগতিকদের বাজে ফিল্ডিংয়ের অবদান। তাইজুল ইসলামের বল পয়েন্টে পাঠিয়ে এক রান নেন মেন্ডিস। মাহমুদউল্লাহর ওভার থ্রো থেকে পেয়ে যান আরও তিনটি রান। ৯১ বলে যায় ফিফটি। ইনিংসে চার তিনটি, ছক্কা একটি। 
 
৩০ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১২৩/১। মেন্ডিস ৫০ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৭৩ রানে ব্যাট করছেন।

ধনঞ্জয়ার পঞ্চাশ, শ্রীলঙ্কার একশ
 
ক্রিজে এসেই শট খেলতে শুরু করা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা পেয়েছেন ফিফটি। টেস্টে তার তৃতীয়। সানজামুল ইসলামকে কাট করে চার হাঁকিয়ে ৬৫ বলে পঞ্চাশে যান ধনঞ্জয়া।
 
বোলিংয়ে ভালো শুরু ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ধনঞ্জয়ার সঙ্গে জমে গেছে কুসল মেন্ডিসের দ্বিতীয় উইকট জুটি। ১৬৫ বলে তাদের জুটি গেছে তিন অঙ্কে।
 
২৮ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১০৭/১। মেন্ডিস ৪৬ ও ধনঞ্জয়া ৬১ রানে ব্যাট করছেন।

মেন্ডিস-ধনঞ্জয়া জুটির ফিফটি
 
শূন্য রানে দিমুথ করুনারত্নেকে হারানো শ্রীলঙ্কা প্রতিরোধ গড়েছে কুসল মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ব্যাটে। চা-বিরতির আগে শেষ ওভারে তাইজুল ইসলামকে টানা তিন চার হাঁকিয়ে দলের সংগ্রহ পঞ্চাশ রানে নিয়ে গেছেন ধনঞ্জয়া।
 
৭৪ বলে এসেছে দ্বিতীয় উইকেট জুটির ফিফটি। চা-বিরতিতে যাওয়ার সময়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৫ ওভারে ৫০/১। অতিথিরা এখনও পিছিয়ে ৪৬৩ রানে। মেন্ডিস ১৩ ও ধনঞ্জয়া ৩৭ রানে ব্যাট করছেন।
 
শুরু থেকে শট খেলছেন তিন নম্বরে নামা ধনঞ্জয়া। ৪ রানে জীবন পাওয়া মেন্ডিস গুটিয়ে রেখেছেন নিজেকে।  
 
একমাত্র উইকেটটি নেন অফ স্পিনার মিরাজ। আঁটসাঁট বোলিংয়ে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখেন মুস্তাফিজুর রহমান। দারুণ ফুটওয়ার্কে স্পিনারদের চেপে বসতে দেননি ধনঞ্জয়া-মেন্ডিস।

জীবন পেলেন মেন্ডিস
 
মুস্তাফিজুর রহমানকে চার হাঁকানোর পরের বলে ফিরে যেতে পারতেন কুসল মেন্ডিস। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ক্যাচ দ্বিতীয় স্লিপে নিতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ।
 
মুস্তাফিজের বেরিয়ে যাওয়া বল মেন্ডিসের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ক্যাচ যায় স্লিপে। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে চেষ্টা করেছিলেন মিরাজ। কিন্তু মুঠোয় জমাতে পারেননি। ৪ রানে বেঁচে যান মেন্ডিস।
 
৫ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ১৩/১। মেন্ডিস ৪ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৯ রানে ব্যাট করছেন।

শুরুতেই মিরাজের ছোবল

 
ব্যাটিংয়ে বড় স্কোরের পর বল হাতে বাংলাদেশ সাফল্য পেল শুরুতেই। মেহেদী হাসান মিরাজ ফিরিয়ে দিলেন দিমুথ করুনারত্নেকে।
নতুন বলে প্রথম ওভার মেডেন নেওয়ার পরও মুস্তাফিজকে মাত্র এক ওভার করিয়েই মিরাজকে এনেছিলেন অধিনায়ক। এমনিতে বেশ সাবধানী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত করুনারত্নে করে ফেললেন ভুল। ব্যাট চালালেন বেশ বাইরের বলে। স্লিপে ক্যাচ নিলেন ইমরুল।
শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। জমে গেলে লম্বা ইনিংস খেলতে পারদর্শী করুনারত্নের বিদায় শূন্য রানেই।  শ্রীলঙ্কার রানও ১ উইকেটে শূন্য।

৫১৩ রানে থামল বাংলাদেশ
 
১১ নম্বর ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে দ্বিতীয় সেশনে স্বাগতিকদের গুটিয়ে দিলেন সুরঙ্গা লাকমল। ডানহাতি পেসারের শর্ট বলে উইকেটকিপার নিরোশান ডিকভেলাকে ক্যাচ দেন মুস্তাফিজ।
 
অভিষেকে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে সেঞ্চুরির হাতছানি ছিল মাহমুদউল্লাহর সামনে। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে তত দূরে যেতে পারলেন না এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ৮৩ রানে অপরাজিত থাকা মাহমুদউল্লাহর ১৩৪ বলের ইনিংসে ৭টি চারের পাশে ছক্কা দুটি।    
 
প্রথম ইনিংসে ১২৯.৫ ওভারে ৫১৩ রান করে বাংলাদেশ। টেস্টে এটি তাদের পঞ্চম সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় দিন ৩৯.৫ ওভারে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রান যোগ করে স্বাগতিকরা।
 
তিনটি করে উইকেট নেন লাকমল ও রঙ্গনা হেরাথ। দুটি উইকেট নেন লাকশান সান্দাকান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৭৪/৪) ১২৯.৫ ওভারে ৫১৩ (তামিম ৫২, ইমরুল ৪০, মুমিনুল ১৭৬, মুশফিক ৯২, লিটন ০, মাহমুদউল্লাহ ৮৩*, মোসাদ্দেক ৮, মিরাজ ২০, সানজামুল ২৪, তাইজুল ১, মুস্তাফিজ ৮; লাকমল ২৩.৫-৪-৬৮-৩, কুমারা ১৫-১-৭৯-০, দিলরুয়ান ২৭-৪-১১২-১, হেরাথ ৩৭-২-১৫০-৩, সান্দাকান ২২৩-১-৯২-২, ধনঞ্জয়া ৫-০-১২-০)

বাংলাদেশের পাঁচশ
 
মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসে পাঁচশ রানে গেছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। টেস্টে এটি তাদের সপ্তম পাঁচশ ছোঁয়া স্কোর।
 
চট্টগ্রামে নিজেদের তৃতীয় পাঁচশ ছোঁয়া স্কোর পেতে ১২৭.৫ ওভার লেগেছে বাংলাদেশের। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫০১ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫০৩ রানের ইনিংস আছে স্বাগতিকদের। 
 
রঙ্গনা হেরাথের বলে মুস্তাফিজুর রহমানের ছক্কায় ওই দুই স্কোর পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। 
 
১২৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৫০৯/৯। মাহমুদউল্লাহ ৮০ ও মুস্তাফিজ ৮ রানে ব্যাট করছেন।

মাহমুদউল্লাহর দুই হাজার
 
বাংলাদেশের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন মাহমুদউল্লাহ। লাকশান সান্দকানকে চার হাঁকিয়ে নিজের রান দুই হাজারে নিয়ে যান সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে এই ম্যাচে স্বাগতিকদের অধিনায়ক।
 
১ হাজার ৯৩১ রান নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ। যখন মাইলফলক স্পর্শ করেন তখন ক্রিজে তার সঙ্গী ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান মুস্তাফিজুর রহমান। 
 
মাইলফলক স্পর্শ করতে ৬৭ ইনিংস লেগেছে মাহমুদউল্লাহর। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে কম ইনিংসে দুই হাজার রানের রেকর্ড মুমিনুল হকের। টেস্টের প্রথম দিন ৪৭তম ইনিংসে মাইলফলক স্পর্শ করে রেকর্ড গড়েন তিনি।
 
১২৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৪৯৯/৯। মাহমুদউল্লাহ ৭৬ ও মুস্তাফিজ ২ রানে ব্যাট করছেন।

দ্রুত বিদায় তাইজুলের
 
সানজামুলের উইকেটের হাত ধরে এলো আরও একটি উইকেট। রঙ্গনা হেরাথ ফিরিয়ে দিলেন তাইজুল ইসলামকে। 
 
হেরাথের দারুণ ফ্লাইট সামনে টেনে আনে বাঁহাতি তাইজুলকে। বল পিচ করে অনেকটা টার্ন করে তাইজুলের ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে লাগে স্টাম্পে। তাইজুল আউট ১ রানেই।
 
বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ৪৭৮।
 
সানজামুলের বিদায়ে ভাঙল জুটি
 
লাঞ্চের পর শ্রীলঙ্কা সাফল্য পেল দ্রুতই। ভাঙল বাধা হয়ে থাকা জুটি। সানজামুল ইসলামকে ফেরালেন লাকশান সান্দাকান।
 
লেগ স্টাম্পে থাকা ফুল লেংথ বল ফ্লিক করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি বাঁহাতি সানজামুল। বেলস উড়িয়ে দেন কিপার নিরোশান ডিকভেলা। অভিষেক ইনিংসে সানজামুলের লড়াই শেষ হলো ২৪ রানে। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি ছিল ৫৮ রানের। বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ৪৭৫।

প্রথম সেশনে বাংলাদেশের ৯৩ রান
 
দিনের প্রথম সেশনে মুমিনুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন ও মেহেদী হাসানকে হারায় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ও সানজামুল ইসলামের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ ঘণ্টা ছিল উইকেটশূন্য।
 
অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও অভিষিক্ত সানজামুল। দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৪৬৭/৭। তিন উইকেট হারিয়ে দিনের প্রথম সেশনে স্বাগতিকরা যোগ করে ৯৩ রান। 
 
প্রথম সেশনে উইকেট থেকে কিছুটা সহায়তা পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার বোলাররা। উইকেটে বল গ্রিপ করছে। বাউন্সও কিছুটা অসমান। আগের দিন ১০০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকা বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ শুরুতেই তুলে নেন মুমিনুল, মোসাদ্দেকের উইকেট। দ্রুত রান তোলা মিরাজ ফিরেন রান আউট হয়ে।

মাহমুদউল্লাহ-সানজামুল জুটির পঞ্চাশ

 
দুই দিন মিলিয়ে ৬১ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়ে মাহমুদউল্লাহ ও সানজামুল ইসলামের ব্যাটে। অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে ৯০ বলে ৫০ স্পর্শ তাদের জুটি।  
শুরুর কঠিন সময়টা পার করে দেওয়া মাহমুদউল্লাহকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন অভিষিক্ত সানজামুল। দুই জনের দৃঢ়তায় পাঁচশ রানের দিকে ছুটেছে বাংলাদেশ।

শ্রীলঙ্কার ব্যর্থ রিভিউ
 
ম্যাচের ১১২তম ওভারে এসে প্রথম রিভিউ নিল কোনো দল। রিভিউ নিয়ে সানজামুল ইসলামকে ফেরানোর চেষ্টা ব্যর্থ হল শ্রীলঙ্কার। 
 
লাকশান সান্দাকানের ওভারের শেষ বল পা বাড়িয়ে খেলেন বাঁহাতি সানজমুল। ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি, স্পিন করে আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেন দিনেশ চান্দিমাল। বল ট্র্যাঙ্কিংয়ে দেখা যায় লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে যেত বল।
 
১১২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৪৪৭/৭। মাহমুদউল্লাহ ৩৫ ও সানজামুল ১৭ রানে ব্যাট করছেন।

অহেতুক রান আউট মিরাজ

 
কোনো দরকার ছিল না এত ঝুঁকি নিয়ে তিন রানের চেষ্টা করার। খুব বড় ঝুঁকি নিয়ে তার চড়া মাশুল দিতে হল মেহেদী হাসান মিরাজকে হারিয়ে। 
রঙ্গনা হেরাথের স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়া বল মাহমুদউল্লাহ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পাঠান সীমানার কাছাকাছি। দুটি রান হয়ে যায় সহজেই। তৃতীয় রান নেওয়ার পথে ক্রিজে পৌঁছতে ঝাঁপিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু লাহিরু কুমারার থ্রো পেয়ে নিরোশান ডিকভেলা বেলস ফেলে দেওয়ার সময় একটু দূরেই ছিলেন তিনি।
১৯ বলে একটি করে ছক্কা-চারে ২০ রান করে রান আউট হয়ে ফিরেন মিরাজ। 
১০৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৪১৭/৭। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী অভিষিক্ত সানজামুল ইসলাম।

বাংলাদেশের চারশ
 
সুরঙ্গা লাকমলকে দারুণ এক স্ট্রেট ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে চারশ রানে নিয়ে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। 
 
একশতম ওভারে এসেছে টেস্টে বাংলাদেশের ১৭তম চারশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এনিয়ে পাঁচবার চারশ ছাড়ানো স্কোর পেল তারা। 
 
দ্বিতীয় দিন শুরু থেকে উইকেটে গ্রিপ করছে বল। বাউন্সও অসমান। বোলাররা উইকেট থেকে সহায়তা পাওয়ায় রানের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানের।
 
১০০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৪০৪/৬। মাহমুদউল্লাহ ২০ ও মিরাজ ১০ রানে ব্যাট করছেন। 

বাজে শটে ফিরলেন মোসাদ্দেক

চোখের সংক্রমণের সমস্যা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন ব্যর্থ প্রথম ইনিংসে। দলকে চাপে ফেলে ফিরেছেন বাজে শটে।
বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথকে বেরিয়ে এসে উড়াতে চেয়েছিলেন মোসাদ্দেক। লেগ স্টাম্পের বলে টাইমিং করতে পারেননি। সহজ ক্যাচ যায় মিড অন ফিল্ডার লাকশান সান্দাকানের কাছে। ১৫ বলে একটি চারে ৮ রান করে ফিরে যান মোসাদ্দেক।
৯৭ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩৯২/৬। মাহমুদউল্লাহ ১৭ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১ রানে ব্যাট করছেন।

শুরুতেই ফিরলেন মুমিনুল

দ্বিতীয় দিনের শুরুতে আঘাত হেনেছেন রঙ্গনা হেরাথ। ফিরিয়ে দিয়েছেন আগের দিন সেঞ্চুরি পাওয়া মুমিনুল হককে।
বাঁহাতি স্পিনারের লেগ স্টাম্পের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন মুমিনুল। ফিরে যান ১৭৬ রান করে। তার ২১৪ বলের ইনিংসে ১৬টি চারের পাশে ছক্কা একটি। 
৯৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩৭৮/৫। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন।

মুমিনুলের দিন, বাংলাদেশের দিন
 
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটি মুমিনুল হকের, দিনটি বাংলাদেশের। সেঞ্চুরি খরা কাটানোর দিন, অনেক ক্ষোভ আর অভিমানের জবাব দেওয়ার দিনে অসাধারণ ব্যাট করে মুমিনুল অপরাজিত ১৭৫ রানে। 
 
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বুধবার প্রথম দিনে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৩৭৪। মাহমুদউল্লাহ খেলছেন ৯ রানে। 
 
টেস্ট ক্রিকেটে দেড় যুগের পথচলায় প্রথম দিনে বাংলাদেশের এটিই সর্বোচ্চ রান। আগের সর্বোচ্চ ছিল ৩৬৫। সব দিন মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
 
মুমিনুলের সামনে ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি
 
প্রথম দিনের খেলা শেষে ১৭৫ রানে অপরাজিত মুমিনুল হক। ক্যারিয়ার সেরা ১৮১ তার দৃষ্টিসীমানায়। চট্টগ্রামেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩ সালে ওই ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। 
 
দেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের সামনে। ২০১৩ সালে গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০ রান ছুঁয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন মুশফিকুর রহিম। দুই বছর পর খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০৬ রান করেন তামিম ইকবাল। গত বছর জানুয়ারিতে ওয়েলিংটনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১৭ রান করে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহের রেকর্ড নিজের করে নেন সাকিব আল হাসান।   
 
যত সম্ভব বড় স্কোর চায় বাংলাদেশ
 
তামিম ইকবাল মনে করেন, চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ এমন অবস্থানে আছে, যেখান থেকে অনেক রান যোগ করা সম্ভব। স্বাগতিকরা নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যাকে লক্ষ্য করছে না। এমন ভালো অবস্থানে টেস্টে সহসা থাকা হয় না বাংলাদেশের। তাই সুযোগটা কাজে লাগাতে উন্মুখ অতিথিরা। তামিমের বিশ্বাস, দলের পরের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের মতো অবদান রাখলে বড় স্কোর পেয়ে যাবে বাংলাদেশ। 
 
বাংলাদেশকে পাঁচশ রানের নিচে থামাতে চায় শ্রীলঙ্কা
 
টস জিতে সহায়ক উইকেটে ব্যাটিং করার পুরো সুবিধা কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম দিনেই রান নিয়ে গেছে চারশ রানের কাছাকাছি। স্বাগতিকদের নজর অনেক বড় সংগ্রহে। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দিন ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে পাঁচশ রানের নিচে থামাতে চান তারা।
 
প্রথম দিন শেষে স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ৩৭৪/৪ (তামিম ৫২, ইমরুল ৪০, মুমিনুল ১৭৫*, মুশফিক ৯২, লিটন ০, মাহমুদউল্লাহ ৯*; লাকমল ১৭-৩-৪৩-২, কুমারা ১২-১-৬৪-০, দিলরুয়ান ২৪-৪-৯৮-১, হেরাথ ২০-১-১০০-০, সান্দাকান ১৩-১-৫৮-১, ধনঞ্জয়া ৪-০-১১-০)