ব্র্যাথওয়েট-হোপের সেঞ্চুরিতে উইন্ডিজের লিড

বোলিংয়ের আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হলো যেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ে। আগের দিন দুই ফাস্ট বোলার নিয়েছিলেন ৪ উইকেট করে। এদিন দুই তরুণ ব্যাটসম্যান করলেন সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লিড নিল সিরিজে পিছিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2017, 05:52 PM
Updated : 26 August 2017, 05:53 PM

হেডিংলি টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৫ উইকেটে ৩২৯। স্বাগতিকদের চেয়ে এগিয়ে তারা ৭১ রানে।

প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিতে ১৪৭ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে অপরাজিত শাই হোপ। দারুণ খেলে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ফিরেছেন ১৩৪ রানে।

এবারের আগে সেই ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে সবশেষ লিড পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে।

প্রথম দিনে ভালোর মাঝেও যেমন ছিল ক্যাচ ছাড়ার আক্ষেপ, খানিকটা আক্ষেপের ছোঁয়া থাকল দ্বিতীয় দিনেও। দারুণ জুটির পর ব্র্যাথওয়েট আর শেষ বিকেলে রোস্টন চেইস না ফিরলে দিনটি হতে পারত স্বপ্নের মত!

ব্র্যাথওয়েট ও হোপের জুটি অবশ্য ছিল স্বপ্নের মতই। সকালে নড়বড়ে শুরুর পর অমন জুটি কজন ভাবতে পেরেছিল!

১ উইকেটে ১৯ রান নিয়ে শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মেঘলা আকাশের নিচে দারুণ সুইং করছিল বল। জেমস অ্যান্ডারসন দ্রুত তুলে নিলেন নাইট ওয়াচম্যান দেবেন্দ্র বিশু ও কাইল হোপকে। ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন আরেকটি ধসের অপেক্ষায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

কিন্তু এই টেস্টে যে তারা বদলে যাওয়া দল! কঠিন সময়টুকু দারুণ দৃঢ়তায় পার করে দিলেন ব্র্যাথওয়েট ও হোপ। একসময় দেখা গেল সূর্যের মুখ, পুরোনো ও নরম হতে থাকল বল, বাড়তে থাকল রানও।

সুইং বোলিংয়ের বিপক্ষে দারুণ টেকনিক ও টেম্পারামেন্টের প্রমাণ আরও একবার রাখলেন ব্র্যাথওয়েট। সুইং সামলাতে খেলেছেন অনেক দেরিতে, আলতো হাতে। ব্যাকফুটে ছিলেন দুর্দান্ত, কাভারে খেলেছেন দারুণ সব শট।

হোপ দেখালেন কেন তাকে নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের এত আশা। আগের ১১ টেস্টে মাত্র একটি ফিফটির পরও তার ওপর আস্থা রেখেছে দল। তিনি দিলেন আস্থার প্রতিদান। রাখলেন তার প্রতিভা আর সামর্থ্যের প্রমাণও।

মইন আলিকে ছক্কায় পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ব্র্যাথওয়েট। টম ওয়েস্টলিকে ছক্কায় সেঞ্চুরি। ৩৯ টেস্টে তার এটি ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। হোপ প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান ১৫৯ বলে, ১৭ চারে।

সেঞ্চুরির পরও একইভাবে এগিয়ে যান দুজন। দ্বিতীয় নতুন বলেও শুরুতে সুবিধা করতে পারছিলেন না ইংলিশরা। শেষ পর্যন্ত ২৪৬ রানের জুটি ভাঙেন স্টুয়ার্ট ব্রড।

সামান্য নিচু হয়ে বেশ অনেকটা ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড ব্র্যাথওয়েট। ২৪৯ বলে ১৩৪ রানের ইনিংসে ছক্কা দুটি, চার ১৭টি।

থিতু হওয়ার আগে চেইসকে ফেরান স্টোকস। তবে হোপ ছিলেন অটল। শেষ বেলায় দ্রুত কিছু রান করে উইকেট হারানোর খেদ অনেকটা ভুলিয়ে দেন জার্মেইন ব্ল্যাকউড (২৩ বলে ২১*)।

দিনের শেষ বলে চার মেরে ব্ল্যাকউড যেন বুঝিয়ে দেন, দিনটি ছিল তাদেরই। ২৫২ বলে ২৩ চারে ১৪৭ রানে অপরাজিত থেকে হোপ যখন ফিরছেন, দাঁড়িয়ে তখন হেডিংলির গ্যালারি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৫৮

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ১০২ ওভারে ৩২৯/৫ (আগের দিন ১৯/১) (ব্র্যাথওয়েট ১৩৪, বিশু ১, কাইল হোপ ৩, শাই হোপ ১৪৭*, চেইস ৫, ব্ল্যাকউড ২১*; অ্যান্ডারসন ৩/৪৬, ব্রড ১/৭৩, ওকস ০/৫৮, স্টোকস ১/৬০, মইন ০/৬৯, ওয়েস্টলি ০/১২)