চার টেস্ট দিয়েই ওপেনার স্মিথকে বিচার করা কোচের চোখে ‘অন্যায্য’

ওপেনার হিসেবে শুরুটা ভালো করতে না পারলেও স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে এখনই প্রশ্ন তুলতে চান না অস্ট্রেলিয়ার কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড।

ব্যাট হাতে স্টিভেন স্মিথকে সেরা ছন্দে দেখা যাচ্ছে না অনেক দিন ধরেই। ওপেনিংয়ে উঠে আসার পর তার পারফরম্যান্সে আরও ভাটার টান। নতুন ভূমিকায় তার ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই সংশয় জাগতেও শুরু করেছে। তবে এত দ্রুতই তার দিকে আঙুল তোলার কিছু দেখছেন না অস্ট্রেলিয়ার কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড। তার বিশ্বাস, নতুন চ্যালেঞ্জেও মানিয়ে নেওয়ার পথ বের করে নেবেন স্মিথ। 

তুমুল আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়ে সম্প্রতি স্মিথকে ওপেনিংয়ে তুলে আনে অস্ট্রেলিয়া। আগ্রহটা প্রকাশ করেছিলেন তিনি নিজেই। দলও তার চাওয়া পূরণ করে। ডেভিড ওয়ার্নারের অবসরের পর ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করা ওপেনারদের সুযোগ না দিয়ে মিডল অর্ডার থেকে ওপরে তুলে আনা হয় অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানকে।

ওপেনিংয়ে উঠে আসার পর দুই সিরিজে চার টেস্টের আট ইনিংসে ফিফটি ছুঁতে পেরেছেন তিনি মোটে একবার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেশের মাঠের সিরিজ দিয়ে তার নতুন দায়িত্ব শুরু। প্রথম তিন ইনিংসে ১২, অপরাজিত ১১ ও ৬ রানের পর ওই সিরিজের শেষ ইনিংসে আদ্যন্ত ব্যাটিং করে ৯১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। 

তাতে মনে হয়েছিল, ওপেনার হিসেবে তিনি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন। কিন্তু এরপর নিউ জিল্যান্ড সফরে চার ইনিংসে তার রান ৩১, ০, ১১ ও ৯। 

সাম্প্রতিক সময়ে এমনিতেই তার ব্যাটে আগের মতো রানের জোয়ার ছিল না। গত অ্যাশেজে লর্ডস টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর থেকে টানা ২১ ইনিংসে শতরান নেই তার। সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে নতুন বল সামলানোর চ্যালেঞ্জ। 

তাকে ওপেনিংয়ে তুলে আনার পর অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে সমালোচনা হয়েছে বেশ। সেই প্রশ্নগুলি এখন আবার উচ্চকিত হতে শুরু করেছে। তবে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে ম্যাকডোনাল্ড বললেন, তিনি এখনই দুর্ভাবনার কিছু দেখছেন না। 

“আমার মনে হয় এটা অনুচিত। আমার মতে, এটা তার প্রাপ্য নয়। আমার ধারণা, এটা সে কাটিয়ে উঠবে। তার জন্য এটা নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন পজিশন। নতুন একজন ওপেনারকে এনে যদি চারটি টেস্ট ম্যাচ পরই বলা হয়, ‘আমরা তাকে বদলে ফেলব’… আপনার কী মনে হয়, এটা ঠিক নাকি ঠিক নয়? আমার মনে হয়, এটা বেশ অন্যায্য।” 

রান না পাওয়ার পাশাপাশি স্মিথের আউট হওয়ার ধরনও চোখে লাগছে অনেকের। অফ স্টাম্পের বাইরে নড়বড়ে লাগছে তাকে। মনে হচ্ছে যেন বুঝে উঠতে পারছেন না, অফ স্টাম্প কোথায়। অনেকটা শাফল করে খেলেন বলে পেসাররা তার প্যাডকে লক্ষ্য বানিয়েছেন বরাবরই। তবে ওপেনিংয়ে উঠে আসার পর নতুন বলের মুভমেন্ট স্মিথের কাজকে করে তুলেছে আরও কঠিন আর পেসারদের জন্য সহজ। ওপেনিংয়ে যে ছয়বার তিনি আউট হয়েছেন, এর তিনটিই ছিল এলবিডব্লিউ। 

ম্যাকডোনাল্ডের বিশ্বাস, এই ব্যর্থতাও ম্মিথকে তাতিয়ে দেবে আরও ভালো কিছু করতে।

“চ্যালেঞ্জ নিতে সে কখনোই পিছপা হয় না। স্টিভ স্মিথ যখনই ব্যর্থ হয়, তখনই সে এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়। কাজেই এই কঠিন কন্ডিশনে (চার ইনিংসে) ৫১ রান নিয়ে ফেরার পর কোনো সংশয়ই নেই যে, পরের চ্যালেঞ্জের জন্য সে তৈরি থাকবে।” 

“পরের চ্যালেঞ্জ ভারতের বিপক্ষে এবং তারা অপেক্ষায় থাকবে। আমার মনে হয়, এটা তাকে ভেতরে ভেতরে উজ্জীবিত করবে। সে ওপেন করতে চায়। এই পজিশনে খেলার কথা সে নিজেই আমাদেরকে বলেছে এবং আমরা মনে করি, সে এখানে মানিয়ে নেবে ও কার্যকর হবে।” 

সেই চ্যালেঞ্জের আগে নিজের ব্যাটিং নিয়ে কাজ করার যথেষ্টই সুযোগ পাবেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার পরের টেস্ট সিরিজ ভারতের বিপক্ষে আগামী নভেম্বরে।