রোহিত-কোহলিকে ছাড়া নেমে বিপর্যস্ত ভারত

প্রায় চার বছর পর ওয়ানডেতে ভারতকে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2023, 03:40 AM
Updated : 30 July 2023, 03:40 AM

সেই একই মাঠ, একই উইকেটে খেলা। কিন্তু বদলে গেল দুই দলের চিত্র। আগের ম্যাচে জয়ী ভারত এবার পেরে উঠল না। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে বিশ্রামে রেখে নামা দলের ব্যাটিং বিধ্বস্ত হলো ক্যারিবিয়ান বোলিংয়ের সামনে। প্রথম ম্যাচে বাজে ব্যাটিংয়ে হেরে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার দারুণ জয়ে সমতা ফেরাল সিরিজে।

তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে ৬ উইকেটে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ভারতের কাছে টানা ৯ ওয়ানডেতে হারের পর অবশেষে আবার জয়ের স্বাদ পেল ক্যারিবিয়ানরা।

বারবাডোজে শনিবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। উদ্বোধনী জুটিতে শুবমান গিল ও ইশান কিষান যোগ করেন ৯০ রান। কিন্তু পরে দুই দফা ব্যাটিং ধসে বাকি সব জুটি মিলিয়ে রান আসে আর মেটে ৯১!

১৮২ রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতে যায় ৮০ বল বাকি রেখে।

প্রথম ম্যাচে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ছিল ভীষণ দুরূহ। দ্বিতীয় ম্যাচ একই উইকেটে হলেও এ দিন উইকেটে কিছুটা কাটা ঘাস ছড়িয়ে রোল করা হয়। ব্যাটিংয়ের জন্য আগের চেয়ে কিছুটা ভালো হয়ে ওঠে। কিষান ও গিল ভারতকে এনে দেন ভালো শুরু। তবে ক্রমে দাপট দেখা যায় বোলারদেরই। বাউন্স যথারীতি ছিল অসমান, স্পিনারদের বল গ্রিপ ও টার্ন করেছে অনেক।

আগের ম্যাচে ঝড়ো ফিফটি করা কিষান এবার শুরুতে কিছুটা সাবধানী ছিলেন। কয়েকটি বাউন্ডারিতে তখন রান বাড়ান গিল। পরে কিষানও শুরু করেন শট খেলা। শুরুর জুটিতেই ভারত ছুটে যায় শতরানের কাছাকাছি।

পেসারদের ব্যর্থতার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন বাঁহাতি স্পিনার গুডাকেশ মোটি। তার ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ছক্কার চেষ্টার লং অফ সীমানায় ধরা পড়েন গিল (৪৯ বলে ৩৪)।

৯০ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর কিষানও বিদায় নেন পরের ওভারে। ৫৫ বলে ৫৫ রান করা বাটসম্যানকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচ নিয়ে ফেরান আলিক আথানেজ।

রোহিত-কোহলির বিশ্রামে অন্যদের বাজিয়ে দেখতে ব্যাটিং অর্ডারে বেশ পরিবর্তন আনে ভারত। তিনে নামানো হয় একাদশে ফেরা সাঞ্জু স্যামসনকে, চারে খেলেন অলরাউন্ডার আকসার প্যাটেল, পাঁচে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। কিন্তু কেউই পারেননি সুযোগ কাজে লাগাতে।

৩৩ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় ভারত। ষষ্ঠ উইকেটে সূর্যকুমার যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা চেষ্টা করেন বিপর্যয় সামাল দেওয়ার। কিন্তু ৩৩ রানের এই জুটি ভাঙার পর আবার ধস। এবার শেষ ৫ উইকেট পড়ে ৩৫ রানের মধ্যে।

পেসারদের শর্ট বল ও বাড়তি বাউন্স আর স্পিনারদের টার্ন ও বাউন্সে নাকাল হয় ভারত। ৯.১ ওভার আগেই গুটিয়ে যায় তারা।

রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজও শুরুটা করে ভালো। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৩ রান যোগ করেন ব্র্যান্ডন কিং ও কাইল মেয়ার্স। মূলত মেয়ার্সের ঝড়েই দ্রুত বাড়ে দলের রান। ২৮ বলে ৩৬ রান করে আগে আউটও হন তিনিই।

মেয়ার্সকে থামানোর পর শার্দুল ঠাকুর দ্রুত ফিরিয়ে দেন কিং ও আলিক আথানেজকেও। কুলদিপ যাদবের স্কিড করা বল বোল্ড করে দেয় শিমরন হেটমায়ারকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৪ উইকেটে ৯১। ম্যাচ তখনও দোদুলম্যান।

কিন্তু ৫ম উইকেটে ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে ৯১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ শেষ করে দেন শেই হোপ ও কেসি কার্টি।

৮০ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচের সেরা অধিনায়ক হোপ। একাদশে ফেরার ম্যাচে কার্টি অপরাজিত ৬৫ বলে ৪৮ রান করে।

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ মঙ্গলবার ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত : ৪০.৫ ওভারে ১৮১ (কিষান ৫৫, গিল ৩৪, স্যামসন ৯, আকসার ১, পান্ডিয়া ৭, সূর্যকুমার ২৪, জাদেজা ১০, শার্দুল ১৬, কুলদিপ ৮*, উমরান ০, মুকেশ ৬; মেয়ার্স ৫-০-১৮-০, সিলস ৬-০-২৮-১, জোসেফ ৭-০-৩৫-২, মোটি ৯.৫-০-৩৬-৩, শেফার্ড ৮-১-৩৭-৩, ক্যারাইয়াহ ৫-০-২৫-১)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৬.৪ ওভারে ১৮২/৪ (কিং ১৫, মেয়ার্স ৩৬, আথানেজ ৬, হোপ ৬৩*, হেটমায়ার ৯, কার্টি ৪৮*; পান্ডিয়া ৬.৪-০-৩৮-০, মুকেশ ৩-০-১৭-০, উমরান ৩-০-২৭-০, শার্দুল ৮-০-৪২-৩, কুলদিপ ৮-০-৩০-১, জাদেজা ৬-০-২৪-০, আকসার ২-১-৪-০)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজের ২টি শেষে ১-১ সমতা।

ম্যান অব দা ম্যাচ: শেই হোপ।