দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নিগারের ম্যাচ জেতানো ফিফটি

দিনের আরেক ম্যাচে মুর্শিদা খাতুনের ব্যাটে জিতল রংপুর বিভাগ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2022, 01:59 PM
Updated : 19 August 2022, 01:59 PM

আগের ম্যাচে ভালো শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি নিগার সুলতানা। এবার নিজেকে আরও ভালোভাবে মেলে ধরলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। চট্টগ্রাম বিভাগের বিপক্ষে ব্যাট হাতে দলকে দেখালেন পথ। তার অপরাজিত ফিফটিতে দারুণ এক জয় পেল বরিশাল বিভাগ।

টি-টোয়েন্টি সংস্করণে মেয়েদের জাতীয় ক্রিকেট লিগে শুক্রবার চট্টগ্রামের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জিতেছে বরিশাল। প্রতিপক্ষের ১১৭ রান পেরিয়ে যায় তারা ১ বল আগে।

বরিশালের জয়ে ব্যাট হাতে বড় অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নেন নিগার। তিনে নেমে ১ ছক্কা ও ৭ চারে ৫৩ বলে ৬৩ রানের ঝকঝকে ইনিংসে তিনি দলকে পৌঁছে দেন কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। গত ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৩১ রান।

সিলেট একাডেমি মাঠে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রামকে ভালো শুরু এনে দেন আফিয়া আনাম ও ইভা। তাদের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫৭ রান।

আফিয়া ও ইভা দুইজনেই আউট হন ২৭ রান করে। তিনে নেমে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নেন সোবহানা মোস্তারি। মূলত তার ব্যাটেই একশ ছাড়ায় চট্টগ্রামের রান।

১ ছক্কা ও ৪ চারে ৩১ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে ইনিংসের শেষ বলে আউট হয়ে যান সোবহানা।

রান তাড়ায় বড় কোনো জুটি পায়নি বরিশাল। তাদের একটি জুটিও ছুঁতে পারেনি ৩০ রান। আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকা সতীর্থদের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়েই দলকে লক্ষ্যে নিয়ে যান নিগার।

দারুণ ব্যাটিং উপহার দিয়ে এই কিপার-ব্যাটার ফিফটি তুলে নেন ৪৯ বলে।

শেষ ওভারে যখন ১১ রান চাই বরিশালের, প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে নিগারকে স্ট্রাইক দেন ফাতেমা জাহান। পরের বলেই হ্যাপি আলমকে ছক্কায় উড়িয়ে সমীকরণ সহজ করে দেন নিগার। পরের তিনে দুটি ডাবল নিয়ে দলকে উল্লাসে মাতান তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম বিভাগ: ২০ ওভারে ১১৭/৫ (আফিয়া ২৭, ইভা ২৭, সোবহানা ৪৩, ফাল্গুনী ০, তমালিকা ১২, স্বর্ণা ৫*; ফোয়ারা ৪-০-১৭-১, ফাতেমা ৩-০-১৯-০, দিশা ২-০-১৫-০, রাবেয়া ৪-০-২৪-১, লিলি ২-০-২৭-০, সুলতানা ৩-১-৮-১, মুরশিদা ২-০-৫-১)

বরিশাল বিভাগ: ১৯.৫ ওভারে ১১৮/৬ (মুর্শিদা ১৮, শারমিন ৬, নিগার ৬৩, শারমিন ১২, সুলতানা ১, রাবেয়া ৫, দিশা ২, ফাতেমা ৩*; খাদিজা ৪-০-১১-০, অপর্ণা ৪-০-২৫-১, তমালিকা ১-০-৭-০, সোবহানা ৩-০-২০-০, মেহেরুন ২-০-১১-১, স্বর্ণা ২-০-১২-০, হ্যাপি ৩.৫-০-২৮-০)

ফল: বরিশাল বিভাগ ৪ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: নিগার সুলতানা

মুর্শিদার ব্যাটে জিতল রংপুর

ইনিংস শুরু করতে নেমে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়লেন মুর্শিদা খাতুন। তার ব্যাটেই ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে জয়ে তুলে নিল রংপুর বিভাগ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকাকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর। ৯১ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ৫ বল বাকি থাকতে।

রান তাড়ায় অপরাজিত ৪১ রান করেন মুর্শিদা। ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে তার হাতে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকার বেশিরভাগ ব্যাটারই ছিলেন ব্যর্থ। তাদের ইনিংসে কেবল দুইজন যেতে পারেন দুই অঙ্কে।

সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি আসে রিতু মনির ব্যাট থেকে। চারে নেমে ৩ চারে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১৭ রান করে ওপেনার একা মল্লিক।

মুর্শিদা ও সাথী রানির উদ্বোধনী জুটিতে জয়ের ভিত গড়ে ফেলে রংপুর। ৫৮ রানের জুটি ভাঙে সাথীর বিদায়ে। পরে অভিজ্ঞ সালমা খাতুনও ফিরে যান দ্রুত।

তবে দলকে বিপদে পড়তে দেননি মুর্শিদা। তাজিয়া আক্তারকে নিয়ে বাকি কাজ সারেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা বিভাগ: ২০ ওভারে ৯০/৮ (সুমি ০, একা ১৭, ফারজানা হক ৯, রিতু ৩৮*, সোভা ৪, তৃপ্তি ০, তানজিলা ৫, হাসনাত ১, রূপা আবেদীন ০, রূপা রয় ৯*; তৃষ্ণা ৪-০-১২-১, ফারজানা ইয়াসমিন ৪-০-১৭-১, তিথি ২-০-১০-০, সালমা ৩-০-২১-০, জেসি ৪-০-১৬-২, সাবেকুন ৩-০-১১-০)

রংপুর বিভাগ: ১৯.১ ওভারে ৯১/২ (মুর্শিদা ৪১*, সাথী ২৭, সালমা ৩, তাজিয়া ১২*; রূপা রয় ২-০-৮-০, রিতু ৩.১-০-১৯-০, রূপা আবেদীন ৪-০-১৪-০, হাসনাত ৪-০-১৩-১, শানু ৪-০-২০-০, তানজিলা ২-০-১৬-০)

ফল: রংপুর বিভাগ ৮ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: মুর্শিদা খাতুন

সম্মিলিত চেষ্টায় সিলেটকে হারাল রাজশাহী

নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সিলেট বিভাগকে একশর আগে আটকে রাখল রাজশাহী বিভাগ। পরে রান তাড়ায় সম্মিলিত চেষ্টায় দলকে জয়ের আনন্দ এনে দিলেন ব্যাটাররা।

সিলেট একাডেমি মাঠে রাজশাহীর জয় ২ উইকেটে। সিলেটের ৯২ রান তারা পেরিয়ে যায় ২ বল বাকি থাকতে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিলেটের হয়ে পাঁচ ব্যাটারই যান দুই অঙ্কে। কিন্তু কেউ খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন ওপেনার শামীমা সুলতানা।

রান তাড়ায় রাজশাহীকে ভালো শুরু এনে দেন ফারজানা আক্তার। ওপেনিংয়ে নেমে ৩ চারে ৩১ রান করেন তিনি। জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো রাজশাহীর এক প্রান্ত আগলে রাখেন আয়েশা আক্তার জুনিয়র। অপরাজিত ১৮ রানের ইনিংসে খেলেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট বিভাগ: ২০ ওভারে ৯২/৬ (শামীমা ২৫, ইশমা ০, দিপা ১৪, ইসমত ৩, মারুফা ১২*, ফাহিমা ১৫, অর্থি ১২; পান্না ৪-০-৮-০, পূজা ৩-০-৬-১, লতা ৪-০-১২-১, মোরশেদা ৩-০-১৫-১, নাহিদা ৪-০-৩৩-১, ফেরদৌসি ১-০-৮-১, বৃষ্টি ১-০-৫-১)

রাজশাহী বিভাগ: ১৯.৪ ওভারে ৯৫/৮ (ফারজানা ৩১, সানজিদা ১, আফিয়া ১৩, লতা ৭, আয়েশা জুনি. ১৮*, নাহিদা ০, ফেরদৌসি ১১, পূজা ২, পান্না ২, মোরশেদা ১*; মারুফা ৩.৪-০-১৬-২, লাবনি ৪-০-১০-১, ফাহিমা ৪-১-১১-০, দিপা ৩-০-২২-০, ইসমত ৪-০-২২-২, মরজিনা ১-০-৯-০)

ফল: রাজশাহী বিভাগ ২ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: ফারজানা আক্তার

বিফলে গেল সানজিদার দুর্দান্ত বোলিং

বল হাতে আলো ছড়ালেন সানজিদা আক্তার মেঘলা। ৪ উইকেট নিয়ে খুলনা বিভাগকে সংগ্রহ বেশি বড় করতে দিলেন না ময়মনসিংহ বিভাগের এই বাঁহাতি স্পিনার। কিন্তু দলের ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিফলে গেল তার এই দারুণ বোলিং।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খুলনা বিভাগের জয় ৯ রানে। ১০৮ রানের পুঁজি নিয়ে ময়মনসিংহকে তারা থামিয়ে দেয় ৯৯ রানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ ২১ রানের ইনিংস খেলেন সাত নম্বরে নামা তাজ। ২০ রান করেন সোহেলি আক্তার।

ময়মনসিংহের সানজিদা ৪ ওভারে স্রেফ ৮ দিয়ে নেন ৪টি উইকেট।

জবাব দিতে নেমে শুরুতে বেশি সাবধানী হয়ে খেলেন ময়মনসিংহের দুই ওপেনার শারমিন সুলতানা ও হালিমাতুল সাদিয়া। ৯.১ ওভার পর্যন্ত স্থায়ী জুটিতে আসে কেবল ৩২ রান।

দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ২৩ রান করতে শারমিন খেলেন ৩২ বল। সাদিয়া ১৭ রান করেন ৩৩ বলে। মাঝে সুমাইয়ার ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ১১।

শেষ দিকে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রান বাড়ানোর চেষ্টা চালান দিলারা দোলা ও রিয়া আক্তার শিখা। কিন্তু লক্ষ্য এত দূরে ছিল যে, পেরে ওঠেননি তারা।

২ চারে ১২ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন দোলা। একটি করে ছক্কা-চারে ৯ বলে ১৮ রান করেন শিখা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা বিভাগ: ২০ ওভারে ১০৮/৭ (শম্পা ১৬, ঝিলিক ৮, ফাতেমা ১৭, রুমানা ০, সোহেলি ২০, শরিফা ৭, তাজ ২১*, ফাহমিদা ২, ফারজানা ববি ৮*; জাহানারা ৩-০-১২-১, শিখা ৪-০-১৭-০, সানজিদা ৪-০-৮-৪, বিথি ৪-০-৩৩-০, আশা ৪-০-২২-১, কামরুন ১-০-১৩-০)

ময়মনসিংহ বিভাগ: ২০ ওভারে ৯৯/৫ (শারমিন ২৩, হালিমাতুল সাদিয়া ১৭, মিশু ১, সুমাইয়া ১১, জাহানারা ৪, দোলা ১৯*, শিখা ১৮*; সোহেলি ৪-০-২০-০, সুরাইয়া ৩-০-১৯-০, শরিফা ৪-০-১৭-২, রুমানা ৪-০-১৯-০, ফাতেমা ২-০-১১-০, ফাহমিদা ৩-১-১৩-২)

ফল: খুলনা বিভাগ ৯ রানে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: ফাহমিদা চয়া