লিটন বলেছিলেন, রাসেল করে দেখালেন

আগের ম্যাচে ব্যর্থতার পর আন্দ্রে রাসেলকে নিয়ে লিটন দাস বলেছিলেন, ‘পরের ম্যাচই জেতাবে সে’, সত্যিই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে দলকে জেতালেন ক্যারিবিয়ান তারকা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2024, 05:36 AM
Updated : 21 Feb 2024, 05:36 AM

একেই বুঝি বলে ‘যেমন কথা, তেমন কাজ।’ আগের ম্যাচ শেষেই আন্দ্রে রাসেলকে নিয়ে লিটন কুমার দাস বলেছিলেন, “আজকে পারেনি, পরের ম্যাচ জেতাবে।” পরদিন ঠিকই চেনা বিধ্বংসী চেহারায় ফিরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে জেতালেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার।

আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে তার যা পারফরম্যান্স ছিল, সেটিকে মোটা দাগে ব্যর্থতা বলার জো নেই। তবে তার কাছে তো দাবি একটু বেশিই থাকে! যখন ক্রিজে গিয়েছিলেন, জয়ের জন্য দলের লাগত ২০ বলে ৫১ রান। সেই অবস্থায় ১৪ বলে ২৩ রানের ইনিংস তো তার মতো একজনের জন্য একরকম ব্যর্থতাই।

বিশেষ করে, অন্য প্রান্তে তখন দারুণ খেলছিলেন লিটন। কিন্তু তার পরও রাসেলের ওপর ভরসা করে তাকেই বেশি স্ট্রাইক দিচ্ছিলেন কুমিল্লা অধিনায়ক। তাতে লাভ হয়নি সেদিন। তলানির দিকের দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের কাছে ১২ রানে হেরে যায় ফেভারিট কুমিল্লা।

ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করাতেই কিছুটা বিরক্তি নিয়ে লিটন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, রাসেলের ওপর ভরসা তার আছে। সেই ভরসার প্রতিদান ২৪ ঘণ্টা পরই মিলেছে।

সমীকরণ অবশ্য একটু সহজ ছিল মঙ্গলবার রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। রাসেল ক্রিজে যাওয়ার সময় কুমিল্লার জিততে লাগত ৩৩ বলে ৪৮ রান। সেই রান করতে লেগেছে তাদের স্রেফ ১৯ বল। এর মধ্যে রাসেল ১২ বল খেলে করেছেন অপরাজিত ৪৩। চার ও ছক্কা মেরেছেন চারটি করে। দর্শকের বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছেন পুরোপুরি।

ম্যাচের পর চওড়া হাসিতেই সেই কথাই বলছিলেন লিটন, “দর্শকের জন্য খুব ভালো হয়েছে, অনেক বড় বড় ছয় মেরেছে। আমি ব্যাটিং করলে হয়তো এত বড় ছয় মারতে নাও পারতাম (হাসি)।”

কুমিল্লার কোচ সালাউদ্দিন অবশ্য খুব একটা উচ্ছ্বাস দেখালেন না। বরং মনে করিয়ে দিলেন, রাসেলের কাছ থেকে এরকম কিছুই খুবই প্রত্যাশিত, “স্বাভাবিক… সবাই প্রত্যাশা করে সে এই ধরনের খেলা খেলবে। এই কারণেই সেরা ফিনিশারদের একজন সে।”

রাসেল নিজে আগে বললেন দলের জয়ের কথা। আগের ম্যাচে হারার পর নিজেদের মধ্যে যে কথা হয়েছিল তাদের, সেসবের বাস্তবায়ন করতে পারায় ভালো লাগছে তার।

“আমাদের জন্য ম্যাচটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গতকালকে হেরেছি, আমরা জানতাম ভুলগুলোয় কোথায় ছিল। হোটেলে ফিরে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে আমাদের। বোলার ও ব্যাটাররা একসঙ্গে খুব ভালো পরিকল্পনা করেছি আমরা। খুব ভালো দলীয় প্রচেষ্টা ছিল এই ম্যাচে। দলের জয়ে আমি খুশি।”

শুধু ব্যাটিংই নয়, রাসেল এ দিন বল হাতেও ছিলেন কার্যকর। আগের ম্যাচে ৩৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন। এই ম্যাচে প্রথম বলেই বিদায় করেন তিনি প্রতিপক্ষ অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানকে। পরে ত্রয়োদশ ওভারে ফিরে আউট করেন টম মুরসকে। শেষ ওভারে উইকেট নেন আরেকটি।

ব্যাটে-বলে পরিপূর্ণ পারফরম্যান্স দেখাতে পেরে তৃপ্তি ফুঠে উঠল তার কণ্ঠে।

“প্রথম ওভার করার পরই অনুভব করি, আমার শরীর ভালো লাগছে আজকে। অধিনায়ককে বলি, ‘তোমার যখনই মনে হয়, আমি প্রস্তুত আছি (বোলিং করতে)।’ আজকে আমি বোলিং করতে মুখিয়ে ছিলাম। যখনই শরীর থাকে এবং বোলিংয়ের তাড়না থাকে… কখনও কখনও ভাগ্যকেও পাশে পাওয়া যায়… আমি খুশি যে তিন উইকেট নিয়ে দলে অবদান রাখতে পেরেছি এবং ব্যাট হাতেও পরে খেলা শেষ করতে পেরেছি।”

“আমার মনে হয়, আমার যা কাজ, আজকে তা করতে পেরেছি। অলরাউন্ডার হিসেবে এটির জন্যই পরিচিতি আমার। আজকে বোলিং অসাধারণ ছিল, এরপর তো ব্যাটিং (হাসি)…।”