অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রথম টেস্টেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের।
Published : 12 Nov 2024, 01:39 PM
একসময় পার্থ ছিল গতি ও বাউন্সের প্রতিশব্দ। ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে গতিময় উইকেটগুলির একটি ছিল এখানে। ফাস্ট বোলারদের স্বপ্ন ছিল এই ২২ গজে গতির ঝড় তোলা। যে মাঠে গতির আসর বসত, সেই ওয়াকা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয় না সাত বছর ধরে। কিন্তু এখনকার স্টেডিয়ামেও যে উইকেটের চরিত্র একই, ভারতকে এবার তা বুঝিয়ে দিতে চায় পার্থ।
ওয়াকার কাছেই ৬০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার অপ্টাস স্টেডিয়ামে এখন খেলা হয় পার্থে। দ্রুতই এটি হয়ে উঠছে অস্ট্রেলিয়ার দুর্গ। এখনও পর্যন্ত চারটি টেস্ট হয়েছে এই মাঠে, সবকটিতেই বড় ব্যবধানে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।
ওয়াকার মতো পেস স্বর্গ হিসেবে এটার পরিচিতি এখনও সেভাবে গড়ে ওঠেনি। সবসময় গতিময় উইকেটও এখানে পাওয়া যায়নি। তবে এবার বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে এই মাঠে ওয়াকার স্মৃতি ফিরে আসবে, জানিয়ে রাখলেন প্রধান কিউরেটর আইজ্যাক ম্যাকডোনাল্ড।
“এটা অস্ট্রেলিয়া, এটা পার্থ… আমরা তৈরি হচ্ছি দারুণ গতি, সত্যিই ভালো বাউন্স ও ‘ক্যারি’ পাওয়ার জন্য। গত বছরের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই আমি।”
গত বছর এই মাঠে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান টেস্টে পেসারদের সহায়তা ছিল বেশ। ডেভিড ওয়ার্নার যদিও ১৬৪ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলেছিলেন, তবে পাকিস্তানের নবীন পেসার আমের জামাল নিয়েছিলেন ইনিংসে ৬ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার তিন পেসার প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক ও জশ হেইজেলউডও বেশ কার্যকর হয়েছিলেন। শেষ ইনিংসে ৮৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান।
২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্টে আবার উইকেট ছিল অনেকটাই নিষ্প্রাণ। ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মার্নাস লাবুশেন ও স্টিভেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়া জিততে পেরেছিল ক্যারিবিয়ানদের বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে। শেষ ইনিংসে প্রায় ৪৩ ওভার বোলিং করে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন অফ স্পিনার ন্যাথান লায়ন।
ওই টেস্টের পর উইকেট নিয়ে বেশ চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল বলে জানালেন ম্যাকডোনাল্ড। গত মৌসুম থেকে তাই পার্থের গতিময় ও বাউন্সি চরিত্র আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
এবারও তেমন কিছুর আশা করছেন প্রধান কিউরেটর। তবে ব্যাটিংটা ঠিকঠাক করতে জানলে যে রানও আসবে, সেটিও জানিয়ে রাখলেন তিনি।
“গত বছর ১০ মিলিমিটার ঘাস রাখা হয়েছিল। শুরুর জন্য ১০ মিলিমিটার বেশ ভালো, বিশেষ করে এই কন্ডিশনের জন্য। এতে প্রথম কয়েক দিনে উইকেট বেশ জমাট থাকে। জীবন্ত ঘাস থাকলে উইকেট গতিময় হয়।”
“গত বছর দুই দলের বোলিং ইউনিটই বেশ আগ্রাসী ছিল এবং এবারও সেরকম কিছুই আশা করছি। তবে আগেও আমরা যেমন দেখেছি, ভালো ব্যাটসম্যানরা এখানে দাপট দেখাতে পেরেছে, বল বাউন্ডারিত পাঠিয়ে দ্রুত রান তুলতে পেরেছে।”
মাত্রই এই স্টেডিয়ামে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি খেলল অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান। সেই ম্যাচে পাকিস্তানের চার পেসার মিলে অস্ট্রেলিয়াকে গুটিয়ে দেয় ১৪০ রানেই। তবে উইকেটে ঘাস থাকলেও আদতে তা খুব ভয়ঙ্কর ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সারির দলের বাজে ব্যাটিংই মূলত সহজ করেছিল পাকিস্তানি পেসারদের কাজ। কিউরেটর জানালেন, অস্ট্রেলিয়া-ভারতের টেস্ট ম্যাচটি হবে অন্য উইকেটে।
আগামী ২২ নভেম্বর শুরু হবে অস্ট্রেলিয়া-ভারতের পার্থ টেস্ট।