‘মনে হচ্ছিল, আমিও কোথাও যেন একটা ব্লক খেয়ে আছি’, বিপিএলে অবশেষে বড় রানের দেখা পাওয়ার পর বললেন ফরচুন বরিশালের ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয়।
Published : 04 Feb 2025, 09:00 AM
লেখকদের ক্ষেত্রে ‘রাইটার’স ব্লক’ খুবই পরিচিত একটি ব্যাপার। ক্রিকেটারদেরও যে একইরকম উপলব্ধি হতে পারে, সেই অভিজ্ঞতা শোনালেন তাওহিদ হৃদয়। সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে ফরচুন বরিশালের ব্যাটসম্যান কৃতজ্ঞতা জানালেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল, দলের কোচিং স্টাফ ও সাপোর্ট স্টাফের অন্যদের প্রতি।
বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে চিটাগং কিংসকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পথে সোমবার ৫৬ বলে ৮২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন হৃদয়। এবারের বিপিএলে ১২ ইনিংসে তার প্রথম ফিফটি এটি।
তার কাছে দলের প্রত্যাশা ছিল অনেক। ড্রাফটের আগেই সরাসরি চুক্তিতে তাকে দলে নিয়েছিল বরিশাল। এবারের বিপিএলের মানদন্ডে সেই পারিশ্রমিকের অঙ্কটাও বেশ মোটা। গত দুই বিপিএলে যেভাবে পারফর্ম করেছেন তিনি, তাতে তাকে দলে নিতে এত আগ্রহ খুবই স্বাভাবিক।
তবে দলের সেই প্রত্যাশার প্রতিদান তিনি দিতে পারছিলেন না। একটি ম্যাচে শুধু ২৭ বলে ৪৮ করেছেন। আর কয়েকটি ইনিংসে ভালো শুরু করেছেন। কিন্তু উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারছিলেন না।
অবশেষে কোয়ালিফায়ার ম্যাচে দুর্দান্ত ইনিংস তিনি উপহার দিলেন। ম্যাচের পর সামাজিক মাধ্যমে জানালেন, গত কিছুদিনে একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি।
“সেদিন ‘Writer’s Block’ নামে একটি টার্মের সাথে পরিচিত হলাম। বিস্তারিত পড়াশোনা করে আমার মনে হচ্ছিল, আমিও যেন কোথাও একটা ব্লক খেয়ে আছি। পরিশ্রম করছি নিয়মিত, ধৈর্য্য ধরেছি, চেষ্টার কমতি নেই; কিন্তু রান হচ্ছিল না। বিশেষ করে গত দুই বিপিএলের পর আমার কাছে সবার প্রত্যাশা ছিলো আকাশচুম্বী।”
খারাপ সময়েও দলের অধিনায়ক থেকে শুরু করে সবাইকে যেভাবে পাশে পেয়েছেন, তাতে আপ্লুত জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান।
“রান না পাওয়ার আক্ষেপ আমার থেকেও আমি আমার ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে বেশী দেখেছি। তবে তার থেকে বেশী অনুপ্রেরণা দেখেছি আমার আশে-পাশের মানুষ গুলোর চোখে। তামিম ইকবাল ভাই, কাউকে বোঝাতে পারব না, আপনি অভিভাবক হিসেবে কতোটুকু যথার্থ।”
“এত প্রত্যাশা থাকার পরেও, পুরো টিমের সবাই প্রতিনিয়ত আমাকে বুঝিয়েছেন, সবই স্বাভাবিক, হৃদয় রানে ফিরবেই! কৃতজ্ঞতা আমার কোচিং স্টাফ, সকল খেলোয়াড়দের প্রতি। ফিজিও বায়েজিদ ভাই, (সহকারী কোচ) শাহীন ভাই, আপনারা দুজন বিশেষ আমার জন্য।”
এই ম্যাচে রানের ফেরার জন্য কতটা মরিয়া ছিলেন হৃদয়, সেটা বোঝা গেছে তার ব্যাটিংয়ে। এমনিতে শট খেলতে পছন্দ করলেও এ দিন বেশ সবধানী ছিলেন তিনি। নিশ্চিত না হয়ে বড় শট খেলেননি। ফিফটি করে বল লেগে যায় ৪৫টি। আরেকপ্রান্তে দাভিদ মালান দ্রুত রান করায় ও লক্ষ্য বেশি বড় না থাকায় চাপে পড়তে হয়নি হৃদয় ও বরিশালকে।
ফিফটির পরই যেন নির্ভার হয়ে যান। পরের ৩২ রান করেন স্রেফ ১১ বলে।
রানে ফেরার স্বস্তি পেয়ে ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান বললেন ভক্ত-সমর্থকদের কথাও।
“ক্রিকেটকে যারা ভালোবাসে, তারা আমাদেরও ভালোবাসে, জানি। ভালো খেললে তালি দেয়, আমরা খারাপ করলে তাদের ভেতরেও হতাশা কাজ করে। সত্যি বলতে, ভক্তদের এই পজিটিভ-নেগেটিভ ফিডব্যাক দুটোই হোক আমাদের শক্তি। ধন্যবাদ মহান রাব্বুল আলামিনকে, ধন্যবাদ ফরচুন বরিশালের সকল সদস্যকে, ধন্যবাদ আমাদের সকল সমর্থককে।”
টানা দ্বিতীয় শিরোপার আশায় শুক্রবার ফাইনালে লড়বে বরিশাল।