কোভিড: আরও ২১২ মৃত্যু, শনাক্ত ১৩৮৬২

দেশে গত এক দিনে আরও ১৩ হাজার ৮৬২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে ২১২ জনের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2021, 12:17 PM
Updated : 30 July 2021, 01:08 PM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ হাজার ৮৬২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে।

এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত হল ১২ লাখ ৪০ হাজার ১১৫ জন কোভিড রোগী; আর আক্রান্তদের মধ্যে মোট ২০ হাজার ৪৬৭ জনের মৃত্যু হল।

সরকারি হিসেবে এক দিনে সেরে উঠেছেন ১৩ হাজার ৯৭৫ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১০ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫ জন।

আগের দিন বুধবার সারা দেশে ১৫ হাজার ২৭১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়, এক দিনে মৃত্যু হয় ২৩৯ জনের। সেই হিসেবে এক দিনে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই কমেছে। তবে নমুনা পরীক্ষাও কমেছে প্রায় দশ হাজার।

গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৫ হাজার ৫৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে যা দিনের মোট আক্রান্তের ৩৬ শতাংশের বেশি।

আর এই সময়ে যে ২১২ জন মারা গেছেন, তাদের ৬৫ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৩ জন এবং খুলনা বিভাগে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা ১২ লাখ পেরিয়ে যায় এ বছর ২৮ জুলাই। সেদিনই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত ২৮ জুলাই তা ২০ হাজার ছাড়ায়। তার আগের দিন ২৭ জুলাই রেকর্ড ২৫৮ জনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিশ্বে শনাক্ত রোগী ইতোমধ্যে ১৯ কোটি ৬৭ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৪২ লাখ ১ হাজারের বেশি মানুষের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৪৫ হাজার ৪৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৭৭ লাখ ৯ হাজার ৯১৪টি নমুনা।

নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ,  যা আগের দিন ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ ছিল।

দেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

গত এক দিনে ঢাকা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩৯৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিভাগের ফরিদপুরে ১২৫ জন, গাজীপুরে ২৪৭ জন, গোপালগঞ্জে ১১৫ জন, কিশোরগঞ্জে ১৫৯ জন, মানিকগঞ্জে ১৯৬ জন, নরসিংদীতে ১৪৭ জন, নারায়ণগঞ্জে ২৬৫ জন এবং টাঙ্গাইল জেলায় ১৫২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ১৪৬৬ জন, কক্সবাজারে ২০২ জন, ফেনীতে ১৩৬ জন, নোয়াখালীতে ২৬০ জন, লক্ষ্মীপুরে ১৭৪ চাঁদপুরে ৪৯৮ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৭২ জন এবং কুমিল্লায় ৯৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী জেলায় ২২৯ জন, পাবনায় ১১৫ জন, সিরাজগঞ্জে ১৭০ জন এবং বগুড়ায় ১৩৯ জন নতুন রোগী পাওয়া গেছে গত এক দিনে।

খুলনা বিভাগের মধ্যে যশোরে ১৪২ জন, খুলনায় ১৬৬ জন এবং কুষ্টিয়ায় ১৪৭ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়।

অন্য বিভাগগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহে ৪৪৮ জন, নেত্রকোনায় ১১২ জন, বরিশালে ২৬৫ জন, পটুয়াখালীতে ১৭৮ জন, ভোলায় ১১৩ জন, সিলেটে ৩৮৬ জন, সুনামগঞ্জে ১৩০ জন, দিনাজপুরে ১৮০ জন, পঞ্চগড়ে ১০৫ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১২০ জন, দিনাজপুরে ১৩৮ জন, গাইবান্ধায় ১০৪ জন এবং রংপুরে ২৭২ রোগী শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

 

ঢাকা বিভাগে গত এক দিনে যে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৩৭ জনই ছিলেন ঢাকা জেলার। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া ৫৩ জন জনের মধ্যে ১৯ জন কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা ছিলেন।

এছাড়া খুলনা বিভঅগে ৩৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১১ জন, সিলেট বিভাগে ১৭ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে গত এক দিনে।

মৃত ২১২ জনের মধ্যে ১১৮ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৪৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।

তাদের মধ্যে ১১৯ জন ছিলেন পুরুষ, ৯৩ জন ছিলেন নারী। ১৫৪ জন সরকারি হাসপাতালে, ৪৮ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৯ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। একজনকে হাসপাতালে মৃত আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।