সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দাবি

আন্দোলনকারীরা জানান, তারা এরইমধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়ে দাবির কথা জানালেও কর্তৃপক্ষ সিন্ধান্তে অনড়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2022, 03:14 PM
Updated : 20 Nov 2022, 03:14 PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ২০২১ সালে এইচএসি উত্তীর্ণ একদল শিক্ষার্থী।

রোববার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান।

‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম চাই’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন শেষে শাহবাগ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে যান এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ২০২১ সালে এইচএসি উত্তীর্ণ হয়ে প্রথমবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাননি। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ থাকলে তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে।

শিক্ষার্থীরা তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য অতি দ্রুত দ্বিতীয়বার ভর্তি পরিক্ষার সুযোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। দাবি না মেনে নিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

২০১৪ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ বন্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছুরা তখন আন্দোলনও করেছিল।

কর্মসূচিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম চাই’ আন্দোলনের আহ্বায়ক আলভী মাহমুদ বলেন, “যে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বার ভর্তি পরিক্ষার সুযোগ নেই আমরা দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মারকলিপি পেশ করেছি।

তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঢাবি, রাবি, চবি, বুয়েট, চুয়েট, রুয়েটসহ আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মারকলিপি পেশ করেছি এবং দ্বিতীয় বার ভর্তি পরিক্ষা যৌক্তিক বলে অনেক যুক্তি তুলে ধরেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে অটুট। তারা আমাদের যুক্তি না শুনেই নিজেদের যুক্তিগুলো শুনিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে আমাদের।”

তিনি বলেন, “শিক্ষা কোনো ভিক্ষা নয়, শিক্ষা প্রত্যেক নাগরিকদের অধিকার এবং শিক্ষা সবার জন্য বাধাহীন হওয়া উচিৎ। শিক্ষার মধ্যে কোনো সীমাবদ্ধতা, বৈষম্য, শ্রেণীকরণ থাকতে পারবে না। প্রথম বার পরীক্ষার মাধ্যমে অনেক সমস্যার কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা সুযোগ পায় না, তাই বলে তারা মেধাশূন্য নয়।

“বলা হয়ে থাকে ‘একবার না পারিলে দেখ শতবার’, শতবারতো দূরের কথা আমরা দ্বিতীয় বারই সুযোগ পাই না, আমরা কীভাবে নিজেদের মেধা কাজে লাগাবো, যদি সুযোগই না দেয়।”

আন্দোলনের সদস্য সচিব মুহাম্মদ সানি বলেন, “এর আগে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সব জায়গায় স্মারকলিপি পেশ করেছি, কিন্তু ঢাবির বেলায় গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছি এবং অনেক হুমকি-ধামকির শিকার হয়েছি। এরপরেও আমরা থেমে থাকিনি, আমরা সর্বস্তরের মানুষের সাহায্য কামনা করছি।”

আন্দোলনের যুগ্মআহ্বায়ক ফতেহ কামাল বলেন, “শিক্ষার সুযোগ হওয়া উচিৎ অবারিত। তা না করে সেই সুযোগকে সংকীর্ণ করা হচ্ছে। দ্বিতীয়বার সুযোগও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, এটা আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানব না। এই সংকট দূর করতে হবে, না হলে যুদ্ধ হবে। দেশে রক্ত দিয়ে হলেও আমরা আমাদের অধিকার কেড়ে আনব। আমরাও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানি ১৯৭১ সালের শহীদদের মতো।”