রপ্তানি বাজারে ‘আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড’ হিসেবে অবদান রাখার প্রত্যয় হাতিলের

আন্তর্জাতিক আসবাব পণ্যের বাজারের প্রসার হচ্ছে বলে জানালেন হাতিলের চেয়ারম্যান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2022, 01:55 PM
Updated : 5 Dec 2022, 01:55 PM

আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে রপ্তানি বাজারে অবদান রাখার প্রত্যয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল হাতিল ফার্নিচার আয়োজিত এক ডিলারস কনফারেন্স (পরিবেশক সম্মেলন)।

সোমবার হাতিলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৩ ডিসেম্বর ‘লেট’স গ্রো টুগেদার’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজন করে হাতিল, যেখানে ১০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী যোগ দেন।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অংশগ্রহণকারীরা চলমান অর্থনৈতিক সংকটে বাংলাদেশের সার্বিক ব্যবসায়িক পরিস্থিতি এবং আসবাব ব্যবসার ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।

হাতিল মনে করে, প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে দেশের বাজারে আসবাব পণ্য সহজলভ্য করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও তা রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারবে।

কোভিড-১৯ মহামারীর পর দেশের ফার্নিচার শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং হাতিল-এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান বলেন, “২০২১ সালে গ্লোবাল ফার্নিচার মার্কেটের সাইজ ছিল প্রায় ৬৫০ বিলিয়ন ডলার। ২০২২ সালে এই মার্কেটর সাইজ ধারণা করা হয় প্রায় ৭০০ বিলিয়ন ডলার।

“গত কয়েক বছর বিশ্বজুড়ে ফার্নিচার ব্যবহারের ট্রেন্ড দেখলে বুঝা যায় যে প্রতিবছরই এই মার্কেট বড় হচ্ছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আমাদের ফার্নিচার রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১১০ মিলিয়ন ডলার। যদিও পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এটা ৩৯ শতাংশ বেশি, তারপরেও অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এই খাতের উন্নয়নের গতি আমাদের দেশে এখনও মন্থর।”

ফার্নিচার শিল্পখাতের বিপুল সম্ভবনা থাকলেও বিশ্ববাজারে তার প্রতিফলন তার সামান্য হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গড়ে না ওঠাকে মনে করেন।

সেলিম এইচ রহমান বলেন, “কোন ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প গড়ে না ওঠার কারণে আমাদের ফার্নিচার শিল্পে ব্যবহৃত বেশিরভাগ কাঁচামাল দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে গেলেই আমদানি-কর প্রযোজ্য হয়। একারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে চীন এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে আমাদের অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।”

হাতিলের চেয়ারম্যানের মতে, প্রতিযোগিতামূলক পণ্যের মূল্য বাজারে টিকে থাকতে এবং মার্কেট-শেয়ার বাড়াতে যদি আসবাবপত্র খাতকে রপ্তানির জন্য বন্ড সুবিধা দেওয়া এবং কাঁচামালের আমদানি শুল্ক ও লজিস্টিক খরচ কমানো হয়, তাহলে দেশের এই খাত চীন, ভিয়েতনামসহ অন্যান্য আসবাবপত্র উৎপাদনকারী দেশগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে থাকবে।

তিনি বলেন, “এই ধরনের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা ২০১৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আসবাবপত্র সরবরাহ করে আসছি। নতুন নতুন বাজার তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ, দুবাই, ভারত ও থাইল্যান্ডে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফার্নিচার মেলায় অংশগ্রহণ করছি। আমাদের যে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে, তা দিয়ে গুণগতমান বজায় রেখে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা মেটানো সম্ভব।”

মহামারীকালীন সংকট আর সাম্প্রতিক ইউক্রেইন-রাশিয়া বিরোধ কীভাবে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিকে চরমভাবে অস্থিতিশীল করে তুলেছে এবং আসবাব শিল্পের দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, সে বিষয়ে কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম পরিচালক মশিউর রহমান।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হাতিলের পরিচালক মাহফুজুর রহমান, মিজানুর রহমান ও সফিকুর রহমান।