এবার ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও নতুন অর্থবছরে পণ্য ও সেবা খাতে রপ্তানি বাড়িয়ে ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে বাংলাদেশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2021, 07:58 AM
Updated : 6 July 2021, 03:52 PM

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মঙ্গলবার প্রধান রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের এই লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, দেশের ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৪৩ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হবে এবং ৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের সেবা রপ্তানি হবে। এবারের রপ্তানিতে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে।

দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “গত বছর ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নাম দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে বিশেষ নীতি সহায়তা, রপ্তানিপণ্যের বৈচিত্র্যকরণে সরকারি নানা উদ্যোগ বিবেচনায় এ লক্ষ্যমাত্র ঠিক করা হয়েছে।”

চলমান মহামারীর মধ্যেও রপ্তানিমুখী খাতগুলো যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে তাতে এই লক্ষ্যমাত্রা ‘খুবই বাস্তব সম্মত এবং অর্জন করার মত’ বলে মন্তব্য করেন টিপু মুনশি।

গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানির এই অংক ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ পয়েন্ট কম হলেও মহামারীর মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর ইংগিত স্পষ্ট।

আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এবার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ।

২০১৯-২০২০ অর্থবছরের নয় মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর এপ্রিলে মহামারীর প্রথম ধাক্কা এসেছিল। অন্যদিকে সদ্যসমাপ্ত ২০২০-২০২১ অর্থবছর জুড়ে সংক্রমণের মধ্যে সময় পার করতে হয়েছে।

গেল অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য ছিল ৪ হাজার ১০০ কোটি  ডলারের এবং সেবা রপ্তানির লক্ষ্য ছিল ৭০০ কোটি ডলারের।

এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলার এবং সেবা খাতে ৬৬৩ কোটি ডলার আয় হয়েছে, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৯৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, গেল অর্থবছরে পোশাক খাতে রপ্তানিতে ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সেই বিবেচনায় এ খাত থেকে ৩ হাজার ৫১৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৯৫২ কোটি ডলার ধরা হয়েছে। তাতে প্রবৃদ্ধি হতে হবে ১৫ শতাংশ।

ওভেন পোশাক রপ্তানি করে ১ হাজার ৫৬৩ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্য ধরা রয়েছে। প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ।

এছাড়া ৫০ কোটি ডলারের মাছ, ১১০ কোটি ডলারের কৃষিজাত পণ্য, ১৪৩ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য, ১০০ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ৬৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের প্রকৌশলপণ্য, ১৩৭ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে এ অর্থবছরে।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ, ফিনিশ লেদার এক্মপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাইফুল ইসলাম এবং বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন।