‘কান্তজিউ মন্দিরের’ জমিতে মসজিদ 'নির্মাণের' উদ্যোগে ১৭ নাগরিকের উদ্বেগ

এ ধরনের ঘটনা প্রতিহত করতে প্রশাসন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিবৃতিদাতারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2024, 12:10 PM
Updated : 24 March 2024, 12:10 PM

দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দিরের জায়গায় মসজিদ 'নির্মাণের' উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৭ নাগরিক।

রোববার ওই বিবৃতিতে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ধরনের ঘটনা প্রতিহতে প্রশাসন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন- হাসান ইমাম, অনুপম সেন, সারওয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, আবেদ খান, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবীর, কেরামত মওলা, মিলনকান্তি দে, লাকী ইনাম, সারা যাকের, শিমূল ইউসুফ, গোলাম কুদ্দুছ।

দিনাজপুরের কাহারোলে ঐতিহ্যবাহী কান্তজিউ মন্দিরের জমিতে মসজিদ 'নির্মাণের' খবর সম্প্রতি একটি দৈনিকে প্রকাশিত হয়।

অভিযোগ উঠেছে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কান্তনগর গ্রামে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের জমিতে এই স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ১ মার্চ মসজিদ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়।

এ বিষয়ে রাজ দেবোত্তর এস্টেটের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর জেলা প্রশাসক কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কাজ বন্ধসহ তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ১৭ নাগরিকের বিবৃতিতে সুপ্রাচীন মন্দিরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে বলা হয়েছে, “কান্তজিউ মন্দির যে শিল্পীদের হাতে বিস্ময়কর চিত্রকলার সৃষ্টি হয়েছিল এবং যারা প্রকৌশলী ও শ্রমিক হিসেবে মন্দির নির্মাণ করেছিলেন তাদের সিংহভাগ মুসলিম সম্প্রদায়ের। মন্দিরের অনতিদূরে নয়াবাদে মন্দির নির্মাণ শ্রমিকদের নামাজের সুবিধার জন্য মহারাজা প্রাণনাথ রায়ের অর্থায়নে নয়াবাদ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। অনিন্দ্য সুন্দর সেই মসজিদও একটি পুরাকীর্তি। কান্তজিউ মন্দির নির্মাণকারী প্রকৌশলী ও শ্রমিকরাই এ মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।

“মন্দির ও মসজিদ নির্মাণ করেছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রকৌশলী ও শ্রমিকরা। সম্প্রীতির এমন নিদর্শন পৃথিবীতে বিরল। এই সম্প্রতির উদাহরণ বিশ্ব ইতিহাসে আমাদের দেশকে করেছিল মহান। সেই মহত্বের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ জাতি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে।”

বিবৃতিতে বলা হয়, “সভ্যতার এ অনুপম নিদর্শন বাংলাদেশের গৌরব। এ প্রন্ততাত্ত্বিক নিদর্শন মানব সভ্যতার স্মারক। এ গৌরবের স্মারক কোনোভাবেই হুমকির মুখে ফেলা যাবেনা।”