অমর একুশে বইমেলার শেষ শিশু প্রহরে সিসিমপুরের জনপ্রিয় চরিত্র হালুম, টুকটুকি, ইকরি ও শিকুদের সঙ্গে আনন্দে মেতেছে শিশুরা।
শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত শিশুদের ছোটাছুটি আর দুরন্তপনায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে শিশু চত্বর, ছন্দে-সুরে আর ছড়া-গানে মেতে ওঠে তারা। সিসিমপুরের চরিত্রগুলো শিক্ষণীয় নানা বিষয় মজার ছলে পরিবেশন করে।
মায়ের সঙ্গে বইমেলার সিসিমপুরের অনুষ্ঠান দেখতে বইমেলায় আসে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম। টুকটুকিকে তার অনেক ভালো লাগে।
“টুকটুকি অনেক কিছু জানে, কারণ সে বই পড়ে। টুকটুকির মতো আমি জ্ঞানী হতে হতে চাই, অনেক বড় হতে চাই।”
সাদিয়ার মা শারমিন সুলতানা বলেন, “ও টেলিভিশনে সিসিমপুর দেখেছে। বাস্তবে হালুম-টুকটুকিদের দেখতে তার অনেক ইচ্ছে ছিল। তাই আজকে এখানে নিয়ে আসলাম।
“আসলে বইমেলা শুধু বই কেনাই নয়, এটা একটা উৎসবও বটে। এই উৎসব শিশুদের সৃজনশীল চিন্তা করতে শেখায়। পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি করে।”
মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্থী নবনীতার পছন্দ ইকরিকে। কারণ হিসেবে সে জানায়, ইকরি প্রশ্ন করতে ভালোবাসে।
বাবার সঙ্গে বইমেলায় এসে সিসিমপুর অনুষ্ঠান উপভোগ করে লালবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শিক্ষার্থী আহনাফ ফাইয়াজ জানায়, হালুম ও শিকু তার অনেক পছন্দের। হালুম মাছ খেতে ভালোবাসে।
“মাছ খেলে বুদ্ধি বাড়ে। হালুম মাছ খায়, তাই তার অনেক শক্তি। আর শিকুকেও ভালো লাগে। কারণ শিকু অনেক চালাক।”
ফাইয়াজের বাবা রাশেদুল ইসলাম বলেন, বইমেলা শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়তা করে। তাই গত তিন বছর ধরে ছেলেকে বই মেলায় নিসে আসি।
“হালুম-শিকুরা আসলে প্রতীকীভাবে তাদের অনেক ইন্সপায়ার করে। এ ধরনের উদ্যোগ বইমেলায় আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।”
শিশু প্রহর শেষে বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশুদের বিভিন্ন স্টলে ঘুরে ঘুরে বই সংগ্রহ করতে দেখা যায়। বাবা মায়ের সঙ্গে বইমেলায় আসা রাজারবাগ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী কাজী হুজাইফা জানায়, সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টির লেখা বই ‘মেসি’ কিনেছে সে। মেসিকে তার অনেক ভালো লাগে। এবার বিশ্বকাপ দেখে সে মেসির ভক্ত হয়ে গেছে।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে এবারের অমর একুশে বইমেলা। দোকানিরা জানান, এবার বইমেলায় শিশুদের পছন্দের বইয়ের তালিকায় রূপকথার পাশাপাশি ভূতের গল্পের বই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। অপরদিকে বিজ্ঞান, সায়েন্স ফিকশন, থ্রিলার বইয়ে আগ্রহ বেশি কিশোরদের।
পঙ্খিরাজ প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রুহি আক্তার বলেন, এবার বই মেলায় প্রচুর পরিমাণ শিশু-কিশোরদের বই বিক্রি হয়েছে। বিশেষ করে ভূতের গল্প, রূপকথা, মজার গল্প, ঈশপের গল্প বেশি বিক্রি হয়েছে।
নলেজ মিডিয়া পাবলিকেশন্সের বিক্রয়কর্মী মামুন আহমেদ বলেন, ভূতের বই, ঈশপের গল্প, নলেজ ব্যাংক ও রূপকথার গল্প বেশি বিক্রি হচ্ছে।
“ষষ্ঠ শ্রেণির ওপরের ক্লাসের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ফিকশন, নলেজ ব্যাংক ও থ্রিলার বই কিনছে।”