নির্বাচনের সময় পুলিশ ইসির নির্দেশেই কাজ করবে: আইজিপি

টেকনাফের একরামুল হত্যা নিয়ে প্রশ্ন এলে কোনো উত্তর দেননি নতুন আইজিপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2022, 11:51 AM
Updated : 4 Oct 2022, 11:51 AM

পুলিশের মহাপরিদর্শকের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বললেন, নির্বাচনের সময় পুলিশ বাহিনী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনেই কাজ করে এবং ‘পরিস্থিতি বুঝে’ ব্যবস্থা নেয়।

মঙ্গলবার ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের ‘গ্রুপিং’, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং র‌্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়েও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাকে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা হলে সেটি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা কি হবে– সেই  প্রশ্ন জানতে চেয়েছিলেন একজন সাংবাদিক।

জবাবে আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “পুলিশের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ রয়েছে। আমরা নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকি এবং তাদের দেওয়া নির্দেশনা পালন করি। পরিস্থিতি অনুযায়ী পুলিশ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।"

র‌্যাব প্রধানের দায়িত্ব পালন করে আসা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন শুক্রবার পুলিশের নেতৃত্বে বেনজীর আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হন। সেদিন নানা আনুষ্ঠানিকতায় নতুন আইজিপিকে বরণ করে নেওয়ার পাশাপাশি বেনজীরকে বিদায় জানানো হয়। 

সদ্য দায়িত্ব নেওয়া আইজিপির প্রথম সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদে প্রশ্নে টেকনাফের একরামুল হত্যা বিষয়টি আবারও উঠে আসে।

বেনজীর আহমেদ তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের সঙ্গে কথিত বন্ধুকযুদ্ধে টেকনাফের পৌর কাউন্সিল একরামুল হক হত্যায় একাধিক তদন্তের কথা বলেছিলেন। সে কথা তুলে ধরে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, র‍্যাবের দায়িত্বে থাকার সময় আবদুল্লাহ আল-মামুন ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো তদন্ত করেছিলেন কি না।

সে প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে যান নতুন আইজিপি।২০১৮ সালের ২৬ মে মাদকবিরোধী অভিযানে র‍্যাবের সঙ্গে কথিত এক বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন কক্সবাজারের টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর, যুবলীগ নেতা একরামুল হক। তার মৃত্যুর সময়কার একটি অডিও প্রকাশ পেলে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অভিযোগ ওঠে, র‌্যাব পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। তখন র‌্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন বেনজীর আহমেদ।

র‍্যাব ‘সংস্কার’ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আইজি বলেন, “প্রতিষ্ঠান সব সময় সংস্কারের মধ্যে থাকে। সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান লাইভ জিনিস, প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। জঙ্গিবাদ বা সাইবার ক্রাইম দমন করতে হলে তাদের চেয়ে ভালো টেকনলোজি পুলিশকে সংগ্রহ করে তাদের মোকাবেলা করতে হবে। অপরাধের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তন সময় সময় করতে হবে। এটা চলমান প্রক্রিয়া।"

পুলিশ বাহিনীতে ‘গ্রুপিংয়ের’ অভিযোগ তুলে ধরে একজন সাংবাদিক আইজিপিকে বলেন, “গোপালগঞ্জ গ্রুপ, কিশোরগঞ্জ গ্রুপ, বরিশাল গ্রুপ ও ময়মনসিংহ গ্রুপসহ নানা গ্রুপের কথা আমরা শুনি। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করে। পুলিশের গ্রুপিং পুলিশের ক্ষতি করছে কি না এবং আপনি নজর দিবেন কি না।"

সংক্ষিপ্ত উত্তরে আইজিপি বলেন, “আমি এই গ্রুপিং সম্পর্কে জানি না, সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে খতিয়ে দেখব।"

তবে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনে আহবান জানান তিনি।

পুলিশ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তুলে ধরে আইজিপি দেশের প্রতিটি থানাকে ‘জনগণের ভরসাস্থলে’ পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রয়োজনীয় নিদর্শনা পোঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইজিপি।

Also Read: পুলিশের নেতৃত্ব বুঝে নিলেন আবদুল্লাহ আল-মামুন

সংবাদ সম্মলনে বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়েও প্রশ্ন আসে।

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “অভিযোগ আসার পর আমাদের কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে, আমরা যখন মামলা নিই সাংবাদিকদের প্রতি যে সংবেদনশীলতা, তাদের দায়িত্বপালনের সময় কোনো ঘটনা ঘটে, তাহলে এবিষয়ে আইনানুগভাবে আমার কাছ থেকে সহযোগিতা পাবেন।"

বিসিএস অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা আল-মামুন আগে সিআইডি প্রধানের পদে ছিলেন।গত বছরের ১৮ অক্টোবর গ্রেড-১ এ পদোন্নতি পান। চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করে আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে।