একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোন্তাজ আলী ব্যাপারী ওরফে মমতাজ তার সাত বছরের পলাতক জীবনের বেশির ভাগ সময়ে কাটিয়েছেন ছেলে ও জামাতার বাসায়।
মমতাজকে গ্রেপ্তারের পরদিন রোববার ঢাকার টিকাটুলিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন।
শনিবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার চন্দ্রায় বড় ছেলে শফিকুল ইসলামের বাসা থেকে মমতাজকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গাইবান্ধা সদরে অপহরণ, নির্যাতন, লুটপাট, হত্যা ও দেশত্যাগে বাধ্য করার মত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর মোন্তাজসহ পাঁচজনের ফাঁসির রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের তিন বছর আগে থেকেই পলাতক ছিলেন মমতাজ।
র্যাব-৩ অধিনায়ক মহিউদ্দিন বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০০৯ সালে মমতাজসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা হয় গাইবান্ধার আদালতে। পরে মামলাটি ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
“বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হলে মমতাজসহ অন্য আসামিরা ২০১৬ সাল পর্যন্ত জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর, আদালত আর জামিন না দেওয়ায় তখন থেকে মমতাজসহ অন্যরা আত্মগোপনে চলে যায়। এরপর থেকে মমতাজ আর কখনোই আদালতে হাজিরা দেননি।“
র্যাব কর্মকতা মহিউদ্দিন জানান, মামলার রায় হওয়ার পর পলাতক দুই আসামি আব্দুল জব্বার ও রঞ্জু মিয়া মারা যান। অন্য দুই আসামি জাছিজার রহমান ও আবদুর ওয়াহেদ মণ্ডলকে আগেই র্যাব গ্রেপ্তার করে।
“ট্রাইব্যুনালে মামলার শুনানিতে হাজিরা না দেওয়ায় মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এরপর নিজের বাড়ি ছেড়ে তিনি জামাতার বাড়িতে আত্মগোপন যান। সেখান থেকে প্রায়ই গাজীপুরে তার ছেলে শফিকুল ইসলামের ভাড়া বাসায় আসা যাওয়া করতেন।“
গত বছরের শেষ দিক থেকে এই যুদ্ধাপরাধী গাজীপুরে ছেলের বাসায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বলেন “গোপন সংবাদ পেয়ে ছেলের বাসা থেকে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি।“