বায়ান্ন বছরে ‘২০ হাজার’ মৃত্যু: নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবি

নদীপথে চলাচলে নিরাপত্তায় জোর দিতে ‘নোঙর ট্রাস্ট’ নামে একটি সংগঠন এই দাবি জানিয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2023, 12:26 PM
Updated : 23 May 2023, 12:26 PM

প্রায় দুই দশক আগে একই দিনে তিনটি নৌযান দুর্ঘটনায় কয়েকশ মানুষের প্রাণ যায়; ২০০৪ সালের ২৩ মের সেই ঘটনার স্মরণ এবং নিরাপদ নৌযান চলাচল নিশ্চিত করতে দিনটিকে নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ‘নোঙর ট্রাস্ট’ নামে একটি সংগঠন।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নদী আমাদের মা’ শীর্ষক আলোচনা সভার লিখিত বক্তব্যে এই দাবি তোলেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান সুমন শামস।

তিনি বলেন, দেশের ৪৩ শতাংশ নৌ-দুর্ঘটনা অন্য নৌযানের সঙ্গে ধাক্কায়, ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের কারণে এবং ২৩ শতাংশ দুর্ঘটনা বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঘটে।

দিনটিকে ‘নৌ-নিরাপত্তা দিবস’ ঘোষণার দাবি তুলে সুমন বলেন, দেশের নৌপথে গত ৫২ বছরে নানা দুর্ঘটনায় প্রায় ২০ হাজার যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

২০০৪ সালের ২৩ মে মাদারীপুর থেকে ঢাকায় আসার পথে চাঁদপুরে ঝড়ের কবলে পড়ে ‘এমভি লাইটিং সান’ লঞ্চ। ওই রাতেই এমভি দিগন্ত ও এমএল মজলিশপুর নামে আরও দুটি লঞ্চ দুর্ঘটনায় কবলে পড়লে কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়।

এমভি লাইটিং সান দুর্ঘটনার সুমনের মা আছিয়া খাতুনও নিহত হন।সেই স্মৃতি স্মরণ করে সুমন শামস বলেন, “দেশ, মানুষ, নদী ও প্রকৃতির স্বার্থে এই ধারা অব্যাহত রাখতে দেশের নদীপথে নিহত সবার স্মৃতি স্মরণে ২৩ মে ‘জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণা’সহ দেশের সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চাঁদপুরে মেঘনা নদীর মোহনায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হোক।”

তিনি বলেন, নৌ-দুর্ঘটনা এখন নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয় বরং অনেকাংশে এটা দুর্যোগের পর্যায়ে চলে গেছে। নৌপথে এমন বিশৃঙ্খলা চলতে থাকলে নৌ-দুর্ঘটনা পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে অনেক বেড়ে যেতে পারে।

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির আরও কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। যাত্রীবাহী বড় জাহাজ বা জলযানে জীবন রক্ষাকারী ছোট নৌকাসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ আছে কিনা যাত্রার আগেই তা পরীক্ষা করা, দুর্ঘটনার কবল থেকে উদ্ধারের উপায় সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়ার দাবি রয়েছে এর মধ্যে।

লঞ্চে বা ফেরিতে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার সরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞতার কারণে তা অব্যবহৃত থেকে যায় মন্তব্য করে সুমন বলেন, “অতিরিক্ত যাত্রী বহন কঠোরভাবে দমন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের নিজেদেরকেও সচেতন হতে হবে।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “২০০৪ সালের ২৩ মে যে নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছিল আমি সেটাকে দুর্ঘট্না বলব না, এটা ছিল হত্যাকাণ্ড; আর এর জন্য দায়ী তখনকার সরকার।

“একটি দিবস ঘোষণা করলেই হয়ে যায় না। এখানে অনেক প্রক্রিয়া আছে। তবে সরকার নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ প্রতিবছর পালন করে আসছে।”

বিআইডব্লিটিএ চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।