ছাড়পত্রের পর ভবনে নজরদারি না থাকা নিয়ে প্রশ্ন চুন্নুর

“প্রত্যেকটা এলাকায় রাজউকের কর্মকর্তা থাকেন। সেই কর্মকর্তারা কোথায়?,” জিজ্ঞাসা তার।

ঢাকার বেইলি রোডে আগুনে হতাহতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, মৃত্যুর এমন ঘটনায় সরকারের জবাবদিহি করা দরকার। দায়-দায়িত্ব নিয়ে সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

শনিবার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, দেশের জনগণ কর দেয় সরকার পরিচালনার জন্য। সরকারের দায়িত্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের ছয়টি সংস্থার ছাড়পত্র লাগে, ছাড়পত্র দেওয়ার পরে ভবনগুলোর নজরদারি নেই।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের একটি বহুতল ভবনে আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। ঢাকা মেডিকেল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে যাদের চিকিৎসা চলছে, তাদের অবস্থাও শঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

ভয়াবহ এ মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দেশজুড়ে। বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত ভবনটিতে আগুন লাগার পর সেখানে থাকা ব্যক্তিরা নিরাপদে বের হতে না পারার দায় কার তা নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে।

এদিন বৈঠকের শুরুতে বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় সংসদে শোক প্রকাশ করা হয়। স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুর ওই ঘটনায় গভীর শোক এবং নিহতের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

পরে অনির্ধারিত আলোচনায় আগুনে মৃত্যুর ঘটনা সংসদে তুলে ধরে মুজিবুল হক বলেন, “প্রত্যেকটা এলাকায় রাজউকের কর্মকর্তা থাকেন। সেই কর্মকর্তারা কোথায়?  এক একটা ভবন তৈরি করা হয় একটা উদ্দেশে, কিন্তু যায় আরেকটা উদ্দেশ্যে। এই যে মানুষগুলো মারা গেল জবাব দেবে কে? এর দায়-দায়িত্ব সরকারের, সরকারের সংস্থা, সরকারের অফিসের।”

তিনি বলেন, এক একটা সময় একটা ঘটনা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় তদন্ত করা হবে, তদন্ত টিম করা হয়। কিন্তু এরপর কোনো ফলোআপ নেই। এইভাবে দেশ চলতে পারে না। সরকারের জবাবদিহি করার দরকার। দায়-দায়িত্ব নিয়ে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

ধানমণ্ডির সাত মসজিদ এলাকায় একটা ভবনে ১৫টি রেস্তোরাঁ থাকার তথ্য তুলে ধরে চুন্নু বলেন, সেগুলোর কোনো অনুমতি নেই। ধানমণ্ডির ২৭ নম্বর রোডের রাস্তার পাশে ভবনে কয়েকশ রেস্টুরেন্ট কিন্তু সেগুলোর অনুমতি নেই। খিলগাঁওয়ের তালতলায় বহুতল ভবনে একই অবস্থা। আরও এরকম ঘটনা ঘটবে।

“যদি সরকার এ বিষয়ে সচেতন না হয়। সরকারকে বলব দায়দায়িত্ব নিয়ে এগুলোর জন্য কারা কারা দায়ী, সেটা রাজউক হোক, ফায়ার বিগ্রেড হোক, পরিবেশ হোক, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার ব্যবস্থা করেন।”

আরও পড়ুন:

বেইলি রোডে বহুতল ভবনে আগুনে অন্তত ৪৪ মৃত্যু

গ্রিন কোজি কটেজে আগুন চুলা বা গ্যাস লিকেজ থেকে: ফায়ার সার্ভিস

আনন্দ আয়োজনের রাত এক লহমার আগুনে যেন মৃত্যুপুরী