ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি এই মন্তব্য করেন।
Published : 31 Jul 2024, 10:14 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় জড়িত বিশৃঙ্খলাকারীরা শ্রীলঙ্কার মত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “এটা কোনো সাধারণ আন্দোলন ছিল না। এটা একপর্যায়ে প্রায় সন্ত্রাসী আক্রমণের মত হয়ে যায়।”
ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সাক্ষাতের বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান।
সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেছেন, “তারা (বিশৃঙ্খলাকারী) তো আসলে শ্রীলঙ্কা টাইপের সহিংসতা এবং সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করেছে।”
সহিংসতায় জীবন ও সম্পদহানির কথা দুঃখের সঙ্গে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। এ সময় ভারতের হাই কমিশনার এসব ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন।
ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ হওয়া এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম আগের অবস্থায় ফিরে আসাকে স্বাগত জানান প্রণয় ভার্মা।
ভারতের হাই কমিশনার বলেন, "ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারত সব সময় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের ভিশন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিকে সমর্থন করে।"
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফর প্রসঙ্গে প্রণয় ভার্মা বলেন, "প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ‘সফল’ সফর অর্থবহ ফলাফল অর্জন করেছে, যা অতীতের অর্জনকে সুসংহত করেছে এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার একটা ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করেছে।”
হাই কমিশনার বলেন, "দুই দেশের যে জাতীয় ডেভেলপমেন্ট ভিশন, বাংলাদেশের ২০৪১ এবং ভারতের ২০৪৭ এর ভিত্তিতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সহযোগিতার একটা নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। ডিজিটাল ও গ্রিন অংশীদারিত্ব, স্যাটেলাইটের যৌথ উন্নয়ন, ব্লু-ইকোনোমি, ওশানোগ্রাফি, ফিনটেকসহ নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা হবে।”
আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “চার দেশের (বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, নেপাল ও ভুটান) মধ্যে কানেক্টিটিভিটি জোরালো করার জন্য আমার সব দরজা খোলা।”
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ১৫ জুলাই সহিংস হয়ে ওঠে। ১৬ থেকে ২১ জুলাই ঢাকাসহ সারা দেশে সহিংসতা আন্দোলন চলতে থাকে।
এই পাঁচ দিনের সংঘাতে সরকারের হিসাবে ১৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে, যদিও গণমাধ্যমে দুই শতাধিক মৃত্যুর কথা উঠে আসছে।
আওয়ামী লীগ সরকার কোটা আন্দোলনে সহিংসতা ও প্রাণহানির বিষয়ে বলছে, সরকারের পতন ঘটানোর জন্যই বিএনপি-জামায়াত এসব করেছে। তবে দল দুটি তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এসব ঘটনায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্তের দাবি উঠেছে। বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তদন্তের জন্য জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
এর আগে জার্মানির রাষ্ট্রদূত সাক্ষাতে এলে আন্দোলনে সহিংসতা ও প্রাণহানির তদন্তে জার্মান তথপ্রযুক্তির সহযোগিতা চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।