হালদায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2015, 02:12 PM
Updated : 20 April 2015, 02:40 PM

সোমবার ভোরে রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলা সংলগ্ন নদীর বিস্তীর্ণ অংশে মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়ে।

এরপরই ডিম সংগ্রহের জন্য নৌকা আর জাল নিয়ে নদীর বিভিন্ন অংশে অবস্থান নিয়েছেন হালদা পাড়ের জেলেরা।

প্রতিবছরই এপ্রিল-মে মাসে বজ্রসহ বৃষ্টি হলে ডিম দেয় মা মাছ। ডিম ছাড়ার আগে নদীর বিভিন্ন অংশে নমুনা ডিম ছাড়ে কার্প জাতীয় মাছ।

রাউজান উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে নমুনা ডিম পাওয়া গেছে। জেলেরা নদীতে অবস্থান করছে।

“জোয়ার শুরু হয়েছে। জোয়ারের সময় যদি বৃষ্টি হয় তাহলে মা মাছ ডিম ছাড়তেও পারে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এপ্রিলের শুরু থেকেই নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকার চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

নদীর মদুনাঘাট অংশে ডিম সংগ্রহকারী মো. হারিছ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত পরশু ভারি বৃষ্টি হয়। নদীতে আজ পানির গতিও বেশি। সকাল থেকে কিছু ডিম সংগ্রহ করেছি।”

আরেক ডিম সংগ্রহকারী আশু বড়ুয়া বলেন, “পাঁচটি নৌকা নিয়ে সকাল থেকে প্রায় এক কেজি ডিম সংগ্রহ করেছি। আমরা বৃষ্টির অপেক্ষায় আছি।”

হালদা নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাহাড়ে গত কয়দিন বৃষ্টি হওয়াতে নদীতে পানির পরিমাণ ও গতি বেড়েছে। নমুনা ডিম পাওয়া গেছে গড়দুয়ারা থেকে মাদার্শা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায়।

“বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পূর্ণিমা-অমাবস্যা তিথিতে পাহাড়ি ঢলের পানির সঙ্গে বজ্রসহ প্রবল বর্ষণ হলে এবং নদীর পানির তাপমাত্রা অনুকূলে থাকলেই মা মাছ ডিম দেয়। এখন সবাই বৃষ্টির অপেক্ষায় আছে।”

চট্টগ্রামের রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার প্রায় ৯৮ কিলোমিটার ‍দীর্ঘ এলাকা জুড়ে আছে হালদা নদী। ২০১৪ সালের ১২ মে হালদায় ডিম ছেড়েছিল মা মাছ।

চোরা শিকারির তৎপরতায় নদীতে মা মাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় প্রতিবছরই হালদায় ডিম উৎপাদনের পরিমাণ কমছে।

সরকারি হিসাবে, ২০১২ সালে নদী থেকে সংগৃহীত ডিমে রেণু হয়েছিল প্রায় এক হাজার ছয়শ কেজি। ২০১৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৬২৪ কেজি এবং গত বছর আরও কমে তা হয় মাত্র পাঁচশ কেজি।