‘৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থান ছিল বঙ্গবন্ধু খুনীদের বিরুদ্ধে’

৭ নভেম্বরকে ‘সিপাহী-জনতা অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালনকারী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, অভ্যুত্থান ছিল বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিরুদ্ধে। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2013, 12:13 PM
Updated : 15 Nov 2013, 01:23 PM

রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৭ নভেম্বর ও নুর হোসেন দিবস: সর্বদলীয় সরকার গঠনে বিরোধী দলের ভূমিকা, জন দুর্ভোগের হরতাল, আগামী দিনের সংসদ’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।

বক্তব্যের শুরুতে ৭ নভেম্বরের প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি বলেন, “দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে সেদিন সিপাহী-জনতা অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিলো যার নায়ক ছিলেন কর্ণেল তাহের। মুলত বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিরুদ্ধে এবং সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে এ অভ্যুত্থান ঘটানো হয়।”

“পরে জিয়াউর রহমান কর্ণেল তাহের ও হাজার হাজার সৈনিককে হত্যার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেন। তিনি এ দেশে যুদ্ধাপরাধীদের পুর্ণবাসন করেন।”

এর আগে একই অনুষ্ঠানে ৭ নভেম্বর সম্বন্ধে বক্তব্য দেন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তার বক্তব্যেও ছিলো ৭ নভেম্বর প্রসঙ্গ। কামরুলের বক্তব্যের সময় ইনু মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন না।

কামরুল বলেন, “মূলত সেনাবাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধা শূন্য করতেই এ ঘটনা ঘটানো হয় যাতে পরে অভ্যুত্থান আখ্যা দেয়া হয়। এ ঘটনায় জিয়া ক্ষমতায় এসে আরো কয়েকশ দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যকে বিনা বিচারে হত্যা করেন।”

বক্তব্য শেষ করে কামরুল সভা ত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরে সভায় উপস্থিত হন তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর টালমাটাল পরিস্থিতির এক পর্যায়ে ঢাকা সেনানিবাসে বন্দি তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর মুক্ত হন। সেদিন নিহত হন খালেদ মোশাররফসহ অনেক সেনা কর্মকর্তা।

৭ নভেম্বরের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন জিয়া, হন দেশের প্রথম সামরিক আইন প্রশাসক।
 

এরপর থেকে দিনটিকে বিএনপি ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’, আওয়ামী লীগ ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান’ দিবস হিসেবে দিনটি পালন করে আসছে।
 

’৭৫ এর নভেম্বরের ঘটনাপ্রবাহের ধারাবাহিকতায় ৭ নভেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সঙ্গে যুক্ত মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের পাল্টা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে সেনাপ্রধান জিয়াকে মুক্ত করেন, যাতে যুক্ত ছিলেন জাসদের নেতা-কর্মীরাও।

জাসদ দিনটিকে ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করে। পরে তাহেরকে সামরিক আদালতে ‘বিচার’ করে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। আদালত এ ঘটনাকে হত্যাকান্ড অভিহিত করে জেনারেল জিয়াকে এজন্য দায়ী করেন।

সেনা শৃংখলা ফিরিয়ে আনার কথা বলে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে একটি অভ্যুত্থান হয়। ওই সময়ের উপ-সেনাপ্রধান জিয়াকে আটক করা হয়।

৭ নভেম্বরই মুক্তিযোদ্ধা খালেদ মোশাররফ ও মেজর হায়দারসহ অনেকে নিহত হন। আওয়ামী লীগ দিনটিকে পালন করে ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস’ হিসেবে।