মধুমতির প্লট ক্রেতাদের দ্বিগুণ অর্থ ফেরতের নির্দেশ

অবৈধ ঘোষিত মধুমতি মডেল টাউনের ক্রেতাদের প্লটের দামের দ্বিগুণ অর্থ ফেরত দিতে বলেছে আপিল বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2013, 11:54 AM
Updated : 11 July 2013, 11:54 AM

জলাধার ভরাট ও পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি মামলার বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায়ে সুপ্রিম কোর্ট এই আদেশ দেয়।  

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ গত বছর অগাস্টে এই রায় দিলেও রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

রায়ে সাভারের আমিন বাজারে মধুমতি মডেল টাউন আবাসিক প্রকল্পের কার্যক্রম অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণার পাশাপাশি বলা হয়, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ১০০ বিঘার বেশি জমি রাখতে পারবে না। বেশি হলে সরকার তা বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।

এই মামলার মূল রায় লেখেন বিচারপতি এসকে সিনহা ও বিচার সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, মোহাম্মদ ইমান আলী ও বিচারপতি মো. শামসুল হুদা রায়ের বিষয়ে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে একমত পোষণ করায় তার মতামতই আদালতের মূল রায় হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিলামালিয়া ও বেইলারপুর মৌজায় মধুমতি মডেল টাউন এলাকার জলাভূমি ছয় মাসের মধ্যে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ওই প্রকল্পের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেট্রো মেকার্সকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মেট্রো মেকার্স তা না করলে রাজউককে এই দায়িত্ব নিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে সেক্ষেত্রেও খরচ মেটাতে হবে মেট্রো মেকার্সকেই।

রায়ে বলা হয়, “ছয় মাসের মধ্যে নিবন্ধন খরচসহ ক্রেতাদের প্রদেয় টাকার দ্বিগুন পরিশোধ করতে মেট্রো মেকার্সকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।”

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা একটি রিট আবেদনে ২০০৫ সালের ২৭ জুলাই হাই কোর্ট সাভারের আমিনবাজারে মধুমতি মডেল টাউন প্রকল্পকে অবৈধ ঘোষণা করে। তবে প্লট ক্রেতাদের স্বার্থ যাতে রক্ষা হয়, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।

ওইদিন মেট্রো মেকার্সের দায়ের করা আরেকটি রিট আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত।

২০০৪ সালের ১৪ অগাস্ট দায়ের করা বেলার ওই রিট আবদনে আমিন বাজারের অদূরে বন্যার পানি প্রবাহ এলাকা ভরাট করে বাস্তবায়ন করা ওই প্রকল্পের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। প্রকল্পটিতে রাজউকের অনুমোদন নেই বলেও রিটে বলা হয়।

মধুমতি মডেল টাউন প্রকল্পের মূল প্রতিষ্ঠান মেট্রো মেকার্স অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেড ও প্লটক্রেতারা হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে। রিটকারী বেলাও রায়ের একটি অংশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায়।

পরিবেশ আইনবীদ সমিতির আইনজীবী ইকবাল কবির লিটন বলেন, “এই রায়ের ফলে সাভারের আমিনবাজারে বন্যাপ্রবাহ এলাকা রক্ষা পাবে ও ঢাকার জলাবদ্ধতা হ্রাস হবে। আবাসন কোম্পানিগুলো অননুমোদিত আবাসন প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনায়ও নিরুৎসাহিত হবে।”

তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায় অনুসারে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ১০০ বিঘার বেশি জমি রাখতে পারবে না।