শহীদ মিনারের পাশে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে সাধারণ একটি কবর ঘিরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা মাজারের স্থাপনা আদালতের আদেশে ভেঙে দিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2012, 00:57 AM
Updated : 25 Feb 2012, 00:57 AM
ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে সাধারণ একটি কবর ঘিরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা মাজারের স্থাপনা আদালতের আদেশে ভেঙে দিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিনের নেতৃত্বে শনিবার সকাল থেকে এই অবৈধ স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু হয়। গণপূর্ত বিভাগ, ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও বিপুল সংখ্যক পুলিশ এ সময় সেখানে উপিস্থত ছিলেন।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুনের এক রিট আবেদনে গত বুধবার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শহীদ মিনারের পাশের অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। তবে কবরটি ঠিক রাখাতে বলা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাজারের কিছু স্থাপনা ভাঙা হয়েছে। তবে কবর ও পাশের মসজিদ অক্ষত রাখা হয়েছে। এই অভিযানের বিষয়ে হাইকোর্টকে অবহিত করা হবে।”
সরেজমিনে দেখা যায়, মাজারের পিছনের (নার্সিং হোস্টেলের সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন) দুটি বাথরুম, এর একটু দূরে একটি রান্নাঘর কাম স্টোর রুম, পশ্চিম পাশে মাজারের খাদেম ও মসজিদের ইমামের থাকার ঘর, মাজারের সামনের মূল ফটক, ওজুখানা ও পানির ট্যাংকসহ ছোটখাট কয়েকটি স্থাপনা ভাঙা হয়েছে।
শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নির্বিঘেœই এই অভিযান চলেছে। কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি।
মাজারের ভক্ত আব্দুল মান্নান বলেন, “হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে। এ কারণে ভাঙার কাজ চলছে। মূল মাজার বা মসজিদ ভাঙা হয়নি।”
শহীদ মিনারের পেছনে অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠার কথা উল্লেখ করে গত ২০ ফেব্রুয়ারি কালের কণ্ঠে ‘বেড়ে উঠছে কথিত মাজার, হুমকিতে শহীদ মিনার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে মুনতাসির মামুন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
ঢাকা মেডিকেলের সাবেক শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনে বলা হয়, “এখানে কখনো কোনো মাজার ছিল না। ছিল সাধারণ একটা কবর। তারা এ-ও জানান, কবরটি মেডিকেল কলেজের কোনো এক চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর। পরে সেই কবরটি নব্বইয়ের দশকে এবং ২০০০ সালের দিকে ধীরে ধীরে মাজার বানিয়ে নিয়েছে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী।”
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, “কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জন্য আশপাশের যে চার একর জমি বরাদ্দ আছে, সেখান থেকেই দখল দেওয়া হয়েছে ওই ২০ কাঠা। ইতিমধ্যে দখলকৃত জায়গায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন স্থাপনা। মাজার ব্যবসায়ীরা এখন কথিত পীরের কবরের ওপর গম্বুজ ও কবরের পাশে কমপ্লেক্স নির্মাণের পাঁয়তারা করছে। ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতি স্মারক ও বাঙালি চেতনার প্রতীক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/সিএস/জেকে/১২৫০ ঘ.