রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতায় বাংলাদেশের অবস্থান মধ্যম পর্যায়ে: টিআইবি

রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান মধ্যম পর্যায়ের। রোববার মহাখালীস্থ ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ ট্র্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) উপস্থাপিত 'বাংলাদেশে রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতা' বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2009, 07:51 AM
Updated : 25 Oct 2009, 07:51 AM
ঢাকা, অক্টোবর ২৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)--- রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান মধ্যম পর্যায়ের।
রোববার মহাখালীস্থ ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ ট্র্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) উপস্থাপিত 'বাংলাদেশে রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতা' বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
পাশাপাশি টিআইবি আয়োজিত 'রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতা : চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশীশক্তির প্রভাব রয়েছে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক অর্থায়নে স্বচ্ছতা আনতে দলগুলোকে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ দেওয়ার কোনও বিকল্প নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের আয় ও ব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদনে তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা প্রশ্নসাপেক্ষ। বাস্তবে রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীরা আইনে অনুমোদিত সর্বোচ্চ ব্যয়সীমার ওপরে ব্যয় করে, কিন্তু তারা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ব্যয়ের বিবরণী জমা দেয়।
এতে আরো বলা হয়, আইন অমান্য করার জন্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বিধান থাকার পরও নির্বাচন কমিশন দল এবং প্রার্থীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে না। বড় বড় আর্থিক অনুদান ব্যক্তিগত পর্যায়ে দলের উচ্চ পর্যায়ে হয়ে থাকে, এবং দলের হিসাবরক্ষণ বইতে তা অন্তর্ভুক্ত হয় না।
রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দলগুলোকে তহবিল দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা বলেন, "রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামী সংলাপে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। মনে রাখতে হবে, দলগুলো নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ চায় না। কিন্তু সরকার অর্থায়ন করলে দলের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ইসির অধীনে থাকবে।"
নির্বাচনী ব্যয়ের অর্থ সরকার দিলে তাতে দলগুলো রাজি হবে কিনা সংশয় প্রকাশ করে সিইসি বলেন, "দলের অডিট রিপোর্ট দিতেই দলগুলো আপত্তি তোলে, বলে ইসি নিয়ন্ত্রণ করছে। এখন স্টেট ফান্ডিং-এর বিষয়ে তারা ডিজায়ার করে কিনা!"
তবে আগামী নির্বাচনে দলের প্রজেকশন মিটিং, পোস্টারিং ও দলীয় বিতর্কে অর্থায়নের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সিইসি।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দল, ভোট পাওয়ার হার কিংবা অন্য কিছু বিবেচনায় রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে আনুপাতিক হারে নির্বাচনী ব্যয় সরকারের কোষাগার থেকে দেওয়ার সুযোগ রাখা যেতে পারে। এ বিষয়ে দলগুলোর মতামত বিবেচনা করে প্রস্তাব তৈরি করা হবে। নিবন্ধিত দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারের ব্যয় মেটাতে প্রায় একশ' কোটি টাকা খরচ হতে পারে।
"বিধি-নিষেধের তেমন প্রয়োগ নেই" মন্তব্য করে টিআইবি প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কয়েকজন প্রার্থীর মনোনয়ন অনুমোদন করেনি। পরবর্তীতে তাদের অধিকাংশই উচ্চ আদালত থেকে তাদের পক্ষে রায় নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। যথাসময়ে নির্বাচনী ব্যয়ের বিবরণী জমা দেননি এমন প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন এখনও প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
সিইসি আইন বাস্তবায়নের প্রসঙ্গে বলেন, "বোঝাপড়ার মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কৌশল রয়েছে আমাদের। আইন বাস্তবায়নে সদিচ্ছারও কোনও অভাব নেই"।
টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম. হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এর পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন রাশেদা বেগম হীরা এমপি, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা, সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মন্ডল, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাংবাদিক মুহম্মদ জাহাঙ্গীর, জাসদের আসম আব্দুর রব, আইয়ুব আলী খাঁ, এনজিও নিজেরা করি'র খুশি কবির ও ব্রতী'র শারমিন মুরশিদ প্রমুখ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/এসকে/২০৩৯ঘ.