বৃহস্পতিবার বিআরটিএ পরিচালক (প্রকৌশল) শীতাংশু শেখর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হয়।
শীতাংশু শেখর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই ১৩ রুটে জন প্রতি ভাড়া ১০ টাকা বেড়েছে। ধরুন, আগে ঢাকা থেকে বরিশাল ফেরি পারাপার বাসে ৪০২ টাকা ছিল, সেটা এখন হয়েছে ৪১২ টাকা।
“আর পদ্মাসেতুর জন্য যে অ্যাপ্রোচ রোডটা হয়েছে এর জন্য ভাড়া আরেকটু বাড়বে।”
কত বাড়তে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুর জন্য করা অ্যাপ্রোচ রোডের ভাড়া নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি হলে জন প্রতি আরও ১২টাকা বৃদ্ধি পাবে।”
বর্তমানে বাসে প্রতি কিলোমিটারের জন্য জনপ্রতি ভাড়া এক টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করা আছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আরামদায়ক চলাচলের জন্য বাসে ৫১ আসনের স্থানে চালক ব্যতীয় ৪০ আসন ধরে এ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঢাকা-ভাঙ্গা-মাদারীপুর-বরিশাল রুটে চলাচলকারী বাসে একজন যাত্রীর ভাড়া হবে ৪১২ টাকা ৩২ পয়সা। ঢাকা-রাজৈর-গোপালগঞ্জ রুটের বাসে ভাড়া দাঁড়াবে ৫০৪ টাকা ২১ পয়সা।
আর ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা রুটের বাসে প্রতি যাত্রীর ভাড়া ৬৪৯ টাকা ৩৬ পয়সা, ঢাকা-জাজিরা-শরীয়তপুর রুটে ২১৮ টাকা ৫৩ পয়সা, ঢাকা-বরিশাল-পিরোজপুর রুটে ৫৩৪ টাকা ২০ পয়সা, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-পিরোজপুর-বাগেরহাট রুটে ৬২৮ টাকা ২৫ পয়সা, ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী রুটে ৫০১ টাকা ৫২ পয়সা।
একই ভাবে ঢাকা-ভাঙ্গা-মাদারীপুর রুটের বাস ভাড়া ৩২৭ টাকা ৫০ পয়সা, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা-সাতক্ষীরা রুটে ৬৩৩ টাকা ৫ পয়সা, ঢাকা-ভাঙ্গা-ফরিদপুর রুটে ২৮৮ টাকা ৩৯ পয়সা, ঢাকা-মাদারীপুর-বরিশাল-ভোলা-চর ফ্যাশন রুটে ৬৫৩ টাকা ৮৬ পয়সা, ঢাকা-বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু-শরীয়তপুরের ভাড়া ২১৯ টাকা ৮৮ পয়সা এবং ঢাকা-মাদারীপুর-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা রুটে যাত্রীপ্রতি বাস ভাড়া দিতে হবে ৬৯৪ টাকা ২৯ পয়সা।
প্রতিটি রুটের জন্য বাসের ঢাকা স্টেশন ধরা হয়েছে সায়েদাবাদ। এই ভাড়ার ক্ষেত্রে ঢাকাকে শুরুর প্রান্ত এবং গন্তব্যকে শেষ প্রান্ত ধরে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানায় বিআরটিএ।
পদ্মা নদীর বুকে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর কাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা।
এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে বসে প্রথম স্প্যান। মাঝে ২২টি খুঁটির নিচে নরম মাটি পাওয়া গেলে নকশা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। তাতে বাড়তি সময় লেগে যায় প্রায় এক বছর।
করোনাভাইরাস মহামারী আর বন্যার মধ্যেও কাজের গতি কমে যায়। সব বাধা পেরিয়ে অক্টোবরে বসানো হয় ৩২তম স্প্যান। এরপর বাকি স্প্যানগুলো বসানো হয়ে যায় অল্প সময়ের মধ্যেই। ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় পূর্ণ আকৃতি পায় স্বপ্নের সেতু, যুক্ত হয় পদ্মার দুই পাড়।
দেশের বৃহৎ এই অবকাঠামো আগামী ২৫ জুন সকাল ১০টায় উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও খবর