সোমবার দুপুরে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পহেলা ফ্রেবুয়ারি থেকেই বইমেলা শুরু করার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। মেলার স্টল তৈরির কাজ চলছে।
“প্রকাশক ও বিক্রেতারাও স্টলের জন্য টাকা জমা দেওয়া শুরু করেছেন। এই প্রক্রিয়া শেষ হলে কয়েকদিনের মধ্যেই লটারির মাধ্যমে প্রকাশকদের স্টল ও প্যাভিলিয়ন বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, গত বারের মতোই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল আয়তন জুড়ে মেলা অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সেখানে স্টল তৈরির কাজ চলছে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারী কারণে গত বছর অমর একুশে বইমেলা দেড় মাস পিছিয়ে ১৮ মার্চ থেকে শুরু হয় এবং নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগে ১২ এপ্রিল তা শেষ হয়ে যায়। মহামারী পরিস্থিতি বিচেনায় গতবার ভিড় এড়াতে স্টলের সামনে ফাঁকা জায়গা রেখে প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুটের বিশাল বিস্তৃতি পেয়েছিল, যা ২০২০ সালের প্রায় দ্বিগুণ ছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য রমনার ইঞ্জিনিয়ারিং ইস্টিটিউটের সামনে দিয়ে নতুন করে একটি প্রবেশ ও প্রস্থান পথ রাখা হয়েছিল।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিধিনিষেধ আরোপের কথা বলা হচ্ছে সরকারের তরেফ থেকে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গতবারের মতো বৃহৎ এলাকা নিয়ে নিয়ে বইমেলা করতে চায় বাংলা একাডেমি।
বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকেই বইমেলা শুরু প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত আমরা আশা করছি বইমেলা হবে।”
১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেইটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন মুক্তধারা প্রকাশনীর মালিক চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৭ সালে তার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেন।
১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। পরের বছর মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি।
১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা আর করা যায়নি। পরের বছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সূচনা হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’র। মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের মাস ফেব্রুয়ারিজুড়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের এই বইমেলা এখন বাঙালির মননের মেলায় পরিণত হয়েছে।