আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতে ‘বাধা নেই’

নির্ধারিত তারিখে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতে বাধা নেই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2021, 05:18 PM
Updated : 26 Nov 2021, 07:03 AM

এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ স্থগিতের যে আদেশ হাই কোর্ট দিয়েছিল, রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান মঙ্গলবার তা স্থগিত করে দিয়েছে।

ফলে আগামী ২৮ নভেম্বর এ ইউনিয়নে নির্বাচনে ভোট হতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিট আবেদনকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন ফকির।

আউশকান্দি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দ্বিঘর ব্রাক্ষণগ্রামটি জারের সীমান্তবর্তী খলিলপুর ইউনিয়ন যুক্ত করতে ওই গ্রামের পাঁচ জন ভোটার স্থানীয় সরকার সচিবের দপ্তরে আবেদন করেছিলেন। সে সময় খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও তার ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণ আবেদন করেন।

এদিকে আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষেদের চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুন দ্বিঘর ব্রাক্ষণগ্রামটি খলিলপুর ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য আবেদন করেন।

আবেদন করার পরও সীমানা নির্ধারণে উদ্যোগ না নেওয়ায় হাই কোর্টে রিট করেন ও পাঁচ ভোটার।

সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট রুল জারি করে। সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিবাদীদের নিষ্ক্রীয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

সেই সঙ্গে স্থানীয় সরকার সচিবের দপ্তরে পাঁচ ভোটারের আবেদন ১৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয় হাই কোর্টের আদেশে।

এর মধ্যে গত ১৪ অক্টোবর নবীগঞ্জ উপজেলার নির্বাচনী কর্মকর্তা আউশকান্দি উইনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিলে এ ইউনিয়নের তারিখ রাখা হয় ২৮ নভেম্বর।

তফসিল ঘোষণার পরই ওই ওই পাঁচ ভোটারের রিটে পক্ষভুক্ত হয়ে হাই কোর্ট সম্পূরক আবেদনে করেন আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুন।

হাই কোর্ট ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৩ নভেম্বর হাই কোর্ট নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেয়।

অথচ এই মহিবুর রহমান হারুনই আউশকান্দি উইনিয়ন পরিষদের সীমানা দ্বিঘর ব্রাক্ষণগ্রামটি খলিলপুর ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য স্থানীয় সরকার সচিবের দপ্তরে আবেদন করেছিলেন।  

এদিকে সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত তিন পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জের ডিসি বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেন নবীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)।

তদন্ত করে এই কর্মকর্তা প্রতিবেদন দিয়ে জানান, সীমানা নির্ধারণের প্রয়োজন নেই। দ্বিঘর ব্রাক্ষণগ্রামের ভোটাররা খলিলপুর ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হতে চান না।

এই তদন্ত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে রষ্ট্রপক্ষ। সে আবেদনের শুনানির পর হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করলেন চেম্বার বিচারপতি।

আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. দিলাওর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই আউশকান্দি ইউনিয়নের নির্বাচন বানচাল করতে একটা ষড়যন্ত্র চলছিল। বর্তমান চেয়ারম্যান চেষ্টা করেছেন ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণ করার জন্য। পরে হাই কোর্টে গিয়ে নির্বাচন স্থগিত চেয়েছেন।

ইউনিয়নবাসীর ভোটাধিকার ‘হরণ করতে সীমানা নির্ধারণের ভুয়া দাবি’ তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী।

তিনি বলেন, “যে পঁচজন ভোটার সীমানা নির্ধারণ করতে আবেদন করেছেন, তারাও বর্তমান চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুনের সৃষ্টি। স্বাক্ষর জাল করে দরখাস্ত সাজিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ওই ৫ ব্যক্তি গত ২০ ও ২১ এপ্রিল হলফনামা করে বলেছেন, তারা এ আবেদন করেননি।”  

এ অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে বর্তমান চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুনকে ফোন করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।

স্বাধীনতার আগেই আউশকান্দি ইউনিয়ন হবিগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ইউনিয়নটি মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় ভোট দেওয়ার সুবিধার জন্য প্রতি নির্বাচনে দ্বিঘর ব্রাহ্মণগ্রামে আলাদা একটি ভোটকেন্দ্রও হয় বলে দিলাওর হোসেন জানান।