ডিজেলের বাড়তি দাম ও ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির

জ্বালানি তেলের বাড়তি মূল্য ও পরিবহন ধর্মঘট দুটোই প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2021, 09:52 AM
Updated : 6 Nov 2021, 09:52 AM

সংগঠনটি বলছে, করোনাভাইরাস মহামারীর বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা সচল রাখার স্বার্থে জ্বালানির ‘অযৌক্তিক’ বাড়তি দাম এবং পরিবহন ধর্মঘট দুটোই প্রত্যাহার করা উচিত।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরই) এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তোলা হয় বলে সমিতির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সরকার বৃহস্পতিবার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পর শুক্রবার থেকে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সংগঠনগুলো।

তারা পরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুলেছে। তাদের দাবির মুখে রোববার বিআরটিএ বৈঠক ডেকেছে। তাতে পরিবহন ভাড়া বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “লকডাউনসহ নানা কারণে দেশের ৭৭ ভাগ মানুষের আয় কমেছে। মানুষজন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই জ্বালানি তেলের দাম একলাফে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহন, খাদ্যপণ্য ও কৃষিজ উৎপাদনসহ সামগ্রিক ব্যয় আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। পণ্য ও সেবামূল্য আরো একদফা বৃদ্ধির ফলে চরমভাবে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। এতে নতুন করে আরও কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্রের ঝুঁকিতে পরার শঙ্কা রয়েছে।”

তেলের দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় সরকার উচ্চহারে তেল বিক্রি করে গত ছয় বছরে ধরে একচেটিয়া মুনাফা করেছে। এতে সরকার প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। মাত্র পাঁচ মাস ধরে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারনে দেশের মানুষের এই কঠিন দুঃসময়ে একলাফে ২৩ শতাংশ তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

“ছয় লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে জ্বালানি খাতে মূল্য না বাড়িয়েও ৬ হাজার কোটি টাকা বছরে ভর্তুকি দেওয়ার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে।”

পাশাপাশি পরিবহন ধর্মঘটের নামে ‘নৈরাজ্য’ চলছে মন্তব্য করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

সংগঠনের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যে প্রক্রিয়ায় দাম বাড়ানো হয়েছে, তা অবৈধ। জ্বালানির দাম বাড়ানোর ক্ষমতা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নেই, এটা করার ক্ষমতা বিইআরসির। সেখানে শুনানির পরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ম।

“সরকার গায়ের জোরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের নেতা কর্মীদের বিরাট অংশের আয় বৃদ্ধিকে সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি মনে করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক এবং প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।