বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এমসিকিউ ও লিখিত অংশে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় সিয়াম ৯৭ দশমিক ৭৫ নম্বর পান। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে দুটাতে জিপিএ-৫ থাকায় ফলাফলে ২০ নম্বরসহ মোট ১১৭ দশমিক ৭৫ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন তিনি।
সিয়ামের পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। মহামারীর মধ্যে এবার ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরেও পরীক্ষা নিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত ১ নভেম্বর দেড় ঘণ্টায় ১০০ নম্বরের পরীক্ষার মধ্যে ৬০ নম্বর এমসিকিউ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।
‘ক’ ইউনিটে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ আসিফ করিম ১১২ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় এবং খুলনা পাবলিক কলেজ থেকে আসা নিত্য আনন্দ বিশ্বাস ১১১ দশমিক ৯৫ নম্বর পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
মোট ৯৪ হাজার ৫০৯ জন পরীক্ষা দিয়ে এমসিকিউ ও লিখিত অংশে সমন্বিতভাবে ১০ হাজার ১৬৫ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয় এ পরীক্ষায়।
শেষ পর্যন্ত ১ হাজার ৮১৫ জন মেধাক্রম অনুযায়ী বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
১২০ নম্বরের মধ্যে ১১৭ দশমিক ৭৫ পাওয়াকে ‘রেকর্ড’ বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মিহিল লাল সাহা।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৯৭ দশমিক ৭৫ পাওয়া পাওয়া খুবই এক্সেপশনাল। কারণ সেখানে ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষাও ছিল। তাছাড়া যে দ্বিতীয় হয়েছে, তার থেকে ৫ নম্বর বেশি পেয়েছে যে প্রথম হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণত মেধাক্রমের স্কোরগুলো কাছাকাছি হয়। সুতরাং এটাকে রেকর্ড বলা যায়।”
এর আগে মঙ্গলবার প্রকাশিত কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে ১০০ দশমিক ৫০ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন ঢাকার ডেমরার দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী মো. জাকারিয়া।
‘ক’ ইউনিটে সিয়াম ‘খ’ ইউনিটের জাকারিয়ার তুলনায় ১৭.২৫ নম্বর বেশি পেয়েছেন।
ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনের প্রতিক্রিয়ায় সিয়াম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরীক্ষা ভালো দিয়েছি, কিন্তু ফার্স্ট হব, এটা আশা করিনি। বাবা-মা এবং স্যারদের দিক-নির্দেশনায় এতদূর আসতে পেরেছি।”
নিজের এই ফল ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য অনুসরণীয় হতে পারে বলে মনে করেন সিয়াম।
“অনেকে বলেন, যারা ঢাকায় পড়ালেখা করেছে বা ঢাকায় কোচিং করেছে, তারা ফার্স্ট-সেকেন্ড হয়। এতে আমাদের মধ্যে একটা হীনমন্যতা কাজ করে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেখাতে পারলাম যে, বগুড়া থেকেও আমরা ভালো করতে পারি, ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করার যোগ্যতা রাখি।”
ভর্তি পরীক্ষার জন্য পাঠ্যবইকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলে জানান সিয়াম।
তিনি বলেন, “আমি সব সময়েই পাঠ্যবইকে গুরুত্ব দিয়েছি। কোভিডের কারণে ঢাকায় গিয়েও কোচিং করার সুযোগ হয়নি। যা করার অনলাইনে কোচিং করেছি। আমি মেডিকেলের পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রিপারেশন নিয়েছিলাম। ভার্সিটির প্রিপারেশনটা আসলে ওখান থেকেই নেওয়া।”
গত এপ্রিলে প্রকাশিত মেডিকেলের সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ২৮২ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে ৫৯তম হয়েছেন সিয়াম। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগও পেয়েছেন তিনি।
এর আগে মার্চে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ভর্তি পরীক্ষায়ও প্রথম হন সিয়াম।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা দিয়েছেন সিয়াম।
আগামী ৬ নভেম্বর বুয়েটের মূল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেলে সেখানেই ভর্তি হবেন বলে জানান সিয়াম।