ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী রোববার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে এই ‘শোকজ’ নোটিশ দেন বলে ওই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি পিপি আজাদ রহমান জানিয়েছেন।
এদিন মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য তারিখ ধার্য ছিল। তিনজন সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে আদালত থেকে সমন পাঠানো হয়। এর মধ্যে মশিউর রহমান নামে এক সাক্ষী আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেন। অন্য দুই সাক্ষী হাজির হননি।
অ্যাডভোকেট আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই সাক্ষীকে হাজির করতে না পারার কারণে আদালত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির কাছে, কেন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হয়নি সে (শো-কজ) ব্যাখ্যা চেয়েছেন।”
আগামী ১৮ অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ঠিক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পিপি বলেন, “ওই দিন সাক্ষীদের আদালতে হাজির করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে আদালত।”
সাক্ষীদের কেন হাজির করা যায়নি, সে বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির কোনো বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার এই মামলায় বরখাস্ত সরকারি চিকিৎসক সাবরিনা চৌধুরী, তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীসহ ৯ জন আসামি।
অন্য আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা। আসামিরা সবাই কারাগারে রয়েছেন।
এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছিল ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ার। জেকেজির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবরিনা, তার স্বামী আরিফুল ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ির কেয়ারটেকার কামাল হোসেনের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গতবছর ২২ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে তাদের কম্পিউটার থেকে চারজন প্রবাসীরসহ ৪৩ জনের নামে তৈরি করা করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া যায়।
পরদিন কামাল হোসেন বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করেন ওই দুজনের বিরুদ্ধে। সরকারি নাম ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ, কাজে অবহেলার মাধ্যমে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রামণ বিস্তারের ঝুঁকি তৈরি, করোনাভাইরাসের সনদ জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয় সেখানে।
হুমায়ুন ও তার স্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে তেজগাঁও থানা পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুল চৌধুরী, তার বোন জেবুন্নেছাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ১২ জুলাই জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ভঙ্গ করায় সাবরিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী গত ৫ আগস্ট এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করলে তার ভিত্তিতে গত বছর ২০ অগাস্ট অভিযোগ গঠন করা হয়।