গাদাগাদি করে কোর্টে তোলার বিকল্প ভাবতে বলল হাই কোর্ট

কঠোর লকডাউনের মধ্যে বাইরে বের হওয়ার কারণে যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, সংক্রমণ ঝুঁকি বিবেচনায় তাদের গাদাগাদি করে আদালতে হাজির করার বদলে বিকল্প কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা ভাবতে বলেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2021, 10:48 AM
Updated : 7 July 2021, 10:48 AM

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে তিনি আদালতকে জানাবেন।

এ সংক্রান্ত এক আবেদনে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক হাই কোর্ট বেঞ্চের ভার্চুয়াল শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এই আশ্বাস দেন।

লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করে বাইরে বের হয়ে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কোর্ট হাজতে না নিয়ে থানায় রেখে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন।

তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. জোবায়দুর রহমান, আল রেজা মো. আমির এবং মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন।

আবেদনকারী আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন বলেন, লকডাউনে প্রতিদিন শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হচ্ছেন। গত ছয়দিনে ৩ হাজার ৬৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের প্রিজনভ্যানে গাদাগাদি করে কোর্ট হাজতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

“সেখানে শত শত মানুষ একসাথে গারদের মধ্যে অবস্থান করছেন। পরস্পরের শরীরের সাথে শরীর এবং নিঃশ্বাসের সাথে নিঃশ্বাস মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। বাইরে আত্মীয়-স্বজনরাও ভিড় করছেন। ফলে সেখানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।”

তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বলেন, গ্রেপ্তারদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার আইনি বাধ্যবাধকতা আছে পুলিশের।

জবাবে আসাদ উদ্দিন বলেন, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতেও সেটি করা সম্ভব।

এ পর্যায়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শুনতে চান।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন পরে ভার্চুয়াল আদালতে যুক্ত হলে এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তা জানতে চান বিচারক।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তিনি পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে আদালতকে জানাবেন।

তখন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, “চিন্তাটা ভালো। একসাথে এত মানুষকে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে যাওয়া ও কোর্ট হাজতে রাখায় সংক্রমণের পরিবেশ তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে বিকল্প পদ্ধতিতে এ সংক্রমণের পরিবেশ এড়িয়ে কিছু করতে পারলেই ভাল।”

আবেদনকারী আইনজীবী আসাদ উদ্দিন আদালতে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৪ ধারা পড়ে শুনিয়ে বলেন, এ ধারার বিধান অনুযায়ী গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে আদালতে উপস্থাপনের বাধ্যবাধকতা পূরণে ভার্চুয়াল উপস্থিতিই যথেষ্ট।

বিচারক তখন বলেন, “সরকারতো ভালো বুঝেই আইন করেছে। কিন্তু এর বাস্তবায়নে যে জনশক্তি ও লজিস্টিক সাপোর্ট লাগবে তার ব্যবস্থা সহসাই করা কঠিন।

“আপনি অ্যাটর্নি জেনারেল ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের সাথে আলাপ করেন, চিন্তা শেয়ার করেন। দেখেন কী করা যায়। অবশ্যই বিষয়টির গুরুত্ব আছে।”