বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষেই আগামী নভেম্বরে মাসে দু’দিন ব্যাপী বিশ্ব শান্তি সম্মেলন আয়োজন করবে বাংলাদেশ। এসময় বঙ্গবন্ধু শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, “প্রগতিশীল ও বুদ্ধিজীবীসহ সারা পৃথিবীতে যারা শান্তির জন্য কাজ করছে, তাদেরকে নিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। এ সম্মেলনে বিশ্ব শান্তি ও মানবতার অগ্রদূত বঙ্গবন্ধুর ওপর আলোচনার আয়োজন করা হবে।”
মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে বাংলাদেশ শান্তির মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারা পৃথিবীতে শান্তির বাণী পৌঁছে দিচ্ছে এবং তা হচ্ছে 'শান্তির সংস্কৃতি'।
“জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশ শান্তির সংস্কৃতির প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে। একে অন্যের প্রতি হিংসা বিদ্বেষের কারণে দেশে দেশে হানাহানি হচ্ছে। হিংসা-বিদ্বেষ দূর করতে পারলে আমরা পৃথিবীতে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।”
বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী ম্যারি কুরি ও পিয়েরে কুরি দম্পতি বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে যে অবদান রেখেছেন, তা চিরস্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে, মানবতার কল্যাণে, শান্তির সপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য বরণীয় ব্যক্তি ও সংগঠনকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক দিয়ে আসছে।
ফিদেল কাস্ত্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভেদর আইয়েন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং, লিওনিদ ব্রেজনেভসহ বহু বিশ্ব নেতা এই পদকে ভূষিত হন।
পুরস্কারটির প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, জুলিও কুরি পুরস্কার প্রাপ্তিতে বঙ্গবন্ধু যেমন সম্মানিত হয়েছেন, বাঙালি জাতিও তেমনি সম্মানিত হয়েছে।
আলাচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “বঙ্গবন্ধু না থাকলেও তার মহান আদর্শ, তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। প্রধানমন্ত্রী মানুষের মুক্তি ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।”
অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাংবাদিক ও কলামনিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু।
আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। জুলিও কুরি পুরস্কার গ্রহণকালে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা পাঠ করেন রাষ্ট্রাচার প্রধান আমানুল হক।