স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার অংশ হিসাবে শনিবার এই পরিদর্শনের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভাসানচরে সরকারের নেওয়া ব্যাপক উন্নয়ন ও মানবিক কার্যক্রম কূটনীতিকদের দেখানো ছিল এই পরিদর্শনের উদ্দেশ্য।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে একলাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে ওই সময় এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ বলেছিল, “এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ার প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে, অথবা শরণার্থীদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। স্থানান্তরের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জাতিসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।”
এর পাল্টায় বাংলাদেশ সরকার বলেছিল, “এই পর্যায়ে এসে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একমাত্র বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে এবং কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত হওয়া, সেটাই সমস্যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান।
স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরুর সাড়ে তিন মাস গড়ানোর পর ১৭ মার্চ প্রথমবারের মতো ভাসানচর পরিদর্শনে যায় জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধিদল। এর মধ্যে সরকারও ছয় দফায় ১৮ হাজার ৩৩৪ জন রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করেছে।
জাতিসংঘ দলের পরিদর্শনের দুই সপ্তাহের মাথায় শনিবার ১০ বিদেশি দূতকে ভাসানচরে নিয়ে যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই দুদলের বাইরে কেবল ওআইসির সহকারী মহাসচিবের নেতৃত্বে সংস্থার একটি প্রতিনিধিদল ভাসানচর পরিদর্শনে গিয়েছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিদর্শনে গিয়ে বিদেশি দূতেরা বাঁধ, ভবন, আশ্রয়কেন্দ্রসহ ভাসানচর দ্বীপের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ঘুরে দেখেছেন। একইসঙ্গে তারা ঘুরে দেখেন সেলাই ও হাতের কাজের মতো রোহিঙ্গাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিভিন্ন উদ্যোগও।
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানবিক সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি নিজেদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের ফেরার কথা এ সময় ব্যক্ত করেছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।
”আমি চাই আমার সন্তানেরা তাদের নিজ দেশে নিজের জাতীয় পরিচয় নিয়ে বেড়ে উঠুক”, এ সময় বলেন এক রোহিঙ্গা প্রতিনিধি।
ভাসানচরে নির্মিত উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষাকেন্দ্রে খুদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও সময় কাটান বিদেশি দূতেরা।