বন্দি মুশতাকের মৃত্যুর দায় এড়াবার নয়: মানবাধিকার কমিশন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে বন্দি অবস্থায় মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2021, 04:53 PM
Updated : 28 Feb 2021, 05:09 PM

শনিবার সংবাদ মাধ্যমে কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদের স্বাক্ষরে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই মন্তব্য করা হয়।

মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে মানবাধিকার কমিশন ‘তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে’ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গত বছরের মে মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তার (মুশতাক আহমেদ) বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র‌্যাব।”

‘অনাকাঙ্ক্ষিত যে কোনো মৃত্যু সংবিধান ও মানবাধিকারের পরিপন্থী’ উল্লেখ করে এতে বলা হয়, “কারাবন্দি অবস্থায় মৃত্যুর দায় রাষ্ট্র বা তার অধীনস্থ কোনো সংস্থা কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবসায়ী-অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করে কমিশনকে জানাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কাছে কমিশন থেকে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে মুশতাকের মৃত্যু তদন্তে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি শিকদারকে আহ্বায়ক ও উপসচিব আরিফ আহমেদকে সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুরের কারাগারে মৃত্যু হয় ৫৩ বছর বয়সী মুশতাকের।

তবে কীভাবে তার মৃত্যু হল, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য না আসায় সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে।

শুক্রবার সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে মুশতাকের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গাজীপুর সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে কারা কর্তৃপক্ষ।

পেশায় ব্যবসায়ী মুশতাক অনলাইনে লেখালেখিতে বেশ সক্রিয় ছিলেন। গত বছর তার সঙ্গে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তা সংগঠনের দিদারুল ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাবি।

মামলায় ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’ অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।

তদন্ত শেষে পুলিশ মুশতাক, কিশোর ও দিদারকে আসামি করে এ মাসের শুরুতে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

জামিন পেতে এক বছরে কিশোর ও মুশতাকের আবেদন আদালতে নাকচ হয় কয়েক দফা।