ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর কাছ থেকে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ওই টিকা গ্রহণের আয়োজনে একথা বলেন তিনি।
“এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করেছেন, তারই একটি পরিচয় বহন করে।”
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইট উপহারের এই টিকার চালান নিয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
তিনি বলেন, “অনেকগুলো উন্নত দেশ এখনও ভ্যাকসিন পায় নাই, ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করে নাই। গুটি কয়েক উন্নত দেশ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছে। আর আমরা প্রথমসারির দেশ হিসাবে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করব। শুরুতে ভ্যাকসিন পাওয়ার কারণে আমরা ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।”
অনুষ্ঠানে ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ ভারতের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক সহযোগিতার অংশ হিসাবে এই টিকা উপহার বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, “ভারত সরকার আমাদের যেভাবে সাহায্য করেছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে, সেভাবে আজকে তারা মহামারীর সময়েও আমাদের সাহায্য করল ভ্যাকসিন দিয়ে।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর যে বন্ধুত্ব, দুই রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব, দুই রাষ্ট্রের জনগণের যে বন্ধুত্ব, যে সহানুভূতি-সহমর্মিতা- তার প্রমাণ রাখল এই ভ্যাকসিন প্রদানের মাধ্যমে। আমরা যে কোনো দুর্যোগ একসঙ্গে মোকাবেলা করব।”
বাংলাদেশ সরকারিভাবেও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কিনছে, যার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা ২৫ জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
“আমি ভারত সরকারকে অনুরোধ করব, এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটাও যেন উনারা দেখেন। যাতে আমরা ভ্যাকসিনটি পাই, সময়মতো।”
সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, “আগামী ৬ মাসে ৫০ লাখ করে ভ্যাকসিন আসার কথা। এই মাসে আরও ৫০ লাখ ভ্যাকসিন আসবে। যদি আমরা পেয়ে যাই, তাহলে ৭০ লাখ ভ্যাকসিন আমাদের হাতে থাকবে। ৩৫ লাখ লোককে এই ভ্যাকসিন আমরা দিতে পারব।”
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার ‘সাফল্য অর্জন করেছে’ দাবি করে এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ব্লুমবার্গের হিসাবে দক্ষিণ এশিয়াতে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ এক নম্বরে এবং বিশ্বের মধ্যে ২০ নম্বরে রয়েছে। আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তৃণমূলের সব স্বাস্থ্যকর্মীকে ধন্যবাদ জানাই।”
সামনের দিনে এই ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
“যাতে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রও একই সময়ে জনগণের ইমিউনিটি নিশ্চিত করতে পারে।”
তিনি বলেন, “প্রতিবেশী প্রথমে নীতির অংশ হিসেবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রতি ভারত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।
“কোভিশিল্ডের ২০ লাখ ডোজ উপহার আসলে ভারতের প্রতিবেশী কোনও দেশকে দেওয়া সবচেয়ে বড় পরিমাণ।”
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হাই কমিশন জানিয়েছে, উপহার হিসাবে দেওয়ার জন্য ভারত সরকার এসব টিকা তার নিজস্ব কোটা থেকে কিনেছে।