রাষ্ট্রপতি হামিদের জন্মদিন শুক্রবার

নতুন বছরের প্রথম দিন জীবনের ৭৭ বছর পূর্ণ করলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বঙ্গভবন প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2020, 06:03 PM
Updated : 1 Jan 2021, 03:28 AM

প্রতিবছর জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতিকে শুভেচ্ছা জানাতেন, তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার কোনো আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য রাষ্ট্রপতির জন্মদিন উপলক্ষে কোনো আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে না।”

শুক্রবার জন্মদিনে নিজের পরিবারের সদস্য, বিশেষ করে নাতি-নাতনিদের সাথেই সময় কাটাবেন রাষ্ট্রপতি।

১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৫৯ সালে, ছাত্রলীগে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। এরপর স্বাধীন দেশে আরও ছয়বার তিনি সংসদে নিজের এলাকার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন।

আবদুল হামিদ জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন দুই দফা। ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর বঙ্গভবনের বাসিন্দা হন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৩ সালে আবদুল হামিদকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।

রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্বে ধরাবাঁধা নিয়মের ছকে থেকেও বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্বভাবসুলভ হাস্যরসের মধ্যে দিয়ে তিনি পৌঁছে গেছেন মানুষের খুব কাছে।

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকা আবদুল হামিদ বিভিন্ন সময়ে ঠাট্টাচ্ছলে বঙ্গভবনকে তুলনা করেছেন জেলখানার সঙ্গে।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “খাঁচার পাখিরে যত ভালো খাবারই দেয়া হোক না কেন, সে তো আর বনের পাখি না। আমি একটা দায়িত্ব হিসেবে এখানে এসেছি। সংসদে মনের খোরাক পেতাম, বঙ্গভবনে পাই না। ইচ্ছা করলেই অনেক কিছুই করতে পারি না।”

প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়ার পর এক অনুষ্ঠানে বঙ্গভবনের পরিবেশ নিয়ে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেছিলেন, “জিয়াউর রহমানের আমলে জেলে ছিলাম। এখনও জেলে আছি। পার্থক্য আগে স্যালুট দিত না, এখন দেয়।”

‘মিতব্যয়ী’ আবদুল হামিদ প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর চিকিৎসার জন্য বাইরে গিয়ে নিজের এবং সফরসঙ্গীদের খরচ কমিয়ে সংবাদের শিরোনামে আসেন।

২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিল এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “বিদেশ সফরে হোটেলের ভাড়া কমিয়েছি। সিঙ্গাপুরে আমার হোটেলের ভাড়া ছিল ৬ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার। সেটা কমিয়ে ৬০০ ডলারে এনেছি। স্পিকার থাকার সময় একা যেতাম। এখনতো আর সে উপায় নেই। সফরসঙ্গীদের হোটেল ভাড়াও অর্ধেক করেছি।”

আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রথমবার শপথ নেন। পরের দফায় ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শপথ নেন তিনি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে ১৯ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৬ জন রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই হিসাবে আবদুল হামিদ এই পদে সপ্তদশ ব্যক্তি।

ব্যক্তিগত জীবনে আবদুল হামিদ তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক।