মামলায় নিশিতার সঙ্গে তার বাবা এএসএম শহিদুল্লাহ মজুমদার, মা রাশেদা শহীদ এবং ছোট ভাই সায়মান শহীদ নিশাতকে আসামি করা হয়েছে।
আসিফের বাবা শহিদুল ইসলাম খান বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কলাবাগান থানার ওসিকে অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
বাদীপক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন ও সাবেক সভাপতি কাজী নজিবুল্লাহ হিরু শুনানি করেন।
পরে আইনজীবী ইকবাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদকে হত্যার পর বারান্দা থেকে ফেলে দেওয়া হয়, যদিও আসামিরা এটিকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চেয়েছিল।
“আসিফ ইমতিয়াজের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কথায় বাদী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছিলেন। কিন্তু পরে পারিপার্শ্বিক ঘটনা, সুরতহাল প্রতিবেদন ও আসামিদের আচরণে বাদী বুঝতে পেরেছেন আসিফ লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেননি বরং তাকে হত্যা করে উপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তাই দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় নিহত আসিফের বাবা বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেছেন। আদালত কলাবাগান থানাকে এই মামলার অভিযোগটিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তা নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।”
৩৩ বছর বয়সী আসিফ গত শুক্রবার ভোরে (১১ সেপ্টেম্বর) কাঁঠালবাগানের ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে শ্বশুরবাড়ির নবমতলার বারান্দা থেকে ‘লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন’ বলে তার স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল পুলিশ।
ব্যারিস্টার আসিফের বাবা শহিদুল ইসলাম খান সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-কামারখন্দ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। পরিবার নিয়ে ঢাকার মিরপুরে থাকেন তিনি।
ঘটনার ১৫ দিন আগে আসিফ বাবার মিরপুরের বাসা থেকে কাঁঠালবাগানের শ্বশুরবাড়িতে উঠেছিলেন বলে তার মৃত্যুর পর কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র জানিয়েছিলেন।
সে সময় তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আসিফের বাবা-মা প্রথমে বিয়ে মেনে না নিলেও পরে মেনে নেয়। তবে আসিফের স্ত্রী অধিকাংশ সময় বাবার বাড়িতেই থাকতেন।”
ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র বলেছিলেন, “আসিফের শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে, আসিফ বাসায় বিয়ার পান করত। এই নিয়ে স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য থেকে সে ভোরে ফজরের নামাজের সময় বারান্দা থেকে লাফিয়ে পড়ে।”
পরে আসিফকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন ও সেক্রেটারি রুহুল কুদ্দুস কাজল গত বুধবার এক বিবৃতিতে আসিফ ইমতিয়াজের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।