বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত দুদক প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন এই জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আফরাফুন্নেছা বলেন, “অধিদপ্তরের একটি প্রকল্প নিয়ে অনিয়মের একটি অভিযোগ উঠেছে। সেই বিষয়ে দুদকের কিছু জিজ্ঞাসা ছিল, তাদের কাছে আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি।”
এই জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে দুদক সচিব দিলোয়ার বখত সাংবাদিকদের বলেন, “গত বছর আমাদের হটলাইন ১০৬ এ একটি অভিযোগ আসে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে অভিযান চালানো হয়। পরে সেখানে কিছু অনিয়মের সত্যতা মেলে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুর্নীতির তথ্য মিলেছে বলেই এই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
একই অভিযোগে এর আগে ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া আখতার, উপ-পরিচালক (স্থানীয় সংগ্রহ) আবু তাহের মো. সানাউল্লাহ নূরী, সহকারী পরিচালক এ কে এম রোকনুজ্জামান ও গবেষণা কর্মকর্তা পীযূষ কান্তি দত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর তাদের তলব করে নোটিস পাঠিয়েছিল দুদক।
অভিযোগের বিষয়ে দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম (তথ্য, শিক্ষা ও উদ্বুদ্ধকরণ) ইউনিট দেশে ৪৮৬টি ওয়ার্কশপ ও সেমিনার আয়োজন করে। এতে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্মানী ভাতা ও যাতায়াত বাবদ ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে স্বাক্ষর জাল করে অর্থ উত্তোলন করা হয়। এভাবে প্রায় সাত কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিট খাতে বরাদ্দ ছিল (২০১৯ সালে) এক কোটি ২৯ লাখ টাকা। এসব টাকা কোনো কাজ না করেই অগ্রণী ব্যাংকের ওয়াসা ভবন শাখা থেকে তোলা হয় বলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৩৯টি কোটেশনের বিল দেওয়া হয়েছে। যার পরিমাণ ছিল ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ওই বছরে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক আশরাফুন্নেছার ভাগ্নের মালিকানাধীন রূহী এন্টারপ্রাইজ কোনো কাজ না করে ৮৫ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করে।
অন্যদিকে কাজ না করেই তার চাচাত ভাইয়ের মালিকানাধীন সুকর্ন এন্টারপ্রাইজকে এক কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। রূহী এন্টারপ্রাইজ ও সুকর্ন এন্টারপ্রাইজের নামে বরাদ্দ এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা উত্তরা ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখার থেকে উত্তোলন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।