ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে প্রস্তাবিত ‘রাজনৈতিক দল আইনের খসড়া’ ইসি অনুমোদন দেওয়ায় তাদের প্রতি এই আহ্বান রেখেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, “নতুন আইনের যৌক্তিকতা কোথায়, তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়।
“নির্বাচন কমিশনের উচিৎ ‘নির্বাচন কমিশন’ নামটিকে আর কলঙ্কিত না করে ইতোমধ্যে জনসাধারণের মাঝে তাদের প্রতি যে আস্থার সংকটের সৃষ্টি হয়েছে, তা উপলব্ধি করে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানো।”
সবশেষ একাদশ সংসদ নিয়ে বতর্মান ইসির সমালোচনায় মুখর ছিল টিআইবি।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে কমিশন আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। বুধবার ইসির ৭০তম কমিশন সভায় একজন নির্বাচন কমিশনারের আপত্তির মধ্যেই প্রস্তাবিত ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনের’ খসড়া অনুমোদিত হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে নিবন্ধনের সুস্পষ্ট বিধান থাকার পরও আলাদাভাবে ‘রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন, ২০২০’ এর খসড়া প্রণয়ন প্রশ্নবিদ্ধ।
“সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন বাস্তবে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকার নয় বরং বিশেষ কোনো দলীয় রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে নিজেকে ব্যবহৃত হতে তৎপর রয়েছে, যা একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই কমিশনের জন্য অভূতপূর্ব মাত্রায় বিব্রতকর।”
আলাদা আইন করতে হলেও তা নিয়ে অংশীজনের মতামত নেওয়ার জোর দিচ্ছে টিআইবি।
নির্বাচন কমিশন ‘কর্তব্যের বাইরে’ গিয়ে পদ ও পদবীর পরিবর্তনসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনা আইনের সংস্কার করা হচ্ছে বলে মনে করে টিআইবি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “ভোটারের উপস্থিতি, নির্বাচনী পরিবেশ, সর্বোপরি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের যে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে, তার গুণগত কোনো পরিবর্তন কি ঘটবে এই নতুন আইনের মাধ্যমে? যদি না-ই ঘটে, তাহলে এ জাতীয় নতুন আইনের যৌক্তিকতা কোথায়, তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়।”
প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ‘বাদ’ দিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের গণমাধ্যমের খবরে বিস্ময় প্রকাশ করে টিআইবি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “এটি যে ভালো কোনো উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে না বরং কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর করে দেওয়ার হীন চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই না।”
সাংবিধানিক মর্যাদা ও সুনাম পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট থাকার জন্য নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দেন তিনি।
“নির্বাচন কমিশন বোধহয় ভুলতে বসেছে যে, এটা একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা, কারও আজ্ঞাবহ নয়। দেশ ও জাতির স্বার্থে বর্তমান কমিশনের সুমতি যত দ্রুত ফিরবে ততই মঙ্গল।”