কোরবানির ঈদের ছুটির পর প্রথম কার্যদিবস সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ভ্যাকসিন তৈরিতে এখন বেশ কয়েকটি দেশে থার্ড স্টেজে আছে। আমরা তাদের সাথে যোগাযোগে আছি। যে ভ্যাকসিন দেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে, কার্যকর হবে বা সবচেয়ে তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবে, আমরা তা আনার চেষ্টা করব।”
বিশ্বের পৌনে দুই কোটির বেশি মানুষকে আক্রান্ত এবং পৌনে সাত লাখের বেশি মানুষের প্রাণ হরণকারী কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে এখন টিকার দিকে চেয়ে আছে সবাই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের প্রায় ১৬০টি টিকা উদ্ভাবনের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।
কয়েক ধাপ পেরিয়ে এখন মানবদেহে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও যুক্তরাজ্যে।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি করা করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল গত মাসের শেষার্ধে প্রকাশ হয়েছে। সেখানে বলা হয়, এ টিকা নিরাপদ এবং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এ টিকা তৈরির জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। সেপ্টেম্বরেই টিকাটি যুক্তরাজ্যের বাজারে ছাড়া শুরু হতে পারে বলে আশাবাদী অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেডের তৈরি করা টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরও এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাশিয়া আগামী অক্টোবরেই গণহারে করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। যদিও তাদের টিকা উদ্ভাবনের বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ‘কমতে থাকায়’ কিছুটা স্বস্তিতে আছেন তিনি।
“আমরা একটু হলেও স্বস্তির মধ্যে আছি, গত কয়েক দিনে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। যেটা গড়ে ৪০ ছিল, গত ২-৩ দিন যাবৎ এটা ২০ এর ঘরে চলে আসছে। এটা যদি বজায় থাকে, আমরা মনে করি একটি সফলতা।
“আমরা আনন্দিত যে মৃত্যু কমে আসছে। কমে আসতে আসতে যদি শূন্যের কোটায় নেমে আসে তাহলে আমরা আল্টিমেট গোল অ্যাচিভ করতে পারব।”
সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে; এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৮৪ জনে। এই ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৬ জন।
তবে কোরবানির ঈদে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া সাধারণ নাগরিকদের অধিকাংশই স্বাস্থ্যবিধি মানেননি বলে আক্রান্তের হার ফের বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, “ঈদে অনেক লোকজন বাড়ি গেছে, বিভিন্ন স্টিমারে গেছে, বাসে গেছে। আমরা দেখেছি যে, গাদাগাদি করে ফেরিতে পার হয়েছে। আমরা একটু আশঙ্কা করছি, কিছুটা সংক্রমণ বাড়তে পারে…।”
দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তৎপর রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতি সামাল দিতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও স্যালাইনের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে বলে জানান তিনি।