ভাটারা থানায় হওয়া মামলায় সোমবার বিচারিক হাকিম বাকী বিল্লাহ তার জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন শওকত ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেনের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান।
অন্যদিকে বাদীপক্ষে আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া ও জুবায়েরুল ইসলাম জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মাঝহারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেছি। আমরা বলেছি, শওকত ছয় সপ্তাহের জন্য হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন পেলেও নির্দিষ্ট সময়ে আত্মসমর্পণ করেননি। তার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। তিনি এ মামলার এক নম্বর আসামি। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ জামিন অযোগ্য। তাই তাকে কারাগারে পাঠানো হোক। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।”
মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় গত ২ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা থানায় শওকতকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন ইউআইটিএসের উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী মো. মোস্তফা কামাল। তার বিরদ্ধে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩৮৫ ও ৫০৬ ধারায় ভয়ভীতির মাধ্যমে চাঁদা দাবি ও অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়। এসব ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড হতে পারে আসামির।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শওকত হাসানের মালিকানাধীন গুলশানের বারিধারা এলাকায় অবস্থিত ‘জামালপুর টুইন টাওয়ার-২’ ভাড়া নিয়ে ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে ইউআইটিএস। এরইমধ্যে ভাটারা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ শেষ হলে ২০১৯ সালের মে মাস থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর শুরু হয়। একইসঙ্গে ইউআইটিএস উপাচার্যও স্থায়ী ক্যাম্পাসে অফিস শুরু করেন।
“গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত শওকত হাসান ও তার সহযোগীরা উপাচার্যের কাছে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ৬০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা ছাড়াও মালামাল স্থানান্তরে বাধা দেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ৫ থেকে ৬ জন সশস্ত্র ক্যাডার নিয়ে উপাচার্যের গাড়ি আটকে ৬০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন শওকত হাসান। চাঁদা না পেয়ে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি ও প্রাণনাশের ভয়ভীতিও দেখান তিনি। পরদিন ২০ নভেম্বর এ বিষয়ে ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।”
এ মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন শওকত। তবে জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও দীর্ঘদিন ধরেই পলাতক থেকে সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাই চান তিনি। আদালত তার আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
এ বিষয়ে ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান বলেন, ইউআইটিএস’র উপাচার্যকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ৬০ কোটি চাঁদা দাবির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।