মহামারীতে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোতে সঙ্কট বাড়ছে

মহামারীর ধাক্কায় আয়-উপার্জনে টান পড়ে বেকায়দায় থাকা ঢাকার ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বেতন-ফিতে ছাড় চাইলেও তাতে সাড়া দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

রাসেল সরকারশহীদুল ইসলাম ওবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2020, 05:13 AM
Updated : 15 July 2020, 06:02 AM

এদিকে জুলাইয়ে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ায় পুনঃভর্তি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় স্কুল থেকে ঝরে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে অনেক শিক্ষার্থীর।

টিউশন ফি বাকি থাকায় অনেক স্কুল রিপোর্ট কার্ড না দেওয়ায় নতুন সেশনে ভর্তি হতে পারছে না এসব শিক্ষার্থী। যেসব শিক্ষার্থীর বেতন বকেয়া রয়েছে তাদের অনলাইন ক্লাসেও অংশ নিতে দিচ্ছে না বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।

ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিভাবকরা ফোরাম গঠন করে টিউশন ফি’র ৫০ শতাংশ ছাড় চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ঢালাওভাবে এই ছাড় দিতে রাজি না হওয়ায় দিন দিন পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৮ সালের এক জরিপে দেশে ‘ও’ লেভেলের ৩৪টি, ‘এ’ লেভেলের ৯৩টি এবং ১৯টি জুনিয়র স্কুলসহ মোট ১৪৬টি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের নিবন্ধন থাকার কথা বলা হয়েছে।

তবে আন্দোলনে থাকা ‘বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরাম’ বলছে, দেশে চার শতাধিক ইংরজি মাধ্যমের স্কুলে সাড়ে চার লাখের মতো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

টিউশন ফি’র ৫০ শতাংশ ছাড়, বেতন বকেয়া থাকলেও যেন অনলাইন ক্লাস থেকে বাদ দেওয়া না হয়- এসব দাবিতে গত ১১ জুলাই ধানমন্ডিতে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের সামনে মানববন্ধন করেন প্রতিষ্ঠানটিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

‘প্যারেন্টস ফোরাম’-এর ব্যানারে কয়েকশ অভিভাবক মঙ্গলবারও সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শর্মী ইব্রাহীম মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে বেতন না দিলে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে না বলে অভিভাবকদের জানিয়ে দেওয়া হয়।

“১৪ জুলাই থেকে নতুন সেশনের অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে, যাদের বেতন পরিশোধ করা নেই তাদের এই ক্লাসে অংশ নেওয়ার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়নি।”

টিউশন ফি ছাড়ের দাবিতে আন্দোলনে নামার ব্যাখ্যায় শর্মী বলেন, “আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে বলেই মাঠে নেমেছি। টিউশন ফি কমানোর বিষয়ে আমরা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলাম, তারা সাড়া দেননি।”

মাস্টারমাইন্ডের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ দেশের বাইরে থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জুলাই থেকে নতুন সেশন শুরু হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের অটোপ্রমোশন দিয়ে নতুন সেশনে ভর্তি শুরু করেছে, কেউ কেউ অনলাইনে ক্লাসও শুরু করে দিয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে স্কুল বন্ধ থাকায় টিউশন ফি ৫০ শতাংশ ছাড়ের দাবিতে গত ২৮ জুন ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় মানববন্ধন করেন হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

এই স্কুলের অভিভাবকদের ফোরামের আহ্বায়ক কল্যাণ ওয়ার্দ্দা মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যেসব শিক্ষার্থীর বেতন বাকি আছে তাদের রিপোর্ট কার্ড দেয়নি, এতে তারা পরের সেশনে ভর্তি হতে পারছে না, এরা অটো ড্রপআউট হয়ে যাবে।

“এই স্কুলে আগামী ১৯ জুলাই থেকে নতুন সেশনে ক্লাস শুরু হবে। যাদের বেতন বাকি রয়েছে তাদের অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।

“স্কুল কর্তৃপক্ষকে আমরা বলেছি, আপনাদের সাথে আমাদের যা কিছুই হোক এজন্য বাচ্চাদের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে রাখতে পারেন না। কিন্তু তারা কোনো কথা শুনছেন না, আমাদের সঙ্গে আলোচনায়ও বসছেন না।”

হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের আরেকজন অভিভাবক জানান, অ্যাকাউন্ট শাখায় যোগাযোগ করে শিক্ষার্থীদের রিপোর্ট কার্ড নিতে তাদের মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হয়েছে।

“Dear parents, pls collect textbooks & copies for Gr-I to Gr-V from HURDCO Book Store on Wed 15 July 2020 from 09:00am to 1:00pm on submission of money receipt.”

“Dear Parents. Report Card of your child's final assessment for the current session is ready. Please contact our Accounts dept for readmission without any additional charges. Regards.”

এছাড়া টিউশন ফি কমানোর আন্দোলনে যেসব অভিভাবক সামনে থেকে কাজ করছেন, তাদের সন্তানদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়ারও হুমিক দিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওই অভিভাবক।

এ বিষয়ে কথা বলতে হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ এম জিন্নাত আলীকে মঙ্গলবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

তবে এর আগে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “এই মহামারীর মধ্যে যেসব অভিভাবকের সমস্যা হচ্ছে তাদের আলাদাভাবে আবেদন করতে বলা হয়েছিল। আমরা অনেককেই সেই ছাড় দিয়েছি।”

অক্সফোর্ড ইন্টারনাশনাল স্কুলের ধানমন্ডি ক্যাম্পাসের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক সেরিন রিজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এই স্কুলে গত ৫ জুলাই থেকে নতুন সেশনে ভর্তি শুরু হয়েছে।

“আমার ছেলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি ফি বাবদ ৪৩ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। সেখানে ৩০ হাজার টাকা দুই মাসের অগ্রিম বেতন আর বই, খাতা, ব্যাগ, ড্রেস বাবদ ১৩ হাজার টাকা। দুই মাসের অ্যাডভান্স বেতন না দেওয়ায় আমার ছেলের ভর্তি নিচ্ছে না।”

বেতন পরিশোধ না করায় অক্সফোর্ডের অনেক শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন এই অভিভাবক।

তিনি বলেন, “সব ধরনের বকেয়া শোধ করার পর আমার ছেলেকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার নতুন করে দুই মাসের আগাম বেতনের জন্য চাপ দিচ্ছে।”

অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পুনঃভর্তির রশিদ।

এসব বিষয়ে কথা বলতে অক্সফোর্ডের উপাধ্যক্ষ আনিতা পান্দুহকে ফোন করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি লাইন কেটে দেন। এরপর কয়েকবার ফোনের পাশাপাশি এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শ্রীলঙ্কার নাগরিক শান্তি পেরেরা করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে নিজ দেশে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

বেতন ৫০ শতাংশ ছাড় এবং পুনঃভর্তিতে স্কুল উন্নয়ন বাবদ ফিসহ কয়েক খাতের ফি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ঢাকার নিউ ইস্কাটনের এ জি চার্চ স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছেন তারা।

এই স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এর মধ্যে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারকে নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসলে তারা আমাদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন। পরে স্কুল থেকে দেওয়া নোটিশে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।

এ জি চার্চ স্কুলের শিক্ষার্থীদের বেতন-ফিতে ছাড় চেয়ে অভিভাবকদের পক্ষে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি আবেদন করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার মোক্তার হোসেন, তাতে সুপারিশ করেছেন স্থানীয় সাংসদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

“গত পরশু আবার ওয়ার্ড কমিশনার অভিভাবকদের পক্ষে একটি আবেদন করেছেন দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য। সেখানে এই এলাকার সংসদ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও সুপারিশ করেছেন অভিভাবকদের বিষয়টি মানবিকভাবে ভেবে দেখার জন্য। তবে এখনও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া দেয়নি।”   

মহামারী শুরুর পর মে মাস থেকেই এই স্কুলে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে জানিয়ে আরেকজন অভিভাবক বলেন, “এখন স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের পরিচালন ব্যয় কমেছে। অপরদিকে অনেক অভিভাবকের বেতন কমে গেছে, যারা ব্যবসা করতেন তাদের খারাপ একেবারেই অবস্থা। এটা বিবেচনায় নিয়ে তারা বেতনে ছাড় দিতেই পারে।

“আর পুনঃভর্তিতে স্কুল উন্নয়ন বাবদ ৬ হাজার ৩০০ টাকা ধরা হয়েছে। মহামারীর এই সংকটের সময়ে তারা তো এবার এই টাকাটা ছাড় দিতে পারেন।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ জি চার্চ স্কুলের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর দিনেশ দাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যাদের সমস্যা হচ্ছে তাদের আবেদন করতে বলা হয়েছে। আমরা আগামী অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন থেকে ছাড় দেব।

“কে কতটুকু ছাড় পাবেন বা সবাইকে সমান ছাড় দেওয়া হবে কি না, তা বোর্ড নির্ধারণ করবে। এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত যাদের বেতন বকেয়া পড়েছে তারা ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ওই বকেয়া বেতন দিতে পারবেন।”

ইস্কাটনের এজি চার্চ স্কুল।

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য স্কুলটির বোর্ড চেয়ারম্যান আশা মাইকেল কেইনকে ফোন করে তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরাম’ গঠন করেছেন অভিভাবকরা।

এই ফোরামের আহ্ববায়ক এ কে এম আশরাফুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যখন থেকে স্কুল বন্ধ রয়েছে আমরা সেই মার্চ মাস থেকে টিউশন ফি’র ৫০ শতাংশ ছাড় চেয়েছি। কিন্তু বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই এই ছাড় দিতে চাচ্ছে না।

“উল্টো টিউশন ফি আদায় করা নিয়ে বিভিন্নভাবে অভিভাবকদের হুমকি দিচ্ছে, ছাত্রত্ব বাতিল করে দেওয়ার কথা বলছে কেউ কেউ, অনলাইনে ক্লাসে অংশ নিতে দিচ্ছে না।”

ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোতে ‘অযৌক্তিক’ টিউশন ফি নির্ধারণ করা আছে দাবি করে আশরাফুল বলেন, “এসব প্রতিষ্ঠানে শুধু বড়লোকের সন্তানরা পড়ে না। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অনেক মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্তদের সন্তানরা এখানে পড়ছে। তাই টিউশন ফি ৫০ শতাংশ ছাড় না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”

একজন অভিভাবক বলেন, “এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারের কোনো ন্জরদারি কোনো দিনই ছিল না। সব সময়ই তারা ইচ্ছেমতো কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।”

‘ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ নামে আরেকটি সংগঠনের সাধারাণ সম্পাদক আমিনা রত্না বলেন, “অধিকাংশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এই করোনাকালে শিক্ষার্থীদের বেতন আদায় করতে নানাভাবে অভিভাবকদের চাপ দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেও অগ্রিম বেতন ও অ্যাডমিশন ফি নিচ্ছে।

“আমরা এখন কী করব বুঝতে পারছি না। তাই অভিভাবকদের নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। সরকারের উচিত অভিভাবকদের কথা বিবেচনা করে বিষয়টিতে নজর দেওয়া।”

সব অভিভাবকের আর্থিক সক্ষমতা এক রকম না হওয়ায় সবার টিউশন ফির অর্ধেক ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবে একমত নন বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জি এম নিজাম উদ্দিন।

ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃপক্ষকের সমন্বয়ে গঠিত এই অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নিজাম মঙ্গলবার

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সবার ছাড়ের দারকার নেই। যারা বেসরকারি চাকরি করেন, যারা ব্যবসা করেন, যাদের এখন আয় কমে গেছে তাদের ছাড় দেওয়া দরকার।

“যাদের সমস্যা আছে তারা তা জানানোর পর আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। স্কুলগুলোও ছাড় দিতে রাজি, অনেক ক্ষেত্রে অনেকেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। সবার টিউশন ফি ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন নেই।”

কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান টিউশন ফি বাকি থাকা শিক্ষার্থীদের রিপোর্ট কার্ড আটকে রেখে পরের সেশনে ভর্তি হতে না দেওয়া এবং অনলাইন ক্লাসে অংশ না নিতে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিজাম উদ্দিন।

তিনি বলেন, “এটা ঠিক না। শিক্ষার্থীদের কোনো কিছুই আটকে রাখা ঠিক না। আর্থিক বিষয়টা অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের মধ্যে, এটা কোনোভাবেই যেন শিক্ষার্থীদের উপর না পড়ে।”

নতুন শিক্ষাবর্ষে ক্লাস শুরুতে যেন কারও কোনো অসুবিধা না হয় সে বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হবে বলেও জানান তিনি।

ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোর এই সংকট নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোনো শিক্ষার্থী কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হোক সেটা কারোরই কাম্য নয়।

ইংরেজি মাধ্যমের অনেক প্রতিষ্ঠানে এই ঝামেলা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থী চলে গেলে স্কুলের লাভ হবে না। ক্রাইসিস টাইমে পরস্পরকে সহ্য করে কাজ করতে হবে।

“আমরা বলছি, এই সময় আপনারা পরস্পর পরস্পরকে সহায়তা করেন।”

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যাদের আর্থিক সক্ষমতা আছে তাদের টিউশন ফি চালিয়ে যাওয়া উচিত। আর যারা সঙ্কটে পড়েছেন তারা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে কীভাবে, কতটুকু ফি দেবেন আলোচনা করে তা ঠিক করে নিতে পারেন।

সঙ্কটকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবক উভয়কেই সহনশীল হয়ে যে কোনো সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন তিনি।