ভাটারার সাইফুল হত্যাকাণ্ডে ‘প্রতারক’ দম্পতি

দুই সপ্তাহ আগে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ‍পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2020, 04:16 PM
Updated : 13 July 2020, 04:16 PM

তদন্তকারীরা বলছেন, এরা একটি প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা সাইফুলকে ‘ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়’ করতে চেয়েছিল, কিন্তু না পেরে তাকে হত্যা করে।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- মো. আপেল আহমেদ (২৭), তার স্ত্রী শান্তা ইসলাম ওরফে আলভী (২০) এবং আব্দুর রাকিব চৌধুরী (২২)।

এর মধ্যে আপেল ও আলভীকে রোববার চট্টগ্রাম থেকে এবং রাকিবকে ঢাকার ভাটারার বাঁশতলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ‍পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মশিউর রহমান জাান।

ভাটারার সাইফুল হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার তিনজন। সময় টিভির ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি

গত ২৭ জুন ভাটারা থানার সাঈদ নগর পূর্ব পাড়া মসজিদ গলির আনোয়ার হোসেনের বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে ৪০ বছর বয়সী সাইফুল ইসলামের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

তার তিন দিন আগে সাইফুল নিখোঁজ জানিয়ে হাজারীবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্ত্রী মিনারা পারভীন। সেখানে বলা হয়, ২৪ জুন দুপুরের দিকে সাইফুল তার গাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি।

২৬ জুন ভাটারা থানা পুলিশ মাদানী এভিনিউয়ের ১০০ ফিট এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি উদ্ধার করে। পরদিন যে বাসায় সাইফুলের লাশ পাওয়া যায়, সেখানে ভাড়া থাকতেন আপেল ও আলভী।

তাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে উপ-কমিশনার মশিউর বলেন, “বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করাই ওই দম্পতির পেশা। পূর্ব পরিচিত ব্যবসায়ী সাইফুলকে ফাঁদে ফেলে তারা টাকা আদায় করতে চেয়েছিল। সেজন্য আলভীকে দিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে সাইফুলকে তাদের বাসায় ডেকে এনেছিল আপেল।

“সেখানে যাওয়ার পর সাইফুলকে প্রথমে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও মারধর করা হয়। এরপর দুই লাখ টাকা দাবি করা হয় তার কাছে।”

গোয়েন্দা কর্মকর্তা মশিউর বলেন, আপেল ঘটনা সাজানোর জন্য তার ফুপাতো ভাই রাকিবকেও সেদিন ডেকে নিয়েছিল বাসায়। এছাড়া নোমান ও হাসান নামে আরও দুজনকে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে সেখানে রাখা হয়েছিল, যাদের কাজ ছিল সাইফুলের পাওনাদার হিসেবে অভিনয় করা।

“এক পর্যায়ে নোমান ও হাসান ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। সেই সুযোগে সাইফুল পালানোর চেষ্টা করলে রাকিব তাকে টেনে ধরে এবং আপেল উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে তাকে হত্যা করে।”

মশিউর বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছে, সাইফুল স্বাস্থ্যবান ও লম্বা হওয়ায় তার লাশ গুম করতে না পেরে খাটের নিচে লুকিয়ে রেখে তারা পালিয়ে যায়।”