মহামারী: ১০৪ কোটি টাকা, পৌনে ২ লাখ টন চাল বরাদ্দ

দেশে করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে লকডাউন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও কর্মহীনদের মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণের জন্য ১০৪ কোটি টাকা এবং এক লাখ ৮৩ হাজার মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2020, 11:37 AM
Updated : 22 May 2020, 11:37 AM

এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিতরণ করা হয় ৬৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা; যাতে ৭৩ লাখ ১৫ হাজার ১০টি পরিবারের ৩ কোটি ৪২ লাখ ৬৬ হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

বিতরণ করা ৮৩ কোটি ৩০ লাখ ৯২ হাজার ৩৬ টাকায় ৭৮ লাখ ২৮ হাজার ৪৯৫টি পরিবারের উপকারভোগীর সংখ্যা তিন কোটি ৫৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫৯৮ জন।

আর বৃহস্পতিবার আরও ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং নয় হাজার ৬০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

এর মধ্যে ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা ত্রাণ হিসেবে বিতরণের জন্য এবং এক কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শিশু খাদ্য কিনতে।

সব মিলিয়ে লকডাউন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৪ জেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য ১০৪ কোটি ৭ লাখ ৭২ হাজার ২৬৪ টাকা এবং এক লাখ ৮২ হাজার ৬৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হল।

কর্মকর্তারা বলছেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ধারবাহিকভাবে এসব ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ দিয়ে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তা বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এক তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশে সোয়া এক কোটি পরিবারের সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

শেষ দফার ত্রাণ ছাড়ের আগ পর্যন্ত পরিসংখ্যান দিয়ে সরকার বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক লাখ ৪২ হাজার ৮৮০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এতে উপকারভোগী পরিবার সংখ্যা ১ কোটি ২২ লাখ ৪২ হাজার এবং উপকারভোগী লোকসংখ্যা ৫ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার।

“৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা নগদ বিতরণ করা হয়েছে। এতে উপকারভোগী পরিবার সংখ্যা ৭৩ লাখ ১৫ হাজার ১০ এবং উপকারভোগী লোক সংখ্যা ৩ কোটি ৪২ লাখ ৬৬ হাজার।”

এছাড়া শিশু খাদ্য কিনতে বরাদ্দ দেওয়া অর্থের মধ্যে ১৬ কোটি ৭০ লাখ ১৯ হাজার ৩৬ টাকা বিতরণ করা হয়েছে জানিয়ে সরকারিভাষ্যে বলা হয়েছে, এতে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৮৫টি পরিবারের উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯৮ জন।

বৃহস্পতিবার নতুন করে ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ দিয়ে সেগুলো দুর্যোগ পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা অনুসরণ করে বিতরণ করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পৌর এলাকায় বেশি সংখ্যক কর্মজীবী মানুষ বসবাস করে বলে জেলা প্রশাসকদের বরাদ্দের ক্ষেত্রে পৌর এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে নির্দেশনা দিয়েছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

বরাবরের মতই নতুন বরাদ্দপত্রে ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে শাক-সবজি কিনে বিতরণ এবং প্রত্যেক ত্রাণ গ্রহণকারীকে কমপক্ষে পাঁচটি করে গাছ লাগানোর অনুরোধ করা যেতে পারে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আর শিশু খাদ্য কেনার শর্তে বলা হয়েছে, শিশুখাদ্য কেনার ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয়বিধিসহ সংশ্লিষ্ট সব বিধি-বিধান ও আর্থিক নিয়ম যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে। সরকারি পদ্ধতিতে কিনে মিল্কভিটার উৎপাদিত গুঁড়ো দুধ ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের এই দুধ দেওয়া যাবে না।

এছাড়া শিশু খাদ্য হিসেবে খেঁজুর, বিস্কুট, ফর্টিফায়েড তেল, ব্রাউন চিনি, সুজি, মশুর ডাল, সাগু, ফর্টিফায়েড চাল, ওয়াটার পিউরিফায়ার ট্যাবলেট, বাদাম, মানসম্মত রেডিমেড ফুড স্থানীয়ভাবে কিনে বিতরণ করতে হবে বলে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।