শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসে তিনি বলেন, “একটি সুসংবাদ আছে। সিঙ্গাপুরে আমাদের যে নাগরিককে নিয়ে কথা হচ্ছিল, তিনি দ্রুত সেরে উঠছেন। তাকে আইসিইউ থেকে সাধারণ বেডে নেওয়া হয়েছে।”
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ৩৯ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি শ্রমিকের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনি ছিলেন দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৪২তম ব্যক্তি।
গত ১ এপ্রিল খবর আসে, কোভিড-১৯ থেকে মুক্ত হলেও হাসপাতাল থেকে তিনি মুক্তি পাননি। সঙ্কাটাপন্ন অবস্থায় অচেতন হয়ে পড়ে আছেন হাসপাতালের শয্যায়।
তিনি যখন অচেতন হয়ে পড়ে আছেন সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে, তখন বাংলাদেশের একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার স্ত্রী জন্ম দেন ছেলে সন্তানের। দুই বছরের বিবাহিত জীবনে এটি তাদের প্রথম সন্তান।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর আগে জানিয়েছিল, ১ ফেব্রুয়ারি ওই ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি একটি ক্লিনিকে এবং ৫ ফেব্রুয়ারি চ্যাংগি জেনারেল হাসপাতালে যান। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি বেদক পলিক্লিনিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে চ্যাংগি হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়।
সিঙ্গাপুরের মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স সেন্টার (এমডব্লিউসি) জানিয়েছিল, কোভিড-১৯ থেকে মুক্ত হলে কিছুদিন আগে তাকে দেশটির ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজ থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সেখান থেকে সরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে রেখে তার চিকিৎসা চালানো হয়।
নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই ওই শ্রমিকের শ্বাসকষ্ট, কিডনি সমস্যা এবং নিউমোনিয়া ছিল বলে এর আগে বাংলাদেশের হাই কমিশন জানিয়েছিল ।
ওই বাংলাদেশি যে প্রতিষ্ঠানের কর্মী, সেই ওয়াই-কে ইনোভেশন, এমডব্লিউসি এবং ওই শ্রমিকের আবাসস্থল মিনি এনভায়রমেন্ট সার্ভিসেস মিলে ১০ হাজার ডলার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে তার পরিবারকে।
সিঙ্গাপুরে আক্রান্ত বাংলাদেশি ২ হাজার ছাড়াল
এদিকে সিঙ্গাপুরে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে, যা বাংলাদেশে মোট আক্রান্তের চেয়ে বেশি।
শুক্রবার সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৬২৩ জনের মধ্যে ৩৭৬ জনই বাংলাদেশি।
সব মিলিয়ে দেশটিতে আক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৭ জনে।
সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত ৫ হাজার ৫০ জনের আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭০৮ জন।
সিঙ্গাপুরের চ্যানেল নিউজ এশিয়ার খবরে বলা হয়, গত দুই সপ্তাহে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ গুণ বেড়েছে।
আক্রান্তের বেশিরভাগই দেশটির বিভিন্ন ডরমিটরিতে থাকা অভিবাসী শ্রমিক। কেবল এস-১১ ডমরিটরিতেই শুক্রবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১২৩ জন।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৬২৩ জনের সবাই অভিবাসী কর্মী। তাদের মধ্যে ৫৫৮ জনই থাকেন বিভিন্ন ডরমিটরিতে আর বাবিরা থাকেন ডমরিটরির বাইরে।