করোনাভাইরাস: সাংবাদিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা চেয়ে আবেদন

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কের মধ্যেও সংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত থাকায় তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রণোদনা চেয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2020, 03:39 PM
Updated : 1 April 2020, 03:39 PM

বুধবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের নেতাদের সাথে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এ আবেদনপত্র হস্তান্তর করেন সাংবাদিক নেতারা।

এ সময় বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ এবং  ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।

আবেদনপত্র হস্তান্তর শেষে ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, “যেখানে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, সবাই ছুটিতে আছে সেই সময়েও সাংবাদিকরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এই সাংবাদিকদের দুর্যোগকালীন সময়ে কাজ করার জন্য প্রণোদনা দিতে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছি। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের কাছে আমরা দিয়েছি, এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়াকেও চিঠির বিষয়ে অবগত করেছি।”

এ সময় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ প্রতিবেশী দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী লিখিতভাবে সেদেশের মান্যবর প্রধানমন্ত্রীকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের নানা উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং সরকারের সাথে একযোগে কাজের কথা জানিয়েছেন, কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। বিএনপি সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে।”

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির জন্য রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তার এই আহ্বান সংকট মোকাবেলায় তাদের হাত প্রসারিত করার ‘উদ্দেশ্যে নয়’ বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “তাদের চিরাচারিত স্বভাব অনুযায়ী এই দুর্যোগের মুহূর্তে ভুল না থাকলেও সরকারের ভুল খোঁজার চেষ্টা করাই তাদের উদ্দেশ্য। তাদের দলের পক্ষ থেকে রিজভী সাহেবসহ অনেকেই কয়েক দিন আগেও সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বক্তব্য রেখেছেন।

“আমরা বারবার বলেছি, বিএনপি আমাদের সাথে থেকে কাজ করতে পারে, কোনো বাধা নেই, আমরা স্বাগত জানাব, তাদের যদি কোনো পরামর্শ থাকে তারা দিতে পারে। কিন্তু বিএনপি এ পরিস্থিতিতে জনগণের পাশে না থেকে সরাকারের ভুল খোঁজার চেষ্টা করছে।”

পরিস্থিতি অন্যান্য দেশের তুলনায় এখনো ‘ভালো থাকলেও’ সরকার স্বস্তির ঢেঁকুর তুলছে না জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ এই মহাদুর্যোগের সময় যখন সমস্ত পৃথিবী থমকে গেছে তখন সরকার অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে ধৈর্যের সাথে পর্যায়ক্রমে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে এখনও পর্যন্ত আমাদের দেশে পরিস্থিতি অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছে।

“তার মানে এই নয় যে, সরকার স্বস্তির ঢেঁকুর তুলছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যে কোনো পরিস্থিতির জন্য সারা দেশে প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। পাশাপাশি বিত্তবানরাও এগিয়ে আসছেন এবং সাংবাদিকবৃন্দ সেগুলো গণমাধ্যমে তুলে আনছেন। সবাই সাড়া দিয়েছে।”

আবেদনপত্র গ্রহণ করে বৈশ্বিক এই মহামারীর মধ্যে প্রতিকূল পরিবেশে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “মানুষকে সচেতন করতে এবং কেউ যাতে জনমনে গুজব-বিভ্রান্তি-আতঙ্ক ছড়াতে না পারে সেজন্য গণমাধ্যম ও সরকার আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে আলোচনায় ঐক্যমত্য হয়েছে।”